ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

৭০ বছর পর হাতে পেলেন যৌবনের প্রেমপত্র

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:২৫ এএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার

ব্রিটিশ দম্পতি বব বিয়াসলি-নরমা হল তাদের যৌবনের প্রেমপত্র পুনরায় হাতে পেয়েছেন প্রায় ৭০ বছর পর। তাদের এই প্রেমপত্রগুলো ১৯৪৮ এবং ১৯৪৯ সালের মাঝামাঝি লেখা। সে সময় বব বিয়াসলি ছিলেন সৈনিক, কাজের জন্য ছিলেন দেশের বাহিরে আর তখন নরমা থাকতেন মা-বাবার সঙ্গে কেন্টে।

এই প্রেমপত্রগুলো যার হাতে পড়ে সেই কিম বলেন, আমার মা ২০ বছর আগে যখন আলদেরশটে থাকতেন তখন তার এক প্রতিবেশী চিলেকোঠার ঘরে এই চিঠিগুলো পান এবং ফেলে দিতে চান। তখন আমার মা সেগুলো দেখতে পেয়ে আবিষ্কার করেন সেগুলো প্রেমপত্র। তাই তিনি সেগুলো যত্ন করে রেখে দিলেন।

কিমের মা চেরি যখন বাসা বদল করেন সমারসেটে যান তখন সেই চিঠিগুলো সঙ্গে নিয়ে যান। কিন্তু তিনি ২০১৬ সালে মারা যান। ওই বছর আবার যখন চিঠিগুলো কিমের দৃষ্টিগোচর হয় তখন তিনি ভাবলেন এই চিঠির মালিকের কাছে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর সেটা করতে দেরি করলেন না।

কিম একটি চিটির খাম ফেসবুকে পোষ্ট করলেন। আর বন্ধুদের উদ্দেশ্যে লেখেন ‘আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন বব সেনাবাহিনীতে কাজ করতো আর নরমা কেন্টে থাকতো। পোস্টমার্কে ১৯৪৮ এবং ১৯৪৯ সালের কথা উল্লেখ আছে। দয়া করে আপনাদের যা করার আছে সেটা করুন’।

কিন্তু তার এই আহবানটি দ্রুত সারা ফেলে দেয়। যা ১১ হাজার বার শেয়ার হয়েছে এবং ১৫০০ জন কমেন্ট করেছে। এর সঙ্গে একদল 'পত্রবন্ধু' জুটে গেল। একজন বন্ধু ফেসবুকে লিখে জানালো, তিনি খোঁজ নিয়ে জেনেছেন এই দম্পতি ১৯৫১ সালে আক্সব্রিজে বিয়ে করেছেন। ওই ঠিকানায় একটা চিঠিও পাঠালেন।

নরমা যখন কিমের কাছ থেকে চিঠি পেলেন তখন অত্যন্ত বিমর্ষ হয়ে পরলেন। কারণ তার কয়েক মাস আগেই অর্থাৎ ২০১৮ এর ডিসেম্বরে বব মারা গেছেন। তিনি দ্রুত কিমকে উত্তর দিলেন চিঠিগুলো পাঠিয়ে দেয়ার জন্য এবং অবাক হলেন যে সেগুলো এখনো সেই আগের জুতার বক্সের মধ্যেই আছে।

১৯৪০ এর দশকে নরমা বিয়েসলি যখন ববের সঙ্গে সাক্ষাত করেন তখন তিনি ছিলেন ১৮ বছরের এক নারী। তারা বন্ধু ছিলেন পরে তাদের সম্পর্ক এক দীর্ঘস্থায়ী রোমান্টিক সম্পর্কে গড়ায়। নরমার বয়স এখন ৮৮।

নরমা বলেন, বব মধ্যপ্রাচ্য এবং মিশর থেকে ফিরে আসার পরেই আমরা বিয়ে করি এবং ১৯৫১ সালে বাকিংহ্যামশায়ারে এক গ্রামে চলে যাই। বব তখন কাঠ মিস্ত্রির কাজ করতেন আর আমি একটা অফিসে কাজ শুরু করি। বর্তমানে আমাদের ৫ সন্তান এবং ৬ জন নাতি-নাতনী রয়েছে।

তিনি তাদের পুরনো দিনের কথা স্মরণ করে বলেন, ‘আমরা প্রথমে একে অপরকে লেখা শুরু করলাম শুধু বন্ধু হিসেবে। তারপর এটা বন্ধুর চেয়ে বেশি কিছু হয়ে গেল। সে তার জীবন সম্পর্কে বলতো আর আমি বলতাম বাড়িতে কি কি হয়েছে। আমি চিঠি লিখতে পছন্দ করতাম না, তারপরও প্রতি সপ্তাহে আমি তাকে একটা চিঠি লিখতাম এবং একটা ম্যাগাজিন পাঠাতাম।’

যাই হোক চিঠিগুলো পেয়ে তিনি খুশি হয়েছেন কিন্তু যেহেতু বব বেঁচে নেই তাই তিনি চিঠির খামগুলো খুলতেও আজ আর সাহস পাচ্ছেন না। এ নিয়ে তিনি বলেন, ‘চিঠিগুলো আগের মতই রঙ্গিন কাগজে মোড়ানো আছে আমি যেমনটা করে পাঠাতাম। কিন্তু এখন আমি আর সেগুলো পড়তে পারবো না।’

সূত্র : বিবিসি
এএইচ/