ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৭ ১৪৩১

চুয়াডাঙ্গায় ডায়েরিয়া আতঙ্ক, হাসপাতালে ভর্তি ১৩৫ জন

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ১১:১৯ পিএম, ২৬ আগস্ট ২০১৯ সোমবার

চুয়াডাঙ্গায় ডায়েরিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুর থেকে গত ৭২ ঘণ্টায় ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ১৩৫ জন রোগী চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

ডেঙ্গু রোগী নিয়ে এমনিতেই চিকিৎসকরা অনেক ব্যস্ত, তার ওপর ডায়েরিয়ার বাড়তি রোগীদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসক নার্সদের হিমশিম খেতে দেখা গেছে সোমবার। ডেঙ্গুর সঙ্গে ডায়েরিয়া ছড়িয়ে পড়ায় রোগী ও সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা দিয়েছে  বাড়তি আতঙ্ক।

এদিন দুপুরে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে গিয়ে দেখা গেছে, ডায়েরিয়া আক্রান্ত রোগী আসছে একের পর এক। হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা, চলাচলের পথ, এমনকি ট্রলি উঠানোর সিঁড়িতেও ডায়েরিয়া রোগীতে ভরে গেছে। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে ব্যস্ত চিকিৎসক ও নার্সরা। 

আক্রান্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, জেলার সব এলাকা থেকে ডায়েরিয়া রোগী আসছে হাসপাতালে। জেলা শহরের মাস্টার পাড়ার জসিম উদ্দীনের স্ত্রী অনামিকা জানান, শুক্রবার রাত ১১টার দিকে তার স্বামীর হঠাৎ বমি শুরু হয়। এরপর পাতলা পায়খানা। শনিবার (২৪ আগস্ট) সকালে ৮-১০ বার বাথরুম থেকে আসার পর নিস্তেজ হয়ে পড়ে। সকাল ৮টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। সিট না পেয়ে আশ্রয় নিতে হয়েছে বারান্দায়। এখানে এসেও ৫-৭ বার পাতলা পায়খানা হয়েছে। তবে ডাক্তার চিকিৎসা দেওয়ার পর অনেকটাই সুস্থ। 

তবে ঠিক কী কারণে তার স্বামী ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন বুঝতে পারছেন না তিনি।

জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার আসমান খালি গ্রামের ডায়েরিয়ার রোগী আমির আলী জানায়, শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কতবার পায়খানা হয়েছে হিসাব নেই। কিছুক্ষণ পর পরই টয়লেটের চাপ হচ্ছে। শুনেছি ডেঙ্গু হলে পাতলা পায়খানা, বমি ও মাথা ব্যথা হয়। তাই আতঙ্কিত হয়ে হাসপাতালে চলে আসি।

চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. পরিতোষ কুমার ঘোষ জানান, অতিরিক্ত পাতলা পায়খানা ও বমি অবস্থায় রোগীরা হাসপাতালে আসতে থাকেন। শুক্রবার থেকে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীরা হাসপাতালে আসছে। একজনের চিকিৎসা দিতে না দিতেই আরও কয়েকজন আসতে থাকে। রোগীর চাপে তারা হিমশিম খাচ্ছেন। তবে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।

হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক মেডিকেল অফিসার ডা. শামিম কবির জানান, গত ৭২ ঘণ্টায় ১৩৫ জন ভর্তি হয়েছে। তাদের মধ্যে ৭০ জন পুরুষ, ৭৯ জন নারী ও একজন শিশু। আক্রান্তদের মধ্যে ৫-৬ জনের ডেঙ্গুর পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে। বাকিরা স্বাভাবিক ডায়েরিয়ার রোগী বলেই মনে হচ্ছে। 

তিনি আরও বলেন, আক্রান্তদের খাবার ও ফ্লুইড স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালে পর্যাপ্ত স্যালাইন মজুদ আছে। ওয়ার্ডে সিট না থাকায় যেখানে ফাঁকা জায়গা আছে সেখানে রেখে রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। অস্বাভাবিক হারে রোগটি ছড়িয়ে পড়ায় ঘটনাটি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক ব্যাধি বিভাগকে জানানো হয়েছে। 

এনএস/