ঢাকা, শনিবার   ১৬ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১ ১৪৩১

কিশোর মিলন হত্যা: পুলিশের এসআইসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে পরোয়ানা

নোয়াখালী প্রতিনিধি

প্রকাশিত : ০৮:৩২ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জের চরকাঁকড়ায় পুলিশের সামনে কিশোর শামছুদ্দিন মিলনকে ‘ডাকাত’ সাজিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় ২৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছে আদালত। ২০১১ সালের ২৭ জুলাইয়ের ওই ঘটনায় পুলিশের এক এসআইসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। 

আজ সোমবার বিকালে মামলার শুনানী শেষে জেলার ২ নম্বর আমলি আদালতের বিচারক এসএম মোসলেহ উদ্দিন মিজান এ আদেশ দেন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, মিলনের বাড়ি কোম্পানীগঞ্জের চর ফকিরা গ্রামে। বাবা প্রবাসী গিয়াস উদ্দিন। মিলন ২০১০ সালে স্থানীয় কবি নজরুল উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হলেও অর্থের অভাবে এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারেনি। সেদিন বাবার পাঠানো ১৪ হাজার টাকা নিয়ে জমি রেজিস্ট্রির জন্য উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে এক খালাতো বোনের সঙ্গে দেখা করতে চর কাঁকড়া ব্যাপারী স্কুলের মসজিদের ঘাটে অপেক্ষা করছিল মিলন। 
কিছুক্ষণ পর সেখানে এসে স্থানিয় ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন ও সহযোগী মিজানুর রহমান তার পরিচয় জানতে চান। তারা পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পরও সঙ্গে থাকা মুঠোফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে মিলনকে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে পুলিশ থানায় নেয়ার পথে তাকে ‘ডাকাত’ সাজিয়ে টেকেরবাজারে উন্মত্ত জনতার হাতে ছেড়ে দেয়। এর পরেই ঘটে নির্মম ওই হত্যাকাণ্ড। 

ঘটনার কয়েকদিন পর মোবাইলে ধারণকৃত ভিডিওচিত্রে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের খবর গণমাধ্যমে উঠে আসে। এ নিয়ে দেশব্যাপী আলোচনার ঝড় ওঠে। ২০১৫ সালের জুলাই মাসের প্রথম দিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা নোয়াখালী জেলা পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি'র ওসি আতাউর রহমান ভূঁইয়া মামলায় তদন্তে ভিডিওচিত্র দেখে হত্যার ঘটনায় সনাক্ত হওয়া ২৭ ব্যক্তি ও চার পুলিশ সদস্যসহ ৩২ আসামির সবাইকে মামলা থেকে অব্যাহতি দিয়ে নোয়াখালীর ২ নম্বর আমলি আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছিলেন।
  
পরবর্তীতে মামলাটি অধিকতর তদন্ত শেষে গত ৯ মার্চ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির কুমিল্লা ও নোয়াখালী অঞ্চলের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার জালাল উদ্দিন আহম্মদ নোয়াখালীর ২ নম্বর আমলি আদালতে পাঁচ পৃষ্ঠার এক অভিযোগপত্র দাখিল করেন। যাতে চর কাঁকড়া ইউনিয়ন পরিষদের তৎকালীন সদস্য জামাল উদ্দিন, তার সহযোগী মিজানুর রহমান মানিকসহ ২৯ জনকে আসামি করা হয়। 

যার মধ্যে একজনের মৃত্যু হওয়ায় তাকে অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়। অপরদিকে আসামিদের মধ্যে ৭ জন জামিনে, আর বাকি ২০ জন পলাতক রয়েছেন। কিন্তু এই অভিযোগপত্রেও কোনও পুলিশ সদস্যকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। 

পরবর্তীতে আজ ওই অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করেন। যা পর্যালোচনা করে মিলন হত্যার সময় উপস্থিত থাকা পুলিশের এসআই আকরাম হোসেন শেখকে অভিযোগপত্রে অন্তর্ভুক্ত করার নির্দেশ দেন আদালত।

এনএস/