ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

চীনা ঋণে সতর্ক থাকার পরামর্শ সিপিডির

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৮:২৭ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার

বিভিন্ন প্রকল্পে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক থেকে ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যেন চীনা ঋণের ফাঁদে না পড়ে, সে জন্য সতর্ক থাকতে হবে।

রোববার (৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর একটি হোটেলে  সিপিডি আয়োজিত ‘বেল্ট অ্যান্ড রোড: তুলনামূলক অবস্থান থেকে বাংলাদেশের অবস্থান’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সংলাপে তিনি এসব কথা বলেন।

ফাহমিদা খাতুন বলেন, ‘চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ (বিআরআই) বাণিজ্য সুবিধা পাবে বাংলাদেশ। চীনের ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড কার্যক্রম সম্প্রসারিত হলে বাংলাদেশের লাভবান হওয়ার সুযোগ রয়েছে। তবে বেল্টের সুযোগ-সুবিধার সবক্ষেত্রেই আরও বেশি দরকষাকষি করতেও সরকারকে তিনি পরামর্শ দেন।

মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে ফাহমিদা খাতুন বলেন, বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের মাধ্যমে আমাদের যে প্রস্তাবগুলো দেওয়া আছে, আমরা তা নেবো। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে, এই অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বিনিয়োগের শর্তগুলোর দিকে। দক্ষতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে টেন্ডার থেকে শুরু করে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ রাখতে হবে, বিআরআই যে ঋণ দিচ্ছে, সেই ঋণে সুদের হার যেন কম হয়। আমরা কেন ৩ শতাংশ সুদ দেবো? সুদ যেন এক শতাংশের নিচে হয়। আমরা যেন ঋণের ফাঁদে না পড়ি। আমাদের প্রধান উদ্দেশ্য হতে হবে রাজনীতির বাইরে গিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা।

সংলাপে সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, চীন বর্তমানে বিশ্ববাণিজ্যের নেতৃত্বে আছে। এর সঙ্গে অন্য দেশের সমন্বয় করে চলতে হবে। এটি এখন বিশ্ব অর্থনীতির নতুন ব্যবস্থা। এটি যেন উপনিবেশবাদের মতো না হয়, এটি যেন অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে হয়। এতে দক্ষিণ-দক্ষিণ সহযোগিতার সুযোগ আরও বাড়বে। তিনি বলেন, বিআরআইয়ের প্রকল্প বাস্তবায়নে অন্যদেশের সঙ্গে যেন দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক নষ্ট না হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্রসচিব এম শহীদুল হক বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাণিজ্যে ইন্দো-প্যাসিফিক, ইউরো-এশিয়া ও বিআরআই উদ্যোগ আছে। আমরা সব উদ্যোগের সঙ্গে যাবো। কোনও ক্ষতিকর কিছুর সঙ্গে থাকব না। যখন আমরা এসব নিয়ে দর কষাকষি করবো, তখন জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দেবো।’ তিনি  বলেন, ‘চীনের বিআরআই-এ যোগ দেওয়ার মাধ্যমে আমরা লাভবান হবো বলে আশা করি। এ উদ্যোগে যোগ দেওয়ায় বাংলাদেশের অর্থনীতি, ব্যবসা, বাণিজ্য, যোগাযোগসহ নানা বিষয়ে সহযোগিতা বাড়বে।

সংলাপে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মঞ্জুর এলাহী বলেন, আমরা বাজার চাই, এটা সত্য। কিন্তু সবকিছু যাচাই-বাছাই করে নেওয়া উচিত।

সংলাপে আরও উপস্থিত ছিলেন শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ হুমায়ুন, সিপিডির ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, চীনে নবনিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব উজ জামান, চীনের ইউনান অ্যাকাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সের ইনস্টিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক চেং মিন, ভারতের রির্সাচ অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম ফর ডেভেলপিং কান্ট্রিসের মহাপরিচালক ড. শচীন চতুর্বেদী, সিপিডির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য সৈয়দ মঞ্জুর ইলাহী।

আরকে//