ঢাকা, রবিবার   ২৪ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

জানেন কি আনারস কত উপকারী?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৯:১০ এএম, ১০ আগস্ট ২০১৯ শনিবার

আনারস একটি অতি সুস্বাদু পুষ্টিকর এবং রসালো ফল। বর্ষাকালীন ফল হলেও এখন প্রায় সারা বছরই পাওয়া যায়। সৌন্দর্যের জন্য কবি একে স্বর্ণকুমারী নামে অভিহিত করেছেন। অসংখ্য গুণে গুনান্বিত এই ফল খেয়ে যেমন শরীরে পানির চাহিদা মেটানো যায় তেমনি বাড়তি পুষ্টিগুণ পেতে জুড়ি এর নেই। 

দক্ষিণ আমেরিকার এই ফল পুর্তগীজদের মাধ্যমে প্রথম এই অঞ্চলে আসে। বিশ্বে প্রায় ৮০ জাতের আনারস আছে বলে জানা যায়। টিলা বা পাহাড়ী জমি আনারসের জন্য উপযুক্ত।

আনারসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ, সি, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস এবং পটাশিয়াম রয়েছে। এ ছাড়া এ ফলটিতে প্রচুর পরিমাণ আঁশ ও ক্যালোরি রয়েছে। এটি কলস্টেরল ও চর্বিমুক্ত। তাই স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ ফলের জুড়ি নেই। 

আসুন এবার জেনে নিই আনারসের উপকারিতা সম্পর্কে-

পুষ্টির অভাব দূর করে

আনারস পুষ্টিগুণে ভরপুর একটি ফল। কারণ এতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং সি, ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম ও ফসফরাস। এসব উপাদান আমাদের দেহের পুষ্টির অভাব পূরণে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।

হজমশক্তি বৃদ্ধি করে

আমাদের হজমশক্তি বৃদ্ধি করতে বেশ কার্যকর হলো আনারস। এতে রয়েছে ব্রোমেলিন নামক এনজাইম, যা আমাদের হজমশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে। বদহজম বা হজমজনিত যে কোনো সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আনারস খেতে পারেন।

হাড় গঠনে সাহায্য করে

আনারসে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়ের গঠনে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ম্যাঙ্গানিজ হাড়কে করে তোলে মজবুত। খাবার তালিকায় পরিমিত পরিমাণ আনারস রাখলে হাড়ের সমস্যাজনিত যে কোনও রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

ওজন নিয়ন্ত্রণ করে

আনারস ওজন কমাতে সাহায্য করে। কারণ আনারসে প্রচুর ফাইবার থাকে এবং এতে কোন ফ্যাট থাকেনা। তাই পরিমিত পরিমান আনারস বা আনারসের জুস আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণের পথ্য হতে পারে।

দাঁত ও মাড়ি সুরক্ষায়

আনারসে থাকা ক্যালসিয়াম দাঁতের সুরক্ষায় কাজ করে। নিয়মিত আনারস খেলে দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ কম হয় এবং দাঁত ঠিক থাকে। তাছাড়া আনারস মাড়ির যে কোনো সমস্যা সমাধান করতে বেশ কার্যকর ভূমিকা পালন করে।

ঠাণ্ডা ও কাশি প্রতিরোধ করে

আনারসে ভিটামিন সি এর পরিমাণ বেশি থাকায় এটি ভাইরাসজনিত ঠাণ্ডা ও কাশি প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাছাড়া আনারস জ্বরের ও জন্ডিস রোগের জন্য বেশ উপকারী। গলাব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া এবং ব্রংকাইটিসে আনারসের রস ওষুধের বিকল্প হিসাবে কাজ করে।

ক্রিমিনাশক

আনারসের রস ক্রিমিনাশক হিসেবে কাজ করে। প্রতিদিন আনারসের রস খেলে কয়েকদিনের মধ্যেই কৃমির উৎপাত বন্ধ হয়ে যায়। কৃমি দূর করার জন্য সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে আনারস খাওয়া উচিত। আনারসের পাতাও কৃমি নাশ করে।

তাছাড়া দেহের তৈলাক্ত ত্বক, ব্রণসহ সব রূপলাবণ্যে আনারসের যথেষ্ট কদর রয়েছে। আনারসে থাকা বিটা ক্যারোটিন চোখের স্বাস্থ্য রক্ষায় কাজ করে এতে সুস্থ থাকে আমাদের চোখ। দেহে রক্ত জমাট বাঁধতে বাধা দেয় এই ফল। ফলে শিরা-ধমনির মধ্য দিয়ে সারা শরীরে সঠিকভাবে রক্ত প্রবাহিত হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় থাকলে নারীদের আনারস খেতে বারণ করা হয়। তাছাড়া গর্ভাবস্থার পরে চাইলে আনারস খেতে পারেন কিন্তু শরীরের অবস্থা বুঝে ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শ নিয়ে খেতে হবে। 

যে সকল মানুষের দেহে বাতের ব্যথা আছে কিংবা সন্দেহ করা হচ্ছে বাত হতে পারে তাদের আনারস না খাওয়াটাই ভালো। আনারসে আছে অনেক বেশি পরিমাণে প্রাকৃতিক চিনি। আনারসের ২ টি চিনি উপাদান সুক্রোজ এবং ফ্রুক্টোজ যা ডায়বেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। 

এএইচ/