ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

কী পরিমাণ সম্পদ হলে হজ ফরজ হয়?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:১৪ এএম, ২ আগস্ট ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ১০:৫১ এএম, ২ আগস্ট ২০১৯ শুক্রবার

হজ্জ্ব ইসলাম ধর্মাবলম্বী অর্থাৎ মুসলমানদের জন্য একটি আবশ্যকীয় ইবাদত। হজ্ব হল ইসলাম ধর্মের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে পঞ্চম স্তম্ভ। শারীরিক ও আর্থিকভাবে সক্ষম প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর জন্য জীবনে একবার হজ্ব সম্পাদন করা ফরজ। তবে অনেকেই বুঝে উঠতে পারেন না যে, কখন তাকে হজ করতে হবে।

জাকাতের সাথে সম্পদের সম্পর্ক যতটা শর্তযুক্ত ও সীমাবদ্ধ, হজের সাথে সম্পদের সম্পর্ক ততটা সীমাবদ্ধ নয়। সম্পদের বর্ষপূর্তি হওয়া, বর্ধনশীল হওয়া বা এ জাতীয় কোন শর্তই এখানে নেই। একজন মানুষের নিজের এবং তার উপর যাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব রয়েছে তাদের জীবিকা নির্বাহে প্রয়োজন পড়ে (বাস্তব অর্থেই যাকে প্রয়োজন বলে)এমন সম্পদ ছাড়া অবশিষ্ট সব সম্পদ যদি হজের যাতায়াত-খরচ পরিমাণ হয় তাহলেই হজ ফরজ হয়ে যাবে। সে সম্পদ জমি, বাড়ি বা অন্য যেকোন প্রকারেরই হোক না কেন।

যেমন কারো যদি পাঁচটি বাড়ি থাকে আর এ থেকে চারটি বাড়ির আয়ে তার সংসার চলে বাকি একটি বাড়ির খরচ উদ্বৃত্ত থাকে তাহলে এই বাড়ির আয় যদি হজ করার খরচের সমান হয় তাহলে তার উপর হজ ফরজ। আবার কারো যদি এক হাজার শতক জমি থাকে আর ছয়শ শতকের আয় তার প্রয়োজনীয় খরচের জন্য যথেষ্ট হয় এবং অবশিষ্ট তিনশ শতকের মূল্য হজের যাতায়াত খরচ পরিমাণ হয় তাহলে তার উপরও হজ ফরজ হবে।

এছাড়া বর্তমান যুগে অনেক মহিলার কাছে বহু মূল্যবান এবং অধিক পরিমাণে অলঙ্কার থাকে। তার এ অলঙ্কারও যদি হজের যাতায়াত-খরচ পরিমাণ হয় তাহলে তার উপরও হজ ফরজ হবে। (যদি মাহরাম থাকে) মনে রাখতে হবে হজ আল্লাহ তাআলার মহান একটি হুকুম। এ সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, আর মানুষের দায়িত্ব (ফরজ) আল্লাহর উদ্দেশ্যে এই গৃহের হজ করা। অর্থাৎ সেই ব্যক্তির জন্যে যে ওই ঘর পর্যন্ত যাতায়াতের ব্যয়ভার বহনে সক্ষম। 

আর যে ব্যক্তি অমান্যকারী হয়,(সে গুনাহগার) তবে আল্লাহ সমস্ত বিশ্ববাসীর প্রতি অমুখাপেক্ষী।’(সুরা আলে-ইমরান,আয়াত:৯৭) নবী কারিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,‘ফরজ হজ আদায়ে তোমরা বিলম্ব করো না। কারণ তোমার পরবর্তী জীবনে কী ঘটবে তা তোমার জানা নেই।’ (মুসনাদে আহমদ)

অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে, যার হজ করার ইচ্ছা আছে সে যেন তাড়াতাড়ি তা আদায় করে নেয়। কারণ যেকোন সময় সে অসুস্থ হয়ে যেতে পারে বা বাহনের ব্যবস্থাও না থাকতে পারে অথবা অন্য কোন সমস্যাও আসতে পারে।’(মুসনাদে আহমদ) অনেকে আবার মনে করে আমার এখনো হজের বয়স হয়নি। আমি হজের পরিপন্থী অনেক কাজ করি। সুতরাং  এখন হজ করলে আমার ওই সব খারাপ কাজের কারণে হজ থাকবে না; নষ্ট হয়ে যাবে। হজ করতে হবে বয়স হওয়ার পর; যখন আর কোন খারাপ কাজও আমি করব না। এ ভাবনাটি একেবারেই অর্থহীন। কারণ বালেগ হবার পর হজের সামর্থ্যবান হলেই তার উপর হজ ফরজ হয়। 

 টিআর/