সেরা ১ হাজারের তালিকাতেও নেই ঢাবি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৪৮ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার | আপডেট: ০৩:৪৯ পিএম, ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
আমাদের দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। যার সুনাম ছিল দেশ-বিদেশে কিন্তু এখন এই সুনাম একেবারে তলানিতে নেমে এসেছে। বিশ্বের সেরা বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং-এ এক হাজারের মধ্যেও স্থান পায়নি এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি।
লন্ডনভিত্তিক শিক্ষা বিষয়ক সাময়িকী ‘টাইমস হায়ার এডুকেশন’ প্রতিবছর বিশ্বের বিশ্ব্যবিদ্যালয়গুলোর র্যাংকিংয়ের তালিকা প্রকাশ করে। এ বছরও এই তালিকায় ৯২টি দেশের ১৩শ’ বিশ্ববিদ্যালয় অন্তুর্ভুক্ত করা হয়েছে। যার মধ্যে বাংলাদেশের একমাত্র এই বিশ্ববিদ্যালয়টিই স্থান পেয়েছে।
এই তালিকা অনুযায়ী ২০১৮ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টির অবস্থান দাঁড়ায় এক হাজারেরও পরে। তবে ২০১৬ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ছিল ৬শ’ থেকে আটশ’র মধ্যে। এর দু’বছর পরেই এটির অবস্থান হঠাৎই নীচের দিকে নেমে গেলো।
শিক্ষার পরিবেশ, গবেষণার সংখ্যা ও সুনাম, সাইটেশন বা গবেষণার উদ্ধৃতি, এখাত থেকে আয় এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বা সংশ্লিষ্টতাসহ ৫টি মানদণ্ড বিশ্লেষণ করে এই তালিকা তৈরি করেছে শিক্ষা বিষয়ক সাময়িকীটি।
এ বছরই মে মাসে সাময়িকীটি এশিয়ার সেরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি তালিকা প্রকাশ করেছিল। সেই তালিকায় উল্লেখিত এশিয়ার ৪১৭টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটি বিশ্ববিদ্যালয়েরও নাম ছিল না।
সে সময় সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোতে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষার মান ও গবেষণার সুযোগ নিয়ে বিস্তর সমালোচনা হয়েছিল।
আগের বছরগুলোর তুলনায় গবেষণা, উদ্ধৃতি এবং আয়- এই তিনটি খাতে উন্নতি হলেও ২০১৬ সালের পর থেকে ব্যাপকহারে নেমে গেছে শিক্ষার পরিবেশের গ্রাফ চিত্র।
প্রকাশিত তালিকা লক্ষ্য করলে দেখা যায়, প্রতিবেশী দেশ ভারত এবং পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বেশ ভালো অবস্থানে আছে। এই তালিকায় তিনশ’ থেকে শুরু করে এক হাজারের মধ্যে রয়েছে ভারতের ৩৬টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
বিভিন্ন ইস্যুতে অস্থিতিশীল দেশ পাকিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অবস্থানও বাংলাদেশের চেয়ে ভালো। এই তালিকায় এক হাজারের মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের ৭টি বিশ্ববিদ্যালয়। এর মধ্যে প্রথম ৫শ’ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ইসলামাবাদের কায়েদ-ই-আজম ইউনিভার্সিটি।
এশিয়ার অন্য দেশগুলোর মধ্যে চীন এবং জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তালিকায় উঠে এসেছে উল্লেখযোগ্য হারে। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত ইরানের কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ও এ তালিকায় স্থান পেয়েছে।
বরাবরের মতোই এই তালিকায় কর্তৃত্ব করছে যুক্তরাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। এ বছরের তালিকার প্রথম ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭টিই যুক্তরাষ্ট্রের। যার মধ্যে রয়েছে ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটি, ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজি, হার্ভার্ড ইউনিভার্সিটি, ইয়েল ইউনিভার্সিটি।
তবে চতুর্থবারের মতো এবছরও তালিকায় প্রথম স্থানটি দখলে নিয়েছে যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব অক্সফোর্ড। তৃতীয় স্থানে রয়েছে কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি। আর দশম স্থানে রয়েছে ইম্পেরিয়াল কলেজ অব লন্ডন।
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ব্যাপক হারে উন্নতি করেছে। ২০১৬ সালের পর থেকে প্রথম ২০০টির মধ্যে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৪টি থেকে কমে ২৮-এ নেমে এসেছে। কিন্তু এই তালিকায় জার্মান বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা তিনটি থেকে বেড়ে ২৩টি হয়েছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং নিয়ে ভিন্ন মতও রয়েছে। অনেকে মনে করছেন প্রকৃত পরিসংখ্যান এখানে যাচাই-বাছাই করা হয় না। আবার বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষও এই র্যাংকিংকে তেমন গুরুত্ব দেন না। যার জন্য এই দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর পরিসংখ্যান বা ডাটা ওই সাময়িকীর কাছে তুলে ধরা হয় না।
এএইচ/