ঈদযাত্রা: বাসে যানজট, ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয়
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১১:০১ এএম, ৯ আগস্ট ২০১৯ শুক্রবার
প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ করতে রাজধানী ছাড়ছে ঘরমুখো মানুষ। কিন্তু প্রতিবারের ন্যায় এবারও ভোগান্তি লেগেই আছে। ঈদ আসলেই যেন দুর্ভোগের অন্ত থাকেনা ঘরেফেরা মানুষদের। এবারও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। এবার সে তীব্রতা কয়েকগুণ বাড়িয়েছে জলবদ্ধতা ও বিরুপ আবহাওয়া। ফলে ঈদযাত্রায় তিন পথেই চরম ভোগান্তিতে পড়েছে এসব মানুষ।
রাজধানী ত্যাগ করতেই সাভার, নবীনগর, চন্দ্রা, টঙ্গী ও আশুলিয়ায় ব্যাপক যানজটের সম্মুখীন হচ্ছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ। গতকাল থেকেই বৃষ্টিতে ঢাকার সাভারে ঢাকা-আরিচা, নবীনগর-চন্দ্রা ও টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেডসহ শাখা সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে প্রায় ৪০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। কোথাও কোথাও গণপরিবহন সংকটে সাধারণ মানুষদের অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
আর ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতীতে। শুক্রবার (৯ আগস্ট) এ সড়কের করটিয়া হাট বাইপাস থেকে বঙ্গুবন্ধু সেতু পর্যন্ত প্রায় দীর্ঘ ২৫ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহন থেমে থেমে চলছে বলে জানা গেছে।
নীলফামারীগামী যাত্রী নিয়াজ মোর্শেদ অনিক একুশে টিভি অনলাইনকে জানান, গাড়ীর ছাড়ার সময় ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টায়, অথচ গাড়ী স্ট্যান্ডে এসে পৌঁছায় রাত সাড়ে ৩টায়। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর গাড়ী ছাড়লেও ভোগান্তির শেষ হচ্ছেনা। গাড়ী ছাড়ার সাড়ে সাত ঘণ্টা পার হলেও এখনো সিরাজগঞ্জ পার হতে পারেনি। দীর্ঘ এ যানজট থেকে কবে মুক্তি মিলবে তা বলতে পারছিনা।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ বেড়ে গেছে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের চন্দ্রা এলাকায়। এ মহাসড়ক দিয়ে সকাল থেকেই যানবাহন চলছে স্বাভাবিক গতিতে। ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। এছাড়া চলমান বিআরটি প্রকল্পের কাজ ও সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট বড় গর্ত থাকায় এ অবস্থা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
অপরদিকে,ঈদযাত্রাকে ঘিরে বরাবরের মতো এবারও শিডিউল বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে ট্রেন। আজ খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ভোর ৬টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সাড়ে ৮টার পর কমলাপুর স্টেশন ছেড়ে যায়।
অন্যদিকে উত্তরবঙ্গগামী ‘ধূমকেতু এক্সপ্রেস’ তিন ঘণ্টা বিলম্বে সাড়ে ৯টার দিকে ছেড়ে গেছে বলে জানিয়েছে স্টেশন কর্তৃপক্ষ। এটি সকাল সাড়ে ৬টায় ঢাকা ছাড়ার কথা ছিল।
এ ছাড়া সকাল ৮টায় চিলাহাটির উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল ‘নীলসাগর এক্সপ্রেস’। কিন্তু তা সেই সময় পর্যন্ত প্লাটফর্মে এসে পৌঁছায়নি। ৩৭টি রুটের মধ্যে দু-একটি বাদে সব ট্রেনই বিলম্বে ছাড়ছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। গতকাল বৃহস্পতিবারও উত্তরবঙ্গের সবকটি ট্রেন দুই থেকে তিন ঘণ্টা দেরি করে স্টেশন ছেড়েছে।
ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে আজ শুক্রবার ৩৭টি আন্তঃনগর ট্রেন ছেড়ে যাবে। এর মধ্যে ৩৪টি হচ্ছে নিয়মিত আন্তঃনগর ট্রেন; আর তিনটি হচ্ছে ঈদ স্পেশাল।
এদিকে, গত দুদিন টানা বৃষ্টি আর বিরুপ আবহাওয়ায় লঞ্চ ও ফেরি চলাচল বাধারমুখে পড়লেও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে চলেছে। বৈরী আবহাওয়া কিছুটা কেটে যাওয়ায় পাটুরিয়া দৌলতদিয়া নৌ রুটের ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে ঈদে ঘরমুখো যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েছেন বাস যাত্রীরা। শুক্রবার (৯ আগস্ট) সকাল থেকেই ফেরি পারাপারের দীর্ঘ লাইন চোখে পড়েছে।
বিআইডাব্লিউটিসির আরিচা অফিস কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দিনভর বৈরী আবহাওয়ায় ফেরি চলাচল ব্যহত হলেও শুক্রবার তা কিছুটা কেটে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে পাটুরিয়া ঘাটে ঈদে ঘরমুখো যানবাহন ও যাত্রীর চাপ বেড়েছে। পাটুরিয়া ঘাটে সকাল থেকে শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, ছোট প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস ও প্রায় ৩শ ট্রাক পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে নদীতে স্রোত থাকায় ফেরি চলাচল করছে ধীর গতিতে।
শুক্রবার সকাল থেকে মোট ১৯টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে বলে জানান বিআইডাব্লিউটিসি কর্মকর্তারা।