ঢাকা, মঙ্গলবার   ০৫ নভেম্বর ২০২৪,   কার্তিক ২১ ১৪৩১

কাশ্মীর ইস্যুতে কী বলছে কংগ্রেস?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:৩৫ পিএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৪:০৪ পিএম, ৬ আগস্ট ২০১৯ মঙ্গলবার

ভারত শাসিত কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের ফলে বিশেষ সুবিধা হারালেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা। সোমবার রাজ্যসভায় যা ঘটল, তা ‘নজিরবিহীন’। কারণ সংসদের ‘লিস্ট অফ বিজনেস’ এ এই প্রস্তাব ছিল না। পরে ‘রিভাইজড লিস্ট অফ বিজনেস’ এ এই প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়।

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবসানের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেসের অভ্যন্তরেও মতবিরোধ হয় বলে খবর প্রকাশ করছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো। তবে শেষপর্যন্ত জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ঘোষণা করা এবং কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করার বিষয়টি সমর্থন না করার সিদ্ধান্ত নেয় ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস।

যাইহোক, সোমবার কংগ্রেসসহ বিরোধীদের আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যসভার অধিবেশনে কাশ্মীর সংক্রান্ত বিলটি পাস করাতে সমর্থ হয় কেন্দ্রীয় সরকার। এদিন, রাজ্যসভার অধিবেশন থেকে ওয়াকআউট করে বহু বিরোধী দল, ফলে কমে যায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা। অন্যান্যরা সরকারের পক্ষেই যায়। সব মিলিয়ে সরকারের পক্ষে সংখ্যা দাঁড়ায় ১১৭। রাজ্যসভায় পাস হয়ে যায় কাশ্মীর সংক্রান্ত বিলটি।

কাশ্মীরের পদক্ষেপ নিয়ে কংগ্রেস দলের মধ্যেই বিভাজন সৃষ্টি হয়েছে। এই মতবিরোধ সরিয়ে ঐক্যমতে পৌঁছানোর জন্যে কংগ্রেসের কার্যনির্বাহী কমিটির (সিডাব্লুসি) জরুরি বৈঠকের সম্ভাবনা সম্পর্কে জানতে চাইলে রাহুল গান্ধি ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এনডিটিভিকে জানান, তিনি কংগ্রেস সভাপতি না থাকায় কোনও বৈঠক ডাকতে পারবেন না।

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের মে মাসে দেশটির জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার পরেই দলের খারাপ ফলের দায়ভার নিজের কাঁধে নিয়ে কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধি।

তবে টুইটে মোদি সরকারের ‘অমিতবিক্রমী’ পদক্ষেপের সমালোচনা করেন রাহুল। লেখেন, ‘সংবিধানকে লঙ্ঘন করে, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের জেলে পুরে ও জম্মু-কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে জাতীয় সংহতিকে শক্তিশালী করা যায় না। শুধুই কিছু জমির খণ্ড দেশটাকে গড়ে তোলেনি, দেশটাকে গড়ে তুলেছেন দেশের নাগরিকরাই। প্রশাসনিক ক্ষমতার এই অপব্যবহার দেশের নিরাপত্তার পক্ষে বিপজ্জনক।’

এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, কাশ্মীর ইস্যুটি সংসদের নিম্নকক্ষে গৃহীত হওয়ার আগেই একটি শক্তিশালী বিরোধী জোট গঠনের লক্ষ্য নিয়ে লোকসভার কংগ্রেস সাসংদরা সোনিয়া গান্ধি এবং রাহুল গান্ধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন।

পরবর্তীকালে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার অবলুপ্তি ঘটাতে ৩৭০ ধারা রদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ ও কপিল সিব্বালের মতো নেতারা ক্ষোভ উগরে দিয়ে সরকারের এই পদক্ষেপকে ‘গণতন্ত্রের হত্যা’ বলে অভিহিত করেন। লোকসভায় কংগ্রেস সাংসদরা এর প্রতিবাদে সোনিয়া গান্ধির নেতৃত্বে ওয়াকআউট করলেও, সংসদের বাইরে বেশ কয়েকজন কংগ্রেস নেতা বেরিয়ে এসে ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে ভিন্ন মত পোষণ করেন। একে সমর্থন করে, এটিকে তাদের ‘ব্যক্তিগত’ মতামত হিসাবে উল্লেখ করেন তারা।

‘আমার ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে আমি ৩৭০ ধারা বাতিল করাকে সমর্থন করি (যেমন শুরুর শব্দটি এটি অস্থায়ী) তবে ভারতের সংবিধান দ্বারা প্রদত্ত বিধান এবং পদ্ধতি অনুসারে রাজ্য বিধানসভার সম্মতি অনুযায়ীই এটা করা উচিত- অন্য কোনওভাবেই এটি করা সংবিধানিক নয়’ টুইট করেন কংগ্রেস নেতা জয়বীর শেরগিল।

নিরপেক্ষ অবস্থান গ্রহণ করে মুম্বাইয়ের কংগ্রেস নেতা মিলিন্দ দেওরা টুইট করেন, ‘অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে ধারা ৩৭০ নিয়ে একটি উদার বনাম রক্ষণশীল বিতর্ক সৃষ্টি হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত আদর্শগত দৃষ্টিভঙ্গী এবং বিতর্ককে সরিয়ে রেখে ভারতের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত নেওয়া, যাতে জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি বজায় থাকে এবং কাশ্মীরের যুবকদের চাকরি এবং কাশ্মীরি পণ্ডিতদের ন্যায়বিচার মেলে’।