ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

যুক্তরাজ্যে পোস্ট স্টাডি ভিসা চালুর ঘোষণা

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৬:৩৪ পিএম, ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

যুক্তরাজ্যে বিদেশী শিক্ষার্থীদের জন্য পুনরায় দুই বছর থাকার নিয়ে চালু হতে যাচ্ছে। গ্রাজুয়েশন শেষ করে চাকরি খোঁজার জন্য তারা দুই বছর সময় পাবে।কয়েক বছর আগেও এ নিয়ম চালু ছিল পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক বা পিএসডব্লিউ ভিসা।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র দফতর এক নতুন ঘোষণায় জানিয়েছে, স্নাতক ডিগ্রি অর্জনের পর কর্মসংস্থানের জন্য দুই বছর যুক্তরাজ্যে থাকতে পারবেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা।২০১২ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেরেসা মে'র নেয়া সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেয়া হচ্ছে। থেরেসা মে নিয়ম করেছিলেন যে,স্নাতক ডিগ্রী অর্জনের পর বিদেশি শিক্ষার্থীরা চার মাসের বেশি ব্রিটেনে অবস্থান করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, নতুন পরিবর্তন শিক্ষার্থীদের নিজেদের সক্ষমতা বুঝতে এবং যুক্তরাজ্যে নিজেদের পেশা গড়ে নিতে সহায়ক হবে। কিন্তু মাইগ্রেশন ওয়াচ নামের একটি প্রচারণা গোষ্ঠী এই পদক্ষেপকে 'পশ্চাৎমুখী' বলে উল্লেখ করেছে।সেসব শিক্ষার্থীরা আগামী বছর থেকে যুক্তরাজ্যে স্নাতক পর্যায়ে কিংবা তার চেয়ে উঁচু কোন ডিগ্রির জন্য পড়াশুনা শুরু করবেন তারা এই পরিবর্তিত নিয়মের সুযোগ পাবেন।কিন্তু এখানে শর্ত থাকবে তারা যেনতেন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবেন না।শুধুমাত্র সেসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এই সুযোগ পাবেন যাদের ছাত্র-ছাত্রী ভর্তির ক্ষেত্রে অভিবাসন সংক্রান্ত নিয়ম-কানুন যথাযথভাবে মেনে চলার ইতিহাস রয়েছে। 

আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের সক্ষমতা চিহ্নিত করা এবং যুক্তরাজ্যে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ দিতে নতুন রাস্তা তৈরি করা হচ্ছে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী প্রীতি পাটেল বলেন, এই সিদ্ধান্ত সরকারের বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। নতুন প্রস্তাবনার আওতায়, শিক্ষার্থীরা কি ধরণের কাজ বা কয়টি কাজ করতে পারবেন তার উপর কোন বিধি-নিষেধ থাকবে না। থেরেসা মে ২০১২ সালে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থাকার সময় অভিবাসন নীতিতে পরিবর্তন আনেন।থেরেসা মে অভিবাসন নীতি নিয়ে একটি বৈরী পরিস্থিতি তৈরি করেছিলেন।এর লক্ষ্য ছিলো মোট অভিবাসনের পরিমাণ কমিয়ে আনা।সেখানে বরিস জনসন সেই অবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে বুদ্ধিদীপ্ত এবং সেরাদেরকে বৈশ্বিক ব্রিটেনে এসে বাস করতে উৎসাহী করছেন। 
ইউনিভার্সিটি ইউকের প্রধান নির্বাহী অ্যালেস্টার জারভিস এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন।তিনি বলছেন, এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাজ্যের অর্থনীতিকে লাভবান করবে এবং উচ্চশিক্ষার জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক গন্তব্য হিসেবে যুক্তরাজ্যের সুনাম ফিরিয়ে আনবে।আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যের জন্য ইতিবাচক সামাজিক প্রভাব বয়ে আনে বলে প্রমাণ রয়েছে। সাথে অর্থনীতিতে যোগ করেছে ২৬ বিলিয়ন পাউন্ড। কিন্তু বেশ দীর্ঘ সময় ধরে, শিক্ষার্থীদের পড়াশুনা শেষে কাজের সুযোগ না থাকায় যুক্তরাজ্য এসব শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।তবে মাইগ্রেশন ওয়াচের চেয়ারম্যান আলপ মেহমেট বলেন, এই সিদ্ধান্ত অপরিণামদর্শী। তিনি মনে করেন,এর ফলে স্নাতক ডিগ্রিধারী বিদেশি শিক্ষার্থীরা অনেক বেশি পরিমাণে থেকে যাবে। তিনি বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এখনই অনেক বেশি বিদেশি শিক্ষার্থীকে আকর্ষণ করছে। তাই নতুন করে শিক্ষা ভিসার মান কমিয়ে এটিকে পরোক্ষভাবে কাজের জন্য ভিসায় পরিণত করার কোন দরকার নেই।

ছায়া স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ডায়ান অ্যাবোট বলেন, লেবার পার্টি বরাবরই বলে আসছে যে, স্নাতক ডিগ্রিধারী শিক্ষার্থীদের পড়াশুনার পর কাজের সুযোগ দেয়া উচিত।এতে করে তারা আমাদের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণায় অবদান রাখবে এবং এর ফলে বিশ্বের মেধাবী এবং সেরাদের আনতে পারবো আমরা। তিনি বলেন, এটা দুঃখজনক যে, এর আগে এই পদক্ষেপের বিপরীত পদক্ষেপ নেয়ার সময়ও মন্ত্রীরা তা সমর্থন করেছিলো।
কেআই/