জাবির উন্নয়ন প্রকল্পকে ঘিরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৩০ পিএম, ২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্পের টাকা ভাগ-বাটোয়ারা ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে।এরই প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে মিথ্যাচার দাবি করে মানববন্ধন করেছে ভিসিপন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।এদিকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পূর্ব ঘোষণার অংশ হিসেবে আগামীকাল প্রশাসনিক ভবন অবরোধ অবরোধ করবে বলে ঘোষণা করেছেন।
অবরোধের সমর্থনে সোমবার দুপুর একটার দিকে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে দর্শন বিভাগের অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন,উপাচার্য তার অনুগত শিক্ষক ও কর্মচারীদের দিয়ে বলাচ্ছেন যে লুটপাট ও টাকা ভাগাভাগির বিষয়টি মিথ্যা ও উদ্দেশ্যমূলক। কিন্তু তারা একবারও বলছেন না যে এ দাবির জন্য তদন্ত করা হোক। তিনি যদি অভিযুক্ত নাই হয়ে থাকেন তবে তদন্তের মুখোমুখি হতে তার সমস্যা কোথায়?তাদের এসবের কিছুই দরকার নেই। তাদের দরকার টাকা।যাতে তারা ভাগাভাগি করতে পারেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, প্রশাসনকে যখন বলা হল এটা অপরিকল্পনা, অস্বচ্ছ, দুর্নীতি হয়েছে, তখন থেকেই তারা বলছেন আমরা উন্নয়ন বিরোধী, কুচক্রিমহল। এ ধরনের কথা শিক্ষার্থীদের আর বিমোহিত করবে না। আমরা রাজপথে ছিলাম না। বারবার বলেছি আমাদের প্রস্তাব মেনে নিন। কিন্তু তারা একটি যৌক্তিক উত্তরও দিতে পারেনি। তাই আপনাদের কথার কোন নৈতিক ভিত্তি নেই।
সমাবেশে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের কার্যকরী সদস্য মিখা পিরেগু, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাংগঠনিক সম্পাদক শোভন রহমান, ছাত্রফ্রন্ট সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ, সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহবায়ক আরিফুল ইসলাম প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, উপাচার্য ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগকে মিথ্যাচার দাবি পৃথক মানববন্ধন করেন প্রশাসনপন্থী শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গতকাল সকাল সাড়ে দশটা মানববন্ধন করে ভিসিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’। একই সময় পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে ‘কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্যপরিষদ’ ব্যানারে মানববন্ধন করেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
মানববন্ধনে পরিসংখ্যান বিভাগের অধ্যাপক আলমগীর কবিরের সঞ্চলনায় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজিত কুমার মজুমদার বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন আমাদের সবার কাম্য। উন্নয়ন করতে হলে কিছু গাছ কাটতেই হবে। এখন এর বিরুদ্ধে যে আন্দোলন করা হচ্ছে তা স্পষ্ট এই উন্নয়ন কাজে বাঁধা সৃষ্টির জন্য। তদন্ত এবং স্পষ্ট প্রমাণ ছাড়া কেউ কারো বিরুদ্ধে দোষারোপ করতে পারেন না। তাই উপাচার্যের বিরুদ্ধে দোষারোপ বন্ধ করুন।
‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’র সভাপতি অধ্যাপক আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, এই উন্নয়ন কেউ থামিয়ে রাখতে পারবেনা। পদ্মা সেতু উন্নয়নে কুচক্রীমহল বিতর্কের সৃষ্টি করেছিল। কিন্তু উন্নয়ন হচ্ছে। এখন জাহাঙ্গীরনগরেও তা করা হচ্ছে। কিন্তু এই উন্নয়নও কেউ থামিয়ে রাখতে পারবে না।
মানববন্ধনে অধ্যাপক লায়েক সাজ্জাদ এন্দেল্লাহ, অধ্যাপক হানিফ আলী, অধ্যাপক এ.এ. মামুন, অধ্যাপক মো. ফরহাদ হোসেন, অধ্যাপক এ.টি এম আতিকুর রহমান, অধ্যাপক বশির আহমেদ, অধ্যাপক মজিবুর রহমান, অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেআই/