‘বিএনপির আদর্শ ধারণ করে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০১:৩৪ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০২:৫৯ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ রোববার। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর দলটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার চার দশক পর এবার গভীর সংকটে দলটি।
সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বিএনপি নিজেকে দাঁড় করাতে হিমসিম খাচ্ছে। উপরন্তু দলের ভেতরে বিভেদের কারণে গোদের ওপর বিষঁফোড়ার মত চির ধরেছে বহুধারায়। ভরপুর মামলা-মোকাদ্দমা মাথায় নিয়ে নেতা-কর্মীরা অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন।
দল ও নিজেদের বিধ্বস্ত জীবন নিয়ে টানা পোঁড়েনের মাঝে হুশ ছিলনা এতদিন দল বাঁচাবেন না নিজে বাঁচবেন। একটানা প্রায় একযুগ ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে নানামূখী সংকটে নিপাতিত বিএনপি প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আবারও ঘুরে দাঁড়াবার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে এমনটিই দাবি করেছেন দলের একাধিক নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির পথ চলার শুরু থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক ও পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম।
সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি- সিনজাত রহমান সানি।
একুশে টেভি অনলাইন : বিএনপি ও বাংলাদেশের বর্তমান রাজনীতির পরিবেশ কিভাবে দেখছেন?
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল হচ্ছে একটি বিশাল কন্সেপ্ট। এই কন্সেপ্টের আলোকে দেশটা পরিচালিত হবে এটিই স্বাভাবিক। সব ভাষাভাষী, সব দলের, সব মতের, সব বর্ণের, সব ধর্মের, সবাই আমরা বাংলাদেশী। সেখানে সবাইকে একটি মঞ্চে নিয়ে আসতে পারাটা বিশাল কিছু। সেই অবস্থায় সেপ্টেম্বরের ১ তারিখ বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দীর্ঘ ৪১ বছর পার হয়ে গেল। সেখানে রাজনীতি করতে গেলে রাজনীতি করার সময় সবাই একটা দেশ সেবার ব্রত নিয়ে কাজ করে। কাজ করতে গেলে দলের ভিতরে অবশ্যই কিছু না কিছু চাওয়া পাওয়া থাকে। আদর্শ এক থাকলেও মতের অনৈক্য থাকতেই পারে। আদর্শ ঠিক রেখে ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা ভাবনা থাকতেই পারে। এই সমস্যাটা আসলে মূল সমস্যা না।
বিএনপির ভিতরের কোন্দল যদি কেউ বলতে চায় তবে আমি বলবো সে কোন্দল কোনো কোন্দলই না। এটি কিছু না। বর্তমান বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী দলের যে অবস্থা সেটি হল আকাশচুম্বী সমর্থন। এই সমর্থন আকাশচুম্বী হওয়ার পরও আজকে কেন বিএনপি কোনো বড় আন্দোলন করতে পারছে না এটা একটা প্রশ্ন থেকে যায়। এই জায়গা থেকে আমি যেটা বলব বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে এই পর্যন্ত যা কিছু ঘটেছে সেটা বাংলাদেশের জনগণ বিএনপিকে ভালোবাসে বলেই বিএনপি এ পর্যন্ত আসছে।
একুশে টিভি অনলাইন: এ ক্ষেত্রে বিএনপি কি মনে করে যে একক ভাবে ক্ষমতায় যাওয়া সম্ভব নয়?
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : জিয়াউর রহমান-খালেদা জিয়া সব সময় একোমোডেটিভ ছিলেন। সবাইকে নিয়ে কাজ করতে পছন্দ করেন। আমিত্ব ব্যাপারটা নাই। জোটবদ্ধভাবে কাজ করেন। জিয়াউর রহমান উনি দেশের ট্যালেন্ট লোকগুলোকে খুঁজে খুঁজে বের করেছেন ভিন্নমতের লোকগুলোকে তিনি বঙ্গভবনে দাওয়াত দিয়ে ডেকে পরামর্শ চেয়েছেন। যেটি উদার চিন্তাভাবনা। বিএনপি উদার দল হিসেবে পরিচিত। বেগম খালেদা জিয়াও এই আদর্শে বিশ্বাসী। যে কারণে উনি চাচ্ছেন দেশের ক্রাইসিস মোমেন্টে আমি একা কেন? দেশের সবাইকে নিয়ে কাজ করবো। সেটাই হলো মূল কথা।
একুশে টিভি অনলাইন : প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে আপনি কি বার্তা দিবেন?
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : এই মুহূর্তে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। বিএনপির আদর্শ ধারণ করে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করতে হবে। দল যখন আন্দোলনের ডাক দিবে আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন নামতে হবে। আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই।
একুশে টিভি অনলাইন : ৪১ বছরের পথ চলাটা কিভাবে দেখছেন?
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : ৪১ বছরের পথ চলা সব সময় সাংগঠনিক হবে না এটিই স্বাভাবিক। আমি যেটি বলব আমরা যে কাঠামোগুলো ভোগ করতেছি এর মূল ভিত্তিই জিয়াউর রহমানের সময় করা এবং মন্ত্রণালয়গুলো করা। আশা করি এটি ঠিক হয়ে যাবে, এটি থাকবে না। সাহস সঞ্চার করে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনের মাধ্যমে বিএনপি এগিয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
একুশে টিভি অনলাইন: খালেদা জিয়ার মুক্তিতে বিএনপি কতটুকু ভূমিকা পালন করছে?
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : বিএনপি তার অবস্থান থেকে চেষ্টা করছে। এখানে দু-তিনটা ইস্যু কাজ করে। ম্যাডাম খালেদা জিয়ার মুক্তি যদি শুধুমাত্র আদালত নির্ভর হতো তাহলে হয়ত বলতাম আদালতের ব্যাপার হয়ে যাবে। আসলে আদালতের ব্যাপার না। এটি রাজনৈতিক ব্যাপার। আরও যদি স্পেসিকভাবে বলি একমাত্র শেখ হাসিনার উপর নির্ভর করে।
একুশে টিভি অনলাইন : স্বাধীনতা বিরোধীসহ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকান্ডে সহযোগিতাকারী লোকজনকে বিএনপি প্রশ্রয় দিয়েছে?
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : আওয়ামী লীগের সাথে তও শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকারীরাও আছে। স্বাধীনতাবিরোধী তারা কাকে বলছে? একসময় উনারাও তো জামায়াতকে নিয়ে কাজ করেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ জামায়াতকে নিয়ে কাজ করেছে ক্ষমতায় যাওয়ার আগে। গোলাম আজমের কাছ থেকে দোয়া নিয়েছে। আজ আওয়ামী লীগের পক্ষে যায় নাই বলেই বলছে বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে কাজ করছে।
একুশে টিভি অনলাইন : অপনাকে ধন্যবাদ।
ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম : আপনাকে এবং একুশে টিভিকেও ধন্যবাদ।