ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

নলছিটিতে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে শোকজ

নলছিটি (ঝালকাঠি) সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০৩:০৪ পিএম, ২২ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার খাগড়াখানা রহমআলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।

বিদ্যালয়ের স্লিপমানি ও সরকারি বরাদ্দের অর্থ আত্মসাত, নিয়মিত বিদ্যালয়ে না এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করার ঘটনায় অভিভাবকদের পক্ষ থেকে একটি অভিযোগ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক, জেলা প্রশাসক, দুর্নীতি দমন কমিশন ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে দেওয়া হয়।

অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা পেয়ে জেলা প্রাথামিক শিক্ষা বিভাগ প্রধান শিক্ষককে শোকজ করে। বিধিমালা অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি বিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতির জবাব চেয়ে কৈফিয়ত তলব করা হয়। জেলা প্রাথামকি শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নবেজ উদ্দিন সরকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

অভিভাবকদের অভিযোগে জানা যায়, খাগড়াখানা রহমআলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান ভর্তি ইচ্ছুক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের কাছ থেকে অর্থ করে আদায়, স্লিপমানি ও সরকারি বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত, বিদ্যালয়ের ল্যাপটপ নিজ বাড়িতে ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করাসহ নানা অনিয়ম ও দুর্নীতি করে যাচ্ছেন। এসব বিষয়ে অন্য শিক্ষক এবং অভিভাবকরা প্রতিবাদ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক প্রতিবাদকারীদের বিরুদ্ধে নানা ‘ষড়যন্ত্র’ শুরু করে।

এসব ঘটনায় অতিষ্ট হয়ে অভিভাবকরা গত ১০ জুলাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদফতরের, জেলা প্রশাসক ও দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ১৯ জুলাই বিদ্যালয়ে তদন্তে যান জেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা। এসময় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিবাবকদের দায়ের করা সব অভিযোগের সত্যতা পায় তদন্ত দল। অনিয়ম ও দুর্নীতির কৈফিয়ত তলব করে প্রধান শিক্ষককে একটি শোকজ নোটিশ পাঠানো হয়। এতে তদন্তকারীদল উল্লেখ করেন, পরিদর্শনের দিন প্রধান শিক্ষক ছুটি ব্যতিত বিদ্যালয়েল বাহিরে অবস্থান করছিলেন।

ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে ভর্তির সময় টাকা নেওয়ার প্রমান পাওয়া যায়। প্রধান শিক্ষক স্লিপ বরাদ্দের ৫০ হাজার টাকা, প্রাক প্রাথমিক শ্রেণিকক্ষের জন্য বরাদ্দকৃত ১০ হাজার টাকার কোনও উল্লেখযোগ্য ব্যয়ের খাত দেখাতে পারেনি। বিদ্যালয়ের জন্য সরকারি বরাদ্দকৃত ল্যাপটপটি প্রধান শিক্ষক বাড়িতে তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করেন।

এছাড়া জাতীয় শোক দিবস পালনে দুই হাজার টাকা বরাদ্দ থাকলেও তিনি ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছ থেকে চাঁদা তুলে অনুষ্ঠান করেন।

শোকজ নোটিশে আরো উল্লেখ করা হয়, শ্রেণিকক্ষে পাঠটিকা ও উপকরণের কোনও ব্যবহার নেই। প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের সমাবেশ হওয়ার বিধান থাকলেও এতে প্রধান শিক্ষক অনুপস্থিত থাকেন। তার এসব কার্যক্রম সম্পূর্ণ বিধি বহিভূত ও শৃঙ্খলা ভঙ্গের আওতায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও উল্লেখ করা হয় ওই চিঠিতে।

এ ব্যাপারে খাগড়াখানা রহমআলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান বলেন, আমাকে শোকজ করা হয়েছে। আমি শোকজের জবাবা সময় মতো দিয়ে দিবো। আমি কোনও অনিয়ম দুর্নীতি করিনি। সবগুলো অভিযোগই মিথ্যা।

এ ব্যাপারে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নবেজ উদ্দিন সরকার বলেন, তদন্ত দল একটি প্রতিবেদন দিয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে আমি প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানকে শোকজ করেছি। তার কাছে বিভিন্ন বিষয় জানতে চাওয়া হয়েছে। এর সঠিক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।