জিলহজ মাসের প্রথম দশক অনেক গুরুত্বপূর্ণ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৩৮ পিএম, ৪ আগস্ট ২০১৯ রবিবার
হজের মাস জিলহজ। এই মাসের প্রথম দশকেই ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইবাদত পালিত হয়। একটি হলো হজ, অপরটি হলো কোরবানি। তাই এই দশ দিনের মর্যাদা ইসলামে অনেক বেশি। এছাড়া এই সময়ে এমন কিছু আমল রয়েছে যা আল্লাহর কাছে অতি প্রিয় এবং বান্দার জন্য অত্যধিক নেকি বয়ে আনে।
যাদের উপর হজ ফরজ হয়েছে তারা যেমন হজ পালন করছেন, তেমনি যাদের উপর কোরবানি ওয়াজিব হয়েছে তারাও কোরবানি করবেন। এর পাশাপাশি আরও অনেক আমল রয়েছে যা গুরুত্বপূর্ণ।
এগুলো আমাদের জানা ও মান্য করা উচিত। জিলহজের প্রথম দশকের ফজিলত ও আমল সম্পর্কে হাদিসে বর্ণিত হয়েছে :
হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘জিলহজের প্রথম ১০ দিনের নেক আমল আল্লাহর কাছে অন্যান্য দিনের নেক আমলের চেয়ে অধিক প্রিয়।’ (বুখারি)
হজরত আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘দিনসমূহের মধ্যে এমন কোন দিন নেই যাতে আল্লাহর ইবাদত করা তাঁর কাছে প্রিয়তর হতে পারে জিলহজের প্রথম ১০ দিন অপেক্ষা। এর প্রত্যেক দিনের রোযা এক বছরের রোজার সমান এবং প্রত্যেক রাতের নামাজ কদরের রাতের নামাজের সমান।’ (তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
এ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত, জিলহজের প্রথম ১০ দিন রোজা রাখা সৌভাগ্যের বিষয়। একদিনের রোজায় এক বছরের রোজার সমান সওয়াব পাওয়া যায়। এক রাতের ইবাদত শবেকদরের ইবাদতের সমতুল্য। তাই আমরা এ সুযোগ লুফে নিতে পারি। রাতগুলোয় যথাসম্ভব তাহাজ্জুদ নামাজ, কোরআন তিলাওয়াত ও অন্যান্য নফল ইবাদত করতে পারি।
অন্য এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে জিলহজের প্রথম দশকের রোজা রাখার বিশেষ ফজিলত। যাতে বলা হয়েছে, রাসূল (সা.) জিলহজের প্রথম ৯ দিন (ঈদের দিন ছাড়া) রোজা রাখতেন। তবে এই দশকের নবম দিনটি সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই দিন রোজা রাখার গুরুত্বও বেশি। হাদিসে আছে, রাসূল (সা.) বলেন, ‘আরাফার দিনের (৯ তারিখের) রোজার ব্যাপারে আমি আল্লাহ তায়ালার কাছে আশাবাদী যে, তিনি এর দ্বারা বিগত এক বছর ও আগামী এক বছরের গুণাহ ক্ষমা করে দেবেন।’
এছাড়া আরও কিছু আমল রয়েছে, তাহলো জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার পর থেকে কোরবানির আগ পর্যন্ত নখ, চুল ও মোচ ইত্যাদি না কাটা। হাদিসে আছে, হজরত উম্মে সালমা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) ইরশাদ করেন, তোমরা যখন জিলহজ মাসের চাঁদ দেখতে পাও আর তোমাদের কেউ কোরবানি করার ইচ্ছা করে, তবে সে যেন চুল-নখ কাটা থেকে বিরত থাকে।’ -ইবনে হিব্বান
এই মাসের প্রথম দশক যেহেতু বেশি গুরুত্বপূর্ণ ও মর্যাদাশীল এবং এ সময়ের আমল আল্লাহ তায়ালার নিকট প্রিয় ও গ্রহণীয় তাই এই দশকে বেশি বেশি নেক আমল করা উচিত। বিশেষত নফল নামাজ, কোরআন তেলাওয়াত, জিকির-আজকার, দান-খয়রাত ইত্যাদি।
এছাড়া ৯ জিলহজের ফজর থেকে ১৩ জিলহজের আসর পর্যন্ত প্রতি ফরজ নামাজের পর তাকবিরে তাশরিক বলা প্রত্যেকের জন্য ওয়াজিব। তাকবিরে তাশরিক হলো- ‘আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু আল্লাহু আকবার আল্লাহু আকবার, ওয়ালিল্লাহিল হামদ।’
পুরুষ-মহিলা প্রত্যেকের ওপর একবার এ তাকবির বলা ওয়াজিব। পুরুষ উচ্চস্বরে আর নারীরা অনুচ্চস্বরে তাকবির বলবেন।
এএইচ/