ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছেন নেইমার!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:০৯ পিএম, ২২ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৬:১১ পিএম, ২২ আগস্ট ২০১৯ বৃহস্পতিবার
আবারও কী বার্সেলোনায় ফিরবেন নেইমার? যদিও এ প্রশ্নের উত্তরটা দেয়া যাচ্ছে না এখনই। তবে ফিরলে ছোট একটা ইতিহাসের অংশ হতে পারেন ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টার। কাতালান ক্লাবটিতে না ফিরলেও তারকা হয়ে মিশে যেতে পারেন লাখো খেলোয়াড়ের ভিড়ে।
কিন্তু কিভাবে? এ প্রশ্নটির জবাব অবশ্য পেয়ে যাবেন এখনই। কেননা এর জবাব নিয়েই তো আজকের এই আয়োজন। তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কিভাবে ইতিহাসের অংশ হতে যাচ্ছেন নেইমার!
উত্তরটা দেয়ার শুরুতে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের একটা উদ্ধৃতি দিয়েই শুরু করতে হচ্ছে। তিনি লিখেছিলেন, ‘কেউ ভোলে না কেউ ভোলে অতীত দিনের স্মৃতি’৷ কোনও কোনও ক্লাবের সঙ্গে কোনও কোনও ফুটবলারের সম্পর্কটাও ঠিক এমনই হয়ে যায়। কেউ যেন কাউকে ভুলতে পারে না। যেমনটা বার্সেলোনাও ভুলতে পারেনি নেইমারকে। পিএসজি থেকে তাই ফিরিয়ে নিতে চাইছে তাকে।
ফুটবল ইতিহাসে এটা অবশ্য নতুন বিষয় নয়। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকজন তারকা খেলোয়াড় ফিরেছেন তাদের পুরনো দলে। যেমন- এদেরই একজন মারিও গ্যোটজে।
জার্মান এই ফুটবলারের কথা উঠলেই মনে পড়ে, ২০১৪ বিশ্বকাপ ফাইনালে আর্জেন্টিনার হৃদয় ভেঙে দেয়া সেই গোলটির কথা। দেশকে বিশ্বকাপ জেতানো এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে বড় সময় কাটছে বোরুসিয়া ডর্টমুন্ডে। বুন্দেস লিগার এই ক্লাবে গ্যোটজে প্রথম দফা খেলেছেন ২০০৯ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত। পরে ২০১৬ পর্যন্ত ছিলেন বায়ার্ন মিউনিখে। তারপরই ‘ঘরের ছেলে’কে ফিরিয়ে আনে ডর্টমুন্ড।
সোল ক্যাম্পবেল
ইংল্যান্ডের সাবেক এই সেন্টার-ব্যাক ছেড়ে গিয়েও আবার ফিরেছিলেন আর্সেনালে। প্রথম দফায় ছিলেন পাঁচ মৌসুম (২০০১ থেকে ২০০৬), তবে চার বছর পর ফিরে অবশ্য মাত্র ১১টি ম্যাচ খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন ক্যাম্পবেল।
পিটার ক্রাউচ
ছয় ফুট সাত ইঞ্চি উচ্চতার এই সাবেক ইংলিশ ফরোয়ার্ডকে ইতিহাসের অন্যতম দীর্ঘকায় ফুটবলার হিসেবে মনে রাখতে হবে। উচ্চতার সুবিধা নিয়ে প্রিমিয়ার লিগে হেড করে সবচেয়ে বেশি গোলের রেকর্ড গড়েছেন তিনি। টটেনহাম হটস্পারে (১৯৯৮ থেকে ২০০০, ২০০৯ থেকে ২০১১) আর পোর্টসমাউথে (২০০১ থেকে ২০০২, ২০০৮ থেকে ২০০৯) খেলেছেন দু দফায়। পরে অবশ্য গলফ খেলতে দেখা যায় ক্রাউচকে।
ফার্নান্দো তোরেস
স্পেনের এই স্ট্রাইকার দু'দফা খেলার সুযোগ পেয়েছেন এ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের হয়ে। ২০০১ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত খেলে চলে গিয়েছিলেন ইংলিশ ক্লাব লিভারপুলে। সেখান থেকে চেলসি ও এসি মিলান হয়ে ২০১৫ সালে ফিরে আসেন মাদ্রিদের ক্লবটিতে। পরে ২০১৮ থেকে খেলছেন জাপানের সাগান টোসু ক্লাবের হয়ে।
দিদিয়ের দ্রগবা
দু-দু'বার আফ্রিকার বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জিতেছেন আইভরি কোস্ট-এর সাবেক এই স্ট্রাইকার। ক্লাব ফুটবলেও অনেক সাফল্য আছে তার। যার সবই ইংলিশ জায়ান্ট চেলসির হয়ে। ইংলিশ ক্লাবটিকে প্রিমিয়ার লিগ তো বটেই, চ্যাম্পিয়ন্স লিগও জিতিয়েছেন দ্রগবা। এই চেলসিতেই তিনি খেলেছেন দু'বার। প্রথম দফায় আট বছর (২০০৪ থেকে ২০১২), তারপর প্রায় দুই মৌসুম (২০১৪ থেকে ২০১৫)৷
থিয়েরি অঁরি
ফ্রান্সকে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ জেতানো অঁরি দু'বার খেলেছেন আর্সেনালে। ১৯৯৯ থেকে ২০০৭ পর্যন্ত প্রথম দফা, ২০১২-তে পরের দফায় ফিরলেও সেটা অবশ্য স্থায়ীত্ব বা সাফল্যে স্মরণীয় হয়নি তার।
এছাড়া এই তালিকায় আরও আছেন- রবি ফাওলার (লিভারপুল), পল পগবা (ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড), শিনিজি কাগাওয়া (বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড), ইয়ান রাশ (লিভারপুল), কার্লোস তেভেজ (বোকা জুনিয়র্স), কাকা (মিলান ও সাওপাওলো), রবি কিন (টটেনহাম হটস্পার), গ্রায়েম লে সঁ (চেলসি), শন রাইট-ফিলিপস (ম্যানচেস্টার সিটি) এবং ম্যাটস হুমেলস (বায়ার্ন মিউনিখ ও বোরুসিয়া ডর্টমুন্ড) সহ আরেও কয়েকজন দু'দফা করে খেলেছেন একই ক্লাবে।
এই তালিকায় এবার নেইমার? হ্যাঁ, এবার নেইমারও যোগ দিতে পারেন এই দলে। ২০১৭ সালের গ্রীষ্মের দলবদলে রেকর্ড ২২২ মিলিয়ন ইউরোতে পিএসজিতে গেলেও এখনই তাকে ফিরে পেতে আগ্রহী এফসি বার্সেলোনা। রিয়াল মাদ্রিদ আর জুভেন্টাসও আগ্রহী তাকে নিয়ে।
তাই খুব শিগগিরই জানা যাবে ঠিক কোন ক্লাবে যাবেন নেইমার। নাকি পিএসজিতেই থাকবেন তিনি। বার্সেলোনায় ফিরলে তারও এক ক্লাবে দু'দফা খেলা হয়ে যাবে। সেইসঙ্গে হয়ে যাবেন ইতিহাসের অংশ। সূত্র- ডয়েচে ভেলে।
এনএস/