শ্বাসরুদ্ধকর জয়ে সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৪৬ পিএম, ২১ আগস্ট ২০১৯ বুধবার
শান্ত ও ইয়াসির আলির অনবদ্য ব্যাটিং আর ইয়াসিন আরাফাতের টানা দুই ছক্কায় জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় দল। ফলে শ্বাসরুদ্ধকর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে হারিয়ে তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজে ১-১ এ সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ।
বুধবার বিকেএসপি মাঠে টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে ২৭৩ রান করে অলআউট হয় সফরকারী শ্রীলঙ্কা এমার্জিং দল। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৬৫ রান আসে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান কামিণ্ডু মেন্ডিসের ব্যাট থেকে। ফিফটি করেন আরও একজন। ওপেনার প্যাথুম নিশাঙ্কা করেন দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৫৫ রান।
এছাড়া দলীয় ক্যাপ্টেন কাম উইকেটকীপার চ্যারিথ আসালাঙ্কা (৪৫) ও জেহান ড্যানিয়েল (৪৩) খেলেন দুটি চল্লিশোর্ধ ইনিংস।
টাইগার ইমার্জিং দলের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে সফল ছিলেন শফিকুল ইসলাম। ৫১ রান দিয়ে ৩টি উইকেট লাভ করেন বগুড়ার এ পেসার। এছাড়া তরুণ স্পিনার নাঈম হাসান ২টি এবং লেগস্পিনার আমিনুল ইসলাম বিপ্লব, মিডিয়াম পেসার সুমন খান ও সিমিং অলরাউণ্ডার ইয়াসিন আরাফাত নেন ১টি করে উইকেট।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই লঙ্কান বোলারদের তোপের মুখে পড়ে বাংলাদেশ। এ্যাশেন বান্দারার থ্রোতে ৮ বলে ৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ। তবে সাইফ হাসান ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাটে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। পঞ্চাশোর্ধ রানের জুটি গড়ে বিচ্ছিন্ন হন সাইফ (২৭)।
এরপর শান্তর সঙ্গে যোগ দিয়ে দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নেয়ার দায়িত্ব নেন বিপিএল মাতানো ইয়াসির আলি রাব্বি। এই দুই ব্যাটসম্যানের দায়িত্বশীল ব্যাটিং দলকে নিয়ে যেতে থাকে কাঙ্ক্ষিত জয়ের লক্ষ্যে। এরইমধ্যে ফিফটি তুলে নেন দুজনেই।
তবে শিরান ফার্নান্ডোর বলে থামে শান্ত-রাব্বির ১২০ রানের অনবদ্য জুটি। ব্যক্তিগত ৭৭ রানে আউট হন বাঁহাতি নাজমুল হোসেন। ৮৮ বলে নয় চার ও এক ছক্কায় সাজানো ছিল তার ইনিংসটি। তবে শান্তর বিদায়েও জয়ের স্বপ্ন ফিকে হতে দেননি ইয়াসির আলি ও আফিফ হোসেন।
এ দুজনে মিলে জুটি গড়ে দলকে যখন জয়ের কাছাকাছি নিচ্ছিলেন, তখনই জোড়া আঘাতে বাংলাদেশকে সেখান থেকে দূরে ঠেলে দেন ড্যানিয়েল ও ডি সিলভা। মাত্র পাঁচ রানের মধ্যেই তুলে নেন দুই সেট ব্যাটসম্যানকে। চট্টগ্রামের ব্যাটসম্যান ইয়াসির আউট হন ব্যক্তিগত ৮৫ রানে।
ফলে ১৫ রানের আফসোসে পুড়েন এই ডানহাতি। তার ৯৩ বলের ইনিংসে ছিল মাত্র তিনটি চারের বিপরীতে পাঁচটি ছক্কার মার। যদিও ম্যাচসেরা হন ২৩ বছর বয়সী এই সুঠামদেহী ব্যাটসম্যান।
রাব্বির পরই সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি আফিফ। ফেরার আগে করেন ২৩ বলে ১৮ রান। আর এ দুজনের আউটের মধ্যে দিয়েই বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। কারণ এরপর ক্রিজে এসেই আউট হন আমিনুল। একপর্যায়ে ২৫৪ রানেই সপ্তম উইকেট হারায় টাইগাররা, যেখানে ক্রিজে ছিলনা কোনও স্বীকৃত ব্যাটসম্যান।
এমনই অবস্থায় জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের দরকার হয় ২০ রান। তবে ৪৯তম ওভার থেকে ১৩ রান তুলে নিয়ে জয়ের পথটা অনেকটাই সহজ করে ফেলেন সুমন খান, নাঈম হাসান ও ইয়াসিন আরাফাত। যদিও ওই ওভারেই আউট হন সুমন (৩ বলে ৫)। তবে শেষ বলেই ছক্কা হাঁকান ইয়াসিন।
যার ফলে শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ছিল ৭ রানের। দ্বিতীয় বল থেকে নাঈম এক রান নিলে তৃতীয় বলটাকে উড়িয়ে সীমানা ছাড়া করেন তরুণ ইয়াসিন আরাফাত। ছয় ফুট এক ইঞ্চির দীর্ঘদেহী এই ব্যাটসম্যানের ওই ছক্কাতেই জয়ের আনন্দে ভাসে গোটা টাইগার শিবির। তিন বল হাতে রেখে দুই উইকেটের জয় পায় শান্তর দল।
এদিন লঙ্কানদের পক্ষে ফার্নান্ডো ও ড্যানিয়েল ২টি করে এবং আমিলা অপন্সো ও ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা ডি সিলভা একটি করে উইকেট লাভ করেন। অবশ্য এ দুজনেই খেলেছেন লঙ্কান জাতীয় দলে, যথাক্রমে ৯টি ও ১০টি করে ওয়ানডে ম্যাচ।
সিরিজের প্রথম ম্যাচটি অবশ্য ১৮৬ রানের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। যার ফলে তৃতীয় তথা শেষ ম্যাচটি দুদলের জন্য হয়ে দাঁড়িয়েছে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে। ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৪ আগস্ট খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে।
ওয়ানডে সিরিজ শেষে দুটি টেস্ট ম্যাচও খেলবে দুদল। অবশ্য সবগুলো ম্যাচই আন-অফিসিয়াল।
এনএস/