ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

স্মরণে মহান কবি শেখ সাদী

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৩৯ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০১৯ বুধবার | আপডেট: ০২:২৬ পিএম, ১৪ আগস্ট ২০১৯ বুধবার

প্রাচীন পারস্যের মহান কবি শেখ সাদীর নৈতিক শিক্ষা ও মানবিকতা বোধের উজ্জীবক গল্পগুলোর এক সময় যথেষ্ট আবেদন ছিল বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে। সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বজুড়েই নৈতিকতার মানদণ্ড ঠিক আগের মতো নেই। শুদ্ধ চিত্ত, শুদ্ধ চিন্তা,পরিপূর্ণ সততা এসব এখন মানব চরিত্রের জন্য আর অত্যাবশ্যকীয় গুণ বা বৈশিষ্ট্য হিসাবে যেন বিবেচিত নয়। অন্য সব মূল্যবোধের মতোই নৈতিক মূল্যবোধেও অবক্ষয় এসেছে। 

পরিবেশ পরিস্থিতি বুঝে একজন আধুনিক মানুষ তার আচরণের ধারা নির্ধারণ করবেন বর্তমান সময়ে সেটাই কাক্সিক্ষত। অর্থাৎ সবকিছুই আপেক্ষিক হয়ে গেছে। হয়তো সে জন্যই শেখ সাদীর গল্পগুলো এখন আর কোনও পত্র-পত্রিকায়, এমনকি শিশুদের পাতায়ও ছাপা হতে দেখি না। সাদীর সেই গল্পটা নিয়ত মনে পড়ে। আমন্ত্রিত হয়ে বাদশাহর দরবারে যাবার সময় পথে এক ধনাঢ্য ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন শেখ সাদী।

তখন তাঁর পরনে ছিল অত্যন্ত সাধারণ পোশাক। তাই আশ্রয়দাতা সাদীকে তেমন ভালোভাবে সমাদর করলেন না। সাদী বিদায় নিয়ে বাদশাহর দরবারে যান এবং সেখানে কিছুদিন কাটানোর পর আবার বাড়ির পথ ধরেন। পথে রাত ঘনিয়ে এলে তিনি আবারও সেই ধনাঢ্য ব্যক্তির বাড়িতে আশ্রয় নেন। এবারে অবশ্য সাদীর পরনে ছিল অত্যন্ত মূল্যবান এবং ঝলমলে অভিজাত পোশাক। সুতরাং আশ্রয়দাতা এবার খুব ভালো ভালো দামি খাবার-দাবারের আয়োজন করলেন সাদীকে আপ্যায়ন করার জন্য। খাবার সময় সাদী করলেন অদ্ভুত কাজ। তিনি দামি দামি খাবারগুলো নিজের পোশাকের পকেটে পুরতে শুরু করলেন। এই দেখে ধনাঢ্য আশ্রয়দাতা খুবই অবাক হয়ে এর কারণ জিজ্ঞাসা করলেন।
সাদী বললেন, আগের বার আমি এতসব দামি দামি খাবার পাই নি। কিন্তু এবার পেয়েছি আমার দামি পোশাকের কারণে। সুতরাং খাবারগুলো পোশাকেরই প্রাপ্য।


আশ্রয়দাতা নিজের ভুল বুঝতে পারলেন এবং সাদীর কাছে নিজের আচরণের জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন।
এই গল্পের মূল বাণী কী? মানুষকে মানুষ হিসাবেই মর্যাদা দিতে হবে। তার অর্থসম্পদ বা পোশাক-আশাক দেখে নয়।মানুষের মর্যাদা সম্পর্কে এর চেয়ে ভালো কোনও দৃষ্টান্ত আর কোনও লেখকের রচনায় মিলবে কিনা সন্দেহ। শেখ সাদীর অন্য গল্পগুলোও এমনই সব মহত্তর মানবিক ও নৈতিক শিক্ষায় উজ্জীবিত। তাই তো এখনও বিশ্বের সর্বত্র শেখ সাদীর কদর আছে শিক্ষিত মানুষের কাছে। আছে তার প্রাসঙ্গিকতা।


প্রাসঙ্গিকতা যে আছে তার প্রমাণ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে বারাক ওবামা যখন ইরানি নববর্ষে ইরানবাসীকে শুভেচ্ছা জানান তখন তিনি শেখ সাদীর কবিতাই বেছে নেন নিজের ভাব প্রকাশের জন্য। ২০০৯ সালের ২০ মার্চ নওরোজের শুভেচ্ছাবার্তায় ওবামা উদ্ধৃত করেন সাদীর বিখ্যাত রচনা ‘বনি আদম’ এর প্রথম দুটি চরণ,
‘আদমসন্তান পরস্পর একই দেহের অঙ্গ সৃষ্টির উৎসে তাদের উপাদান যে অভিন্ন।’

বিশ্বের সমস্ত মানব সম্প্রদায়কে এভাবে একই দেহের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসাবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি এমনকি আধুনিককালের মানবাধিকারের অতিউৎসাহী প্রবক্তাদের কারও রচনায়ও দেখি না। অথচ শেখ সাদী জন্মেছিলেন সেই মধ্যযুগে যেটিকে আমরা এখনকার মানুষেরা বর্বরতার যুগ হিসাবে উল্লেখ করি।

শেখ সাদীর পুরো নাম শেখ আবু আবদুল্লাহ মুশাররফ উদ্দীন ইবনে মুসলেহ সাদী। জন্মেছিলেন ইরানের তখনকার রাজধানী সিরাজ নগরে, ১১৭৫ মতান্তরে ১১৮৪ খ্রিস্টাব্দে। বাবা আবদুল্লাহ ছিলেন সিরাজের বাদশাহর সচিব। তিনি অত্যন্ত ধর্মপ্রাণ মানুষ ছিলেন এবং তাঁর কাছেই সাদীর শৈশবের লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়। পরে তিনি তখনকার বিশে^র অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ বাগদাদের নিযামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন। সেখানে তিনি ইসলামি ধর্মতত্ত্ব (যেমন কুরআন, হাদিস, তাফসির, ফিকাহ, উসুল, ফরায়েজ, হিকমা), দর্শন, সাহিত্য (যেমন : ভাষাবিজ্ঞান, ধ্বনিতত্ত্ব, অলঙ্কারশাস্ত্র), নীতিশাস্ত্র ইত্যাদি বিষয়ে গভীর জ্ঞান অর্জন করেন। তিনি ভাষা শিক্ষার ওপর আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং আরবি, ফারসি, হিব্রু, গ্রিক, তুর্কি, ল্যাটিন, উর্দু, হিন্দি, সংস্কৃত, আফগানি ইত্যাদি ২৪টির মতো ভাষা শিখে ফেলেন। এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ভাষায় তিনি এতটাই দক্ষ হয়ে ওঠেন যে, সেগুলো তিনি নিজের মাতৃভাষা ফারসির মতোই সচ্ছন্দে বলতে এবং লিখতে পারতেন।

শিক্ষাজীবন শেষে সাদী প্রথমে পবিত্র হজ পালন করতে মক্কা-মদীনায় যান। এরপর শুরু করেন দেশভ্রমণ। আরব বিশে^র বিভিন্ন দেশ ইরাক, সিরিয়া, ওমান, জেরুজালেম, মিসর, লিবিয়া ছাড়াও তিনি স্পেন, ইতালি, চীন, সমরখন্দ (রাশিয়া), আফগানিস্তান, ভারত এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ সফর করেন। সাদী এত বেশি দেশ সফর করেন যে, একমাত্র বিশ্বপর্যটক ইবনে বতুতা ছাড়া তাঁর মতো পর্যটক সে সময় আর কেউ ছিলেন না।

ত্রিশ বছরের শিক্ষাজীবন শেষে পরবর্তী ত্রিশ বছর ধরে সাদী বিশ্ব ভ্রমণ করেন এবং এরপর নিজ শহর সিরাজে এসে গ্রন্থ রচনায় মনোনিবেশ করেন। ছাত্রজীবন থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন এবং তাঁর কবিতা তাঁর একজন শিক্ষককে এতটাই মুগ্ধ করে যে, সেই শিক্ষক সাদীর লেখাপড়ার বিষয়টি দেখাশোনার ভার নেন।

তাঁর সময়ে শেখ সাদীর মতো জ্ঞানী ব্যক্তি মুসলিম বিশ্বে দ্বিতীয় কেউ ছিল না। ১২৫৮ সালে তাঁর রচিত গ্রন্থ ‘গুলিস্তাঁ’ প্রকাশিত হয়। এটিকে বলা হয় প্রাচীন পারস্যের কবিদের রচিত চারটি শ্রেষ্ঠ গ্রন্থের একটি। অন্য তিনটি শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ হলো ফেরদৌসীর ‘শাহনামা’, রুমির ‘মসনভি’ এবং হাফিজের ‘দিওয়ান’। অনেক ইংরেজ লেখক প-িত সাদীকেই প্রাচ্যের শেক্সপিয়র বলে আখ্যা দেন।
শেখ সাদীর ২২টির মতো গ্রন্থের নাম জানা যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো গুলিস্তাঁ, বূস্তাঁ, করিমা, সাহাবিয়া, কাসায়েদে ফারসী, কাসায়েদে আরাবিয়া, গযলিয়াত, কুল্লিয়াত ইত্যাদি।

সাদীর গুলিস্তাঁ বিশ্ব সাহিত্যের অমূল্য সেরা সম্পদ হিসাবে স্বীকৃত। এটি পৃথিবীর প্রায় সব গুরুত্বপূর্ণ ভাষায় অনূদিত হয়েছে। তবে বূস্তাঁও সমমর্যাদার দাবিদার। এই দুটি কালজয়ী গ্রন্থ সেকালে সমগ্র এশিয়ায় বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। দুটি গ্রন্থের অনেক পঙ্ক্তি পারস্য সাহিত্যে প্রবাদে পরিণত হয়েছে।

‘গুলিস্তাঁ’ হচ্ছে উপদেশমূলক গদ্যের ফাঁকে ফাঁকে কাব্যে রচিত একটি গ্রন্থ। আর ‘বূস্তাঁ’পুরোটাই কাব্য। ‘গুলিস্তাঁ’মানে ফুলের বাগান আর ‘বূস্তাঁ’ মানে সুবাসিত স্থান। ‘গুলিস্তাঁ’ গ্রন্থে সাদী যেসব কাহিনী দিয়ে মানবমনের চিরন্তন বাগানে ফুল ফুটিয়েছেন তা অনেকটা দৃশ্যমান। কিন্তু বূস্তাঁর ফুলগুলো দৃশ্যমান নয়, কাছে গেলে অর্থাৎ নিয়মিত চর্চা করলে এর অন্তর্গত সুবাস মন-মস্তিষ্ককে বিমোহিত করে। বর্ণনাশৈলির চমৎকারিত্ব, ভাষার লালিত্য ও মাধুর্য এবং মানবীয় গুণাবলির উৎকর্ষ সাধনে তাঁর অবদান বিশ^ সভ্যতায় অবিস্মরণীয়।

মানবতার কবি
ফারসি সাহিত্যের কিংবদন্তি পুরুষ কবি শেখ সাদী তাঁর সাহিত্যকর্মের সর্বত্রই মানবতার জয়গান গেয়েছেন। তাঁর ‘গুলিস্তাঁ’ কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত সেই উদ্ধৃতিটি দেখুন,
‘সবল বাহু আর শক্তিশালী হাতের পাঞ্জায়
নিরীহ দুর্বলের হাত ভাঙা বড় অন্যায়।
পতিতের প্রতি যে দয়া দেখায় না, সে কি ভয় পায় না
নিজে পতিত হলে কেউ যে এগিয়ে আসবে না?
মন্দের দানা বুনে যে দিন কাটে ভালোর আশায়
ভ্রান্ত চিন্তায় ঘুরপাক খায় বেভুল বাতিল কল্পনায়।
কানের তুলা বের করো, শোধ কর মানুষের প্রাপ্য
যদি না দাও, সেদিন ফেরত দেবে অবশ্যই।
আদমসন্তান পরস্পর এক দেহের অঙ্গ
সৃষ্টির উৎসে তাদের উপাদান যে অভিন্ন
কালের দুর্বিপাকে ব্যথিত হয় যদি একটি অঙ্গ
স্বস্তিতে থাকতে পারে না বাকি অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ
অন্যদের দুঃখে-কষ্টে তুমি যে নির্বিকার
তোমাকে মানুষ বলা অনুচিৎ, অবিচার।’(গুলিস্তাঁ, প্রথম অধ্যায়, হেকায়েত-১০)

এই উদ্ধৃতিতে সাদী অধিকারবঞ্চিত, দুর্বল, সাধারণ মানুষের অধিকার আদায়ের যে গভীর আবেদন রেখেছেন তা অতুলনীয়। শেষ ছয়টি চরণে তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন মানবপ্রেমের এক বিশ্বজনীন আবেদন। অত্যন্ত সহজ-সরল ভাষায়, অতি সংক্ষেপে, কাব্যশৈলির অসাধারণ নৈপুণ্যে ও যুক্তির মানদ-ে উপস্থপিত এই আবেদন বিশ্বের সব মানুষের হৃদয় স্পর্শ করে। মানুষের চিন্তায় মুহূর্তে উঠে আসে আপন সৃষ্টিতত্ত্ব, সমগোত্রীয় মানুষের প্রতি দায়িত্ব বিশেষ করে মানুষে মানুষে সাম্য ও সম্প্রীতির অনিন্দ্য চেতনা।
আজকের বিশ্বে জাতিগত, ধর্মীয়, রাজনৈতিক এবং বর্ণ ও জাতপাতের ভিত্তিতে মানুষে মানুষে বিভেদ ও হানাহানি চরমে পৌঁছেছে। কবি শেখ সাদী কবিতার অলঙ্কারে মানবজাতির সামনে যে সত্যটি উপস্থাপন করেছেন সেটি হলো, বিশ্বের সব মানুষ এক আদমের সন্তান, সবারই সৃষ্টির মূলে রয়েছে একই উপাদান। 

সুতরাং তাদের মধ্যে সম্পর্ক হওয়া চাই একটি দেহের বিভিন্ন অঙ্গের অন্তর্গত সম্পর্কের মতো। দেহের কোনও অঙ্গ আঘাতপ্রাপ্ত হলে যেমন অন্য অঙ্গগুলো স্বস্তিতে থাকতে পারে না, তেমনই পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তে যে কোনও আদমসন্তান ব্যথায় কাতর হলে কোনও মানুষ তার সমব্যথী না হয়ে পারে না। এই দায়িত্ব যে ভুলে যায়, অন্যের দুঃখ-দুর্দশা দেখেও যে নির্বিকার থাকে, সাদীর ভাষায়, সে মানুষ নয়, তাকে মানুষ বলা যায় না।

মানব সমাজকে সৌহার্দ্যপূর্ণ ও শান্তিময় করার আদর্শ ও শিক্ষা সাদী প্রচার করে গেছেন তাঁর অমর সাহিত্যে। মানুষের চেতনার দুয়ারে করাঘাত করে তাদের চিন্তার পরিশুদ্ধির সূত্রে সুন্দর চরিত্র ও আদর্শ সমাজ নির্মাণের উপাদান যোগান দিয়েছেন। তাঁর রচিত গল্পগুলোতে তিনি প্রধানত শাসকদের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন। বিভিন্ন রাজা-বাদশাহর জীবনী তুলে ধরেছেন নানা কাহিনীর অবতারণা করে। এগুলোর মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রকারান্তরে শাসকশ্রেণিকে ভালো কাজে অনুপ্রাণিত করা এবং মন্দ কাজে বিরত থাকার তাগিদ দেওয়া। মানুষ যখন জীবন ও জগতের রহস্য হৃদয়ঙ্গম করতে পারে তখন নিজে থেকেই সুপথের অনুসারী হয়। তার কথা ও কাজে মানবীয় সৌন্দর্যের ফুল ফোটে। শেখ সাদী মানুষের ওই অন্তর্চক্ষু খুলে দেওয়ার কাজটি করেছেন তাঁর রচনার ভাজে ভাজে নানা উপমা-উৎপ্রেক্ষায় জীবন ও জগতের নানা রহস্যের নির্দেশনা দিয়ে।

যারা ক্ষমতার মোহে অন্ধ তাদের চোখ খুলে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন সাদী নানা উপাখ্যানের অবতারণায়। যাতে মহাক্ষমতাধর ব্যক্তিরাও নিজের ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী না ভাবে। তাঁর সেসব গল্পেরও ভাষাশৈলি অতিশয় সরল ও সহজ। কিন্তু তা ছিল অননুকরণীয়। রচনাশৈলির সারল্য, মাধুর্য ও বিষয়বস্তুর সার্বজনীন মানবিকতার কারণেই আজ প্রায় সাড়ে আটশ’বছর পরও বিশ্বের কোটি কোটি মানুষ এই মহান কবির রচনা পাঠ করে অনুপ্রাণিত হয়। নিজের জীবনে অনুসরণের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে।

বাংলাদেশসহ মুসলিম বিশ্বের লাখো মসজিদ মাদরাসায় এবং মানুষের ঘরে ঘরে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)-এর দিনে এবং নানা উপলক্ষে প্রতিদিন শেখ সাদীর রচিত বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নাতে রাসূল সমস্বরে কত লক্ষবার উচ্চারিত হয় তার কোনও ইয়ত্তা নেই। সেটি হলো :
‘বালাগাল উলা বি কামালিহি, কাশাফাদ্দোজা বি জামালিহি
হাসুনাত জামিউ খিসালিহি, সাল্লু আলাইহি ওয়া আলিহি।’
সুউচ্চ শিখরে সমাসীন তিনি নিজ মহিমায়
তিমির-তমসা কাটিল তার রূপের প্রভায়
সুন্দর আর সুন্দর তার স্বভাব চরিত্র তামাম

জানাও তাঁর ও তাঁর বংশের ‘পরে দরূদ সালাম। (অনুবাদ : ড. মুহাম্মদ ঈসা শাহেদী)
মহান কবি শেখ সাদী এই নাতে যেমন রাসূলে খোদার (স.) ওপর দরূদ ও সালাম পৌঁছে দিয়েছেন, তেমনই তাঁর নিজের ওপরও প্রতিটি মুসলমানের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত সালাম বর্ষিত হচ্ছে। হতে থাকবে হয়তো অনন্তকাল। মানবতাবাদী এই মহান কবি ১২৯২ সালে নিজ জন্মস্থান সিরাজ শহরেই মৃত্যুবরণ করেন। কিন্তু বিশ্বব্যাপী পাঠকের চিত্তে তিনি চির অমর।

টিআর/