ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৯ ১৪৩১

বাদ পড়াদের দিয়েই তৈরি হচ্ছে আসামে দীর্ঘ কারাগার

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১০:৫৩ পিএম, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার

নিজেদের জন্য নিজেরাই কারাগার তৈরি করছেন আসামে কথিত অবৈধ অভিবাসীরা। এনআরসি থেকে যারা বাদ পড়েছেন তাদের একটি বড় অংশই এ কাজে নিয়োজিত। নিজেদের জন্যই তারা আটক কেন্দ্র বানাচ্ছেন। তবুও তাদের উপায় নেই। জীবিকার স্বার্থে এই কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স-এর এক অনুসন্ধানে এই তথ্য উঠে এসেছে।

রয়টার্স প্রতিবেদনে তুলে ধরে, এ কারাগারের আশপাশে স্কুল, হাসপাতাল, বিনোদনের স্থান, নিরাপত্তারক্ষীদের বাসভবনের পাশাপাশি উঁচু সীমানা দেয়াল এবং ওয়াচ টাওয়ার থাকবে। ক্যাম্পগুলো নির্মাণের সঙ্গে জড়িত শ্রমিক ও ঠিকাদারদের সঙ্গে কথা বলে এবং ক্যাম্পগুলোর লেআউট পর্যবেক্ষণ করে এসব তথ্য জানতে সক্ষম হয়েছে রয়টার্স। 

ক্যাম্প নির্মাণে জড়িত শ্রমিকদের অনেকেই জানান, আসামে অবৈধ অধিবাসী চিহ্নিত করতে গত সপ্তাহে যে চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তাদের নাম নেই। তারা জানেন, ডিটেনশন ক্যাম্পগুলোতে শেষ পর্যন্ত তাদেরও স্থান হতে পারে। তবুও কাজ না করে উপায় নেই তাদের।

শেফালি হাজং নামের একজন শ্রমিক। কারাগারের কাছাকাছি একটি গ্রামে তার বাড়ি। হাড্ডি-চর্মসার এ আদিবাসী নারীরও নাম ওঠেনি চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জিতে। আরও প্রায় ২০ লাখ মানুষের মতোই তাকে এখন জন্মসনদ কিংবা জমির মালিকানা সনদের মত নাগরিকত্বের প্রমাণ স্বরূপ কাগজপত্র দাখিল করতে হবে; ব্যর্থ হলে নিজের হাতে বানানো ক্যাম্পগুলোর মতো কোনও একটি ক্যাম্পে বন্দি হতে পারেন তিনি।

চিন্তিত শেফালি হাজং বলেন, ‘আমার তো পেট চালাতে হবে’। অন্যান্য শ্রমিকদের মতো তিনিও ক্যাম্প বানানোর কাজে প্রতিদিন প্রায় চার ডলারের কাছাকাছি আয় করেন; তুলনামূলক দরিদ্র এলাকা হওয়ায় এ আয়কেই যথেষ্ট মনে করছেন অধিকাংশ শ্রমিক।  

তবে শেফালি তার সঠিক জন্মসন বলতে পারেন না। তার ধারণা বয়স ২৬ এর কাছাকাছি। গত সপ্তাহে প্রকাশিত নাগরিকপঞ্জিতে কেন নাম নেই তাও বলতে পারছেন না তিনি। "আমাদের কোনো জন্মসনদ নেই," বলেছেন শেফালির মা মালতি হাজং। তিনি নিজেও ক্যাম্পটির নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন।

উল্লেখ্য গত ৩১ আগস্ট আসামের চূড়ান্ত নাগরিক তালিকা (এনআরসি) প্রকাশিত হয়। সেখানে ৩ কোটি ৩০ লাখ নাগরিকের মধ্যে বাদ পড়ে ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জন মানুষ। বাদ পড়া বাসিন্দারা ১২০ দিনের মধ্যে আপিলের সুযোগ পাবেন। তবে এই আপিলে নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে না পারলে তারা সেখানকার অবৈধ অভিবাসী বলে বিবেচিত হবেন। তখন তাদের প্রাথমিক জায়গা হবে এ কারাগারে।      

এসি