ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জাপানে উচ্চশিক্ষা নেয়ার প্রয়োজনীয় তথ্য

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:৫৫ পিএম, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার

বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের স্বপ্ন থাকে অধিকাংশ শিক্ষার্থীর। বিদেশে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা সঠিক তথ্য না জানা। কীভাবে সেখানে যাবেন, কোথায় পড়বেন, কীভাবে ভর্তি হবেন, পড়াশোনার খরচ কেমন, দ্রব্যমূল্য- এসব জানতে গিয়ে পড়ুয়াদের প্রচুর কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, জাপানে উচ্চশিক্ষা নেয়ার প্রয়োজনীয় সব তথ্য।

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানে বিভিন্ন স্কলারশিপ ও টিউশন ছাড়ের সুবিধা আছে। এ সুবিধার আওতায় সম্পূর্ণ বিনা খরচেই আপনি পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবেন। সরকারি ছাড়াও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও স্কলারশিপ দিয়ে থাকে।

প্রায় প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজস্ব স্কলারশিপের ব্যবস্থা আছে। একজন শিক্ষার্থী এসব স্কলারশিপে জাপানে পড়াশোনা করতে পারেন। আবার সেখানে কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পরও স্কলারশিপের জন্য আপনি আবেদন করতে পারবেন। জাপানে যেসব স্কলারশিপে যাওয়া যায়, তা হলো-

MEXT স্কলারশিপ

MEXT স্কলারশিপের জন্য দুইভাবে আবেদন করা যায়। প্রথমত, জাপান এম্বাসি বাংলাদেশ এর মাধ্যমে। দ্বিতীয়ত, জাপানিজ ভার্সিটির মাধ্যমে। লিঙ্ক: https://www.bd.emb-japan.go.jp/en/education/scholarshipNotice.html

ADB স্কলারশিপ

এইখানে জিপিএ এর চাইতে বেশি দরকার ২ বছর অভিজ্ঞতা। যাদের পাশ করার পর দুইবছর জব এক্সপেরিয়েন্স নেই তারা অ্যাপ্লাই করতে পারবে না। আর আপ্লিকেশনের তারিখ ভার্সিটির উপর নির্ভর করে। লিঙ্ক: https://www.adb.org/site/careers/japan-scholarship-program/jsp-institutions

World Bank স্কলারশিপ

আপ্লিকেশনের সময় সাধারণত প্রতি বছরের মার্চ মাসে। লিঙ্ক: https://www.worldbank.org/en/programs/scholarships#3

এছাড়া, জাপানে পড়াশুনার পাশাপাশি মাসে ১২৮ ঘণ্টা কাজ করার অনুমতি থাকে। এর মাধ্যমে এক লাখ ২৮ হাজার জাপানিজ ইয়েন ইনকাম করা যায়। টোকিও-তে ভালোভাবে তা দিয়ে চলতে পারা যায়। আর অন্য কোথাও হলে মাসে ৭০-৮০ হাজার ইয়েনে চলা যায়। তবে বাইরে জব করতে চাইলে জাপানিজ ভাষা বলা অবশ্যই জানতে হবে। ইন্টারন্যাশনালদের জন্যে কাজের অনেক সুযোগ রয়েছে বিশেষ করে যারা জাপানিজ বলতে পারে।

জাপানে অনেক প্রাইভেট স্কলারশিপ আছে যা শুধু ভর্তিকৃত আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের জন্য। লিংক https://www.jasso.go.jp/index.html

বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য জাপানে বেশকিছু উচ্চতর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আছে। এগুলো হলো- প্রযুক্তি কলেজ, পেশাদার প্রশিক্ষণ কলেজ, জুনিয়র কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং গ্র্যাজুয়েট স্কুল। সাধারণত আমাদের দেশের জন্য উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পাস করলেই আবেদন করা যাবে জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে।

জাপানের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সিস্টেম একই। তবে স্কলারশিপের জন্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করাই উত্তম। কারণ এইসব বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ এর সংখ্যা সাধারণত বেশি থাকে। তাই গুগলে List of Public University / National university in Japan লিখে সার্চ দিলেই সব বিশ্ববিদ্যালয় পাওয়া যাবে। সব ভার্সিটির ওয়েব পেইজ জাপান, কোরিয়ান, চাইনিজ ও ইংরেজিতে লিখা। লিঙ্ক: http://www.mext.go.jp/en/about/relatedsites/title01/detail01/sdetail01/1375122.htm

জাপানে রয়েছে নানামুখী বিষয়ে পড়াশোনা করার সুবিধা। দেশটির প্রযুক্তি কলেজ, পেশাদার প্রশিক্ষণ কলেজ, জুনিয়র কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় এবং গ্র্যাজুয়েট স্কুলগুলো থেকে আপনি বিভিন্ন বিষয়ে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, ডক্টরাল, ডিপ্লোমা, অ্যাডভান্স ডিপ্লোমাসহ বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জন করতে পারবেন। এসব ডিগ্রির কোর্সগুলো সাধারণত দুই থেকে ছয় বছর মেয়াদি হয়ে থাকে। জাপানে পড়াশোনা করতে হলে জাপানি ভাষা অবশ্যই জানতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ওয়েবসাইটে পেয়ে যাবেন ভর্তির জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য। প্রথমেই ঠিক করে নিতে হবে আপনি কোন বিষয়ে পড়বেন। সঠিক পরিকল্পনা গ্রহণের পরই আসে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাছাইয়ের বিষয়টি। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ঘেঁটে পছন্দমাফিক একটি তালিকা তৈরি করে নিতে পারেন। পরে সেই তালিকা থেকে নিতে পারেন চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত।

জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ভর্তির জন্য কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয়। জাপানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় পড়াশোনার জন্য বিভিন্ন ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এর মধ্যে রয়েছে- https://www.jasso.go.jp/en/eju/index.html, https://www.jlpt.jp/e/, https://www.ets.org/toefl, https://www.ieltsidpindia.com/?gclid=CjwKCAjwwvfrBRBIEiwA2nFiPeOuzyLEE1VKvyaDEfg6pIUozi_z1e_d-PccB_FHLKX87bFciMM6xBoCLzsQAvD_BwE, https://www.ets.org/toeic প্রভৃতি মূল্যায়ন পরীক্ষা। তবে কোনও কোনও বিষয়ে পড়ার জন্য এসব পরীক্ষার প্রয়োজন নাও হতে পারে।

যাইহোক, পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেই আবেদনের নথি প্রস্তুত করে আবেদন ফি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীকে একটি সাক্ষাৎকারের মুখোমুখি হতে হবে। এছাড়া একটি একাডেমিক কৃতিত্ব পরীক্ষা দিতে হয় উত্তীর্ণদের।

এরপর নির্বাচিত প্রার্থীরা ভর্তি হতে পারবেন। ভর্তির জন্য প্রথম বছরের একাডেমিক ফি পাঠানোর ব্যবস্থা করতে হবে। তবে এমন অনেক স্কলারশিপ আছে যাতে আপনার এমন কিছুই লাগবে না। বিনা খরচেই পড়াশোনা করতে পারবেন।

ভর্তির পরপরই ভিসা, জাপানে যাওয়া ও সেখানে থাকার প্রস্তুতি নিতে হবে। ভিসা পাওয়ার পরপরই বাসস্থান, বিমানের টিকিট, বীমা প্রভৃতি বিষয়গুলো ঠিক করে নিতে হবে শিক্ষার্থীকে। এভাবেই আপনি স্বপ্নের দেশে আপনি নিজেকে মেলে ধরতে পারেন। আপনার জন্য রইলো শুভকামনা।