৩ শিশুর মৃত্যু, কী ছিল ইমামের কক্ষে?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৮ পিএম, ৩০ আগস্ট ২০১৯ শুক্রবার
চাঁদপুরের মতলব পৌরসভার পূর্ব কলাদী জামে মসজিদের ইমামের কক্ষ থেকে তিন শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে ইমামের সন্তানও রয়েছে। তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এখন সবার মনে প্রশ্ন কী ছিল ইমামের কক্ষে?
স্থানীয় অনেকে বলছেন, পানি মনে করে এসিড পান করেই তিন শিশুর মৃত্যু হতে পারে। আবার অনেকে বলছেন, কোনো খাবারের বিষক্রিয়ায় এমনটা ঘটতে পারে।
চাঁদপুরের পুলিশ সুপার জিহাদুল করিম পিপিএম বলেন, এখনো কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি। ফুড পয়জনিং বা অন্য কোনো কারণে মৃত্যু হতে পারে। তদন্ত কার্যক্রম চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের পর কারণ জানা যেতে পারে। যেহেতু ভেতর থেকে দরজা আটকানো ছিল, তাই কাউকে দোষারপ করা যাচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, রুমের ভেতরে গ্যাস জাতীয় বিষাক্ত কিছুর গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। এ বিষয়ে তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হবে।
এ ব্যাপারে মতলব উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. একেএম মাহাবুর রহমান বলেন, মৃত তিন শিশুর মুখ থেকে শুধু ফেনা বের হচ্ছিল। ফুড পয়জিনিং বা অন্য কোন কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে এখনই বলতে পারছি না।
মতলব দক্ষিণ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) স্বপন কুমার আইচ বলেন, ‘ঘটনাস্থল ও কক্ষটি পর্যবেক্ষণ করেছি। বিষয়টি তদন্তাধীন। এ মুহূর্তে কিছুই বলা যাচ্ছে না।’
জানা যায়, দুপুরে মসজিদের ইমাম তার ছেলে আব্দুল্লাহ আল নোমানকে (৫) রেখে নামাজ পড়াতে যান। ওই শিশু সন্তানের সঙ্গে আরও দুইজন রিফাত হোসেন (১২) ও ইব্রাহিম খলিল (১৫) নামে দুইজন শিশু-কিশোর প্রবেশ করে ইমামের রুমে।
নামাজ শেষে ইমাম নিজের রুমের দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখতে পান। অনেক ডাকাডাকির পর দরজা না খোলায় মুসল্লি শাহীন সরকার, সাইফুল, সুমন মোস্তফাসহ একাধিক ব্যক্তি দরজা ভেঙে ইমাম ও মুসুল্লিদের উপস্থিতিতে কক্ষে প্রবেশ করেন এবং দেখেন তিন শিশু-কিশোর অচেতন অবস্থায় পড়ে আছে। এদের দু’জন ঘটনাস্থলে মারা গেছে । একজনকে মতলব হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে।
মসজিদের ইমাম জামাল উদ্দিন বলেন, জুমার নামাজের আগে বেলা পৌনে ১টার দিকে আমি বয়ান ও খুদবার জন্য মীমবরের দিকে যাই। নামাজ পড়ানো শেষে মসজিদে মিলাদ পড়িয়ে নিজের রুমে ফিরে আসি। ওই সময় আমার রুমের দরজা ভেতর থেকে আটকানো দেখে অনেক ধাক্কা-ধাক্কি করি। পরে মুসল্লিদের সহায়তায় দরজা ভেঙে দেখি আমার ছেলেসহ অপর দুই শিশু-কিশোর অচেতন হয়ে বিছানায় পড়ে আছে।