‘গত নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ অপরিহার্য ছিল’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:৫০ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০২:৫১ পিএম, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪১তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী আজ রোববার। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর দলটির যাত্রা শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার চার দশক পর এবার গভীর সংকটে দলটি।
সাংগঠনিকভাবে দুর্বল বিএনপি নিজেকে দাঁড় করাতে হিমসিম খাচ্ছে। উপরন্তু দলের ভেতরে বিভেদের কারণে গোদের ওপর বিষঁফোড়ার মত চির ধরেছে বহুধারায়। ভরপুর মামলা-মোকাদ্দমা মাথায় নিয়ে নেতা-কর্মীরা অনিশ্চিত জীবনযাপন করছেন।
দল ও নিজেদের বিধ্বস্ত জীবন নিয়ে টানা পোঁড়েনের মাঝে হুশ ছিল না এতদিন দল বাঁচাবেন না নিজে বাঁচবেন। একটানা প্রায় একযুগ ক্ষমতার বাইরে থাকার কারণে নানামূখী সংকটে নিপাতিত বিএনপি প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে আবারও ঘুরে দাঁড়াবার প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে বলে এমনটিই দাবি করেছেন দলের একাধিক নেতা-কর্মীরা।
বিএনপির পথ চলার শুরু থেকে বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের যুগ্ম-আহ্বায়ক, সিনেট সদস্য ও পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো: লুৎফর রহমান।
তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন একুশে টেলিভিশন অনলাইনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি- সিনজাত রহমান সানি।
একুশে টিভি অনলাইন : কোন পথে হাটছে বিএনপি?
মো: লুৎফর রহমান : ২০০৯ সালের পর থেকে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের সাথে গণতান্ত্রিক আচরণ করেনি। রাজনীতি করার জন্য যতটুকু সুযোগ দেওয়ার দরকার ছিল আওয়ামী লীগ সরকার তা আমাদের দেয়নি। যে কারণে আমাদের রাজনীতি মুখ থুপড়ে পড়ছে, তারা আমাদের রাজনৈতিক কর্মকান্ডে প্রতিনিয়ত বাধা প্রদান করে আসছে যে কারণে বিএনপি শক্তিশালী না হয়ে বরং নেতা-কর্মীর সংখ্যা কমেছে। এখন বিএনপির কাছে ক্ষমতায় যাওয়ার চেয়েও বড় আন্দোলন নেত্রীকে জেল থেকে বের করা।
একুশে টিভি অনলাইন : গত নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা কতটুকু যুক্তিযুক্ত ছিল?
মো: লুৎফর রহমান : আমার মতে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করাটা ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিএনপি অংশগগ্রহণ না করলে জনগণের কাছ থেকে ছিটকে পরত। ক্ষমতায় যাওয়া বা টিকে থাকার জন্য নির্বাচন হচ্ছে পূর্বশত। বিএনপি সব দলের উপস্থিতিতে একটি স্বচ্ছ নির্বাচন আশা করেছিল, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার তা করতে ব্যর্থ হয়েছে। স্বচ্ছ নির্বাচন হলে ফলাফল ভিন্ন হতো।
একুশে টিভি অনলাইন : শপথ গ্রহণ নিয়ে দ্বিমুখী সিন্ধান্তের বিষয়টি আপনি কিভাবে দেখছেন?
মো: লুৎফর রহমান : আমার মতে প্রথমেই শপথ গ্রহণ করাটা উচিত ছিল, তাহলে প্রথম থেকেই আমাদের যতটুকু শক্তি আছে তা দিয়ে সংসদে কথা বলার সুযোগ তৈরি হতো। এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেই নির্বাচন প্রত্যাখান করতে পারত। খালেদা জিয়া, তারেক জিয়ার নির্দশেই বর্তমান সংসদ সদস্যরা সংসদে বিএনপি ও দেশের মানুষের জন্য কথা বলার জন্য গিয়েছে। দলের স্বার্থেই এমন সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ।
একুশে টেভি অনলাইন : বিএনপির ভবিষ্যৎ কী হবে?
মো: লুৎফর রহমান : দলের গঠন অনুযায়ী দলের হাল কেউ না কেউ ধরবে। সব দলের মধ্যে ব্যক্তিগত সমস্যা থাকে, তবে আর্দশের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। বাংলার মানুষ বিএনপিকে ক্ষমতায় চায়। দেশের মানুষ যখনই সুযোগ পাবে গণতান্ত্রিক ভাবে ভোটের মাধ্যমে বিএনপি আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসবে এটা আমার বিশ্বাস। আওয়ামী লীগ ৭৫’ পরে ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসেছে, আমি বিশ্বাস করি বিএনপি আবারও জনগণের ভোটে ক্ষমতায় আসবে।
একুশে টিভি অনলাইন : সংরিক্ষত আসনের এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারাহানার প্লটের আবেদন করাটা আপনি কিভাবে দেখছেন?
মো: লুৎফর রহমান : সংসদ সদসরা যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকেন সে হিসাবে তিনি তার অধিকার থেকে আবেদন করতেই পারেন। তবে আবেদনটির ভাষা আরোও সুন্দর হতে পারত, তিনি যেভাবে আবেদন করেছেন তা আমাদের কাছে ও সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি।যেমন তিনি ওখানে ’চিরকৃতজ্ঞ’ কথাটি ব্যরহার করেছেন যা উচিত হয়নি, প্রয়োজনে তিনি দলের নীতি-নীর্ধারনি পর্যায়ের নেতাদের সাথে কথা বলে দরখাস্ত করতে পারতেন।
একুশে টিভি অনলাইন : ২১ আগস্ট বোমা হামলার বিচার না করা কতটুকু দায় এড়াতে পারে দলটি?
মো: লুৎফর রহমান : তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল হিসাবে বিএনপি এর দায় ভার এড়াতে পারে না। বিচারের ক্ষেএে আরোও কঠোর ভূমিকা পালন করতে পারত।
একুশে টিভি অনলাইন : অপনাকে ধন্যবাদ।
মো: লুৎফর রহমান : আপনাকে এবং একুশে টিভিকেও ধন্যবাদ।