‘চিরকুট ভিসি’ আখতারুজ্জামান-এর পদত্যাগ দাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:০২ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামানকে ‘চিরকুট ভিসি’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে তার পদত্যাদ দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। রোববার একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পরীক্ষা ছাড়াই ভর্তি হয়ে ডাকসু নেতা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বিকেলে এ দাবি জানান তারা।
একইসঙ্গে গত মার্চে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনের তফসিলের পরপর অনুষদটির একটি বিভাগের সান্ধ্যকালীন প্রোগ্রামে ছাত্রলীগের ৩৪ জন সাবেক ও বর্তমান নেতাকে অবৈধভাবে ভর্তির সুযোগ দেয়ায় ভিসি ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলামের পদত্যাগ দাবি করেছেন তারা।
এদিন বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাস বিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করে এ পদত্যাগ দাবি করেন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতা-কর্মীরা। এতে উপস্থিত ছিলেন সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী।
জাতীয় দৈনিকটির অনুসন্ধান বলছে, ডাকসুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আরিফ ইবনে আলী, স্বাধীনতা সংগ্রাম ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর এবং সদস্য রাকিবুল হাসান, নজরুল ইসলাম, মুহা. মাহমুদুল হাসান ও নিপু ইসলাম ডাকসুর তফসিল ঘোষণার পর উপাচার্য ও সংশ্লিষ্ট অনুষদের ডিনের চিরকুটে পরীক্ষা ছাড়াই ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলেন। স্যার এ এফ রহমান হল সংসদের ভিপি আবদুল আলিম খানও একই প্রক্রিয়ায় ওই প্রোগ্রামে ভর্তি হয়েছিলেন।
সমাবেশে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ‘পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। কিন্তু ডাকসু নির্বাচনের আগে একটি নির্দিষ্ট ছাত্রসংগঠনের ৩৪ জনকে চিরকুটের মাধ্যমে ভর্তির সুযোগ দিয়েছেন উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম। এভাবে ভর্তির সুযোগ দিয়ে তারা নৈতিকভাবে স্খলিত হয়েছেন। আমরা উপাচার্যের পদত্যাগ ও ডিনের অপসারণ দাবি করছি। একইসঙ্গে অবৈধভাবে ভর্তি হয়ে ডাকসু ও হল সংসদে নির্বাচিতদের পদ শূন্য ঘোষণা করে পদগুলোতে পুনর্নির্বাচন দাবি করছি।’
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সালমান সিদ্দিকী বলেন, ‘গত মার্চে ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ছাত্রলীগকে শুধু ভোটচুরির মাধ্যমে জেতানোই হয়নি, কারচুপি করে তাদের ছাত্র করা হয়েছে। পরীক্ষা না নিয়েই তাদের ভর্তি করা হয়েছে। চিরকুট নয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয় পরীক্ষার মাধ্যমে। এই কারচুপির মাধ্যমে ছাত্র-শিক্ষক সম্পর্ককে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে, উপাচার্য ও ডিনের নৈতিক স্খলন ঘটছে। তাই অবিলম্বে উপাচার্য ও ডিনকে পদত্যাগ করতে হবে। পুনর্নির্বাচন না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে।’
স্যার এ এফ রহমান হল সংসদ নির্বাচনে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে সহসভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী ছিলেন লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী বিন ইয়ামিন মোল্লা। সমাবেশে তিনি বলেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী অবৈধ চিরকুটের মাধ্যমে ছাত্র হয়েছিলেন। এই অবৈধ ছাত্রত্ব আমরা মানি না। উপাচার্য ও ডিন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্যের সঙ্গে প্রতারণা করেছেন। আমরা এই নৈতিকতাহীন ব্যক্তিদের পদত্যাগ দাবি করছি।’
সমাবেশে অন্যদের মধ্যে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের প্যানেল থেকে ডাকসুর সাহিত্য সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী শিক্ষার্থী আকরাম হুসাইন, সংস্কৃতি সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী নাহিদ ইসলাম, মাস্টারদা সূর্য সেন হল সংসদে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী মশিউর রহমান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এনএস/