‘শিল্প বিপ্লবের জন্য নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে’
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:২৮ পিএম, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৪:৪৪ পিএম, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার
উচ্চশিক্ষার বিষয়ে ধারণা বর্তমানে আমূল বদলে যেতে শুরু করেছে। ‘জ্ঞান সৃষ্টি’র ধারাটি বর্তমানে নতুন মোড় নিচ্ছে। ‘কিভাবে শিক্ষা গ্রহণ পদ্ধতিকে উপযুক্ত করা যায়, যা যথাযথ ও কার্যকর জ্ঞান সৃষ্টি’র নিয়ামক’- নতুন এই ধারাটিই উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করছে। এক আন্তর্জাতিক সিম্পোজিয়ামে এসব কথা বলেন ড. ভিসতাসপ এম. কারভারী।
প্রথাগত ক্লাসরুমের বাইরে গিয়ে শিক্ষাদান, দীর্ঘস্থায়ী শিক্ষা ব্যবস্থা, শিক্ষার্থীদের উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ, শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের উন্নয়ন সাধন এবং সমাজের কাজ করা একটি ভালমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হওয়া উচিৎ।
একইসাথে ড. কারভারী জোর দেন, শিক্ষার্থীর শিক্ষাগ্রহণের দক্ষতার ওপর যেন তারা সঠিক ক্যারিয়ার বেছে নিতে পাওে, যেন সে বিশ্বকে সাহায্য করতে পারে, সমাজে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে, নেতৃত্ব দেয়ার গুণ লাভ করে এবং উদ্ভাবনী গবেষণায় নিয়োজিত থাকতে পারে যা চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য বর্তমান প্রজন্মকে যথাযথভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়।
ইন্ডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) আয়োজিত আন্তর্জাতিক সেমিনারে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস আর্লিংটন (ইউটিএ) এর প্রেসিডেন্ট ড. ভিসতাসপ এম. কারভারী এ সকল নতুন চিন্তার উন্মোচন করেন। সেপ্টেম্বর ৬, ২০১৯ তারিখে রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এর আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জনাব জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। আইসিটি বিভাগের তৈরি ‘বাংলাদেশ এগিয়ে চলো’ শিরোনামে একটি স্বল্প দৈর্ঘ্য ভিডিও প্রদর্শন করেন তিনি। প্রতিমন্ত্রী তার বক্তৃতায় ৩টি বিষয়ে প্রস্তাবনা করেন।
১) সরকারের আইসিটি, আইইউবি এবং ইউটিএ’র মধ্যে ত্রি-পক্ষীয় চুক্তি, ২) বড় পরিসরে অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন, এবং ৩) উচ্চশিক্ষা গ্রহণে বিদেশে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা যেন ফিরে এসে এদেশেই কাজে নিয়োজিত হতে পারে, সেরূপ কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি করা।
ইউটিএ’র ভাইস প্রোভোস্ট ড. প্রাণেস অশ্বথ, আইইউবি’র বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান জনাব এ মতিন চৌধুরী, আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মিলান পাগন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এ মতিন চৌধুরী নিত্য-নতুন বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ওপর জোর দেন। যেন সেই নতুন সুযোগ অন্যরা আগেই গ্রহণ করতে না পারে।
মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সহযোগিতা কেন অপরিহার্য তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন অধ্যাপক মিলান পাগন। তিনি বলেন, মানসম্পন্ন উচ্চশিক্ষার মূল লক্ষ্য হওয়া উচিৎ শিল্পের চাহিদা সম্পন্ন যোগ্য ব্যক্তি গড়ে তোলা যেন সে পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে গিয়ে যেকোন সমাজকে সহায়তা করতে পারে।
সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বক্তৃতা দেন ইউটিএ’র অ্যালামনাই মুস্তাক আহমেদ। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, আইইউবি’র ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্যগণ, দেশের প্রখ্যাত স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষবৃন্দ, শিক্ষক ও গবেষক, গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, আইইউবি’র ডিন, শিক্ষক ও উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সহ অন্যান্য অতিথি এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী।
ইউটিএ প্রতিনিধি দল আইইউবি-তে দুই দিনব্যাপি কর্মসূচির প্রথম দিনে ৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৯ তারিখে আইইউবি’র ট্রাস্টি বোর্ড এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। দ্বি-পাক্ষিক ওই বৈঠকে একটি নতুন শিক্ষা পদ্ধতি সহ ইউটিএ এবং আইইউবি’র সহযোগিতার মাধ্যমে দেশে এবং বিদেশে উচ্চশিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি নিয়ে বেশ কয়েকটি বিষয়ে একমত হন যেন সেগুলি চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণভাবে এগিয়ে যেতে সহায়ক হয়।
আইইউবি’র সম্মানিত ট্রাস্টিবৃন্দ, ইউটিএ’র প্রেসিডেন্ট ড. ভিসতাসপ এম. কারভারী, ইউটিএ’র ভাইস প্রোভোস্ট ড. প্রাণেস অশ্বথ, আইইউবি’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক মিলান পাগন, ডিন, সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় প্রধানরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
এরপর ইউটিএ প্রতিনিধি দল আইইউবি’র বিভিন্ন স্কুল, গবেষণাগার, লাইব্রেরি, সেন্টার সহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘুরে দেখেন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় ও তাদের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। আইইউবি বর্তমানে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কার্যকর ত্রি-পাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের আয়োজন করছে।
আরকে//