ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

পুলিশ কন্সটেবলের ছেলে উধাও, আধ্যাত্মিক ভাষায় চিরকূট

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি 

প্রকাশিত : ০৯:০০ পিএম, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার

‘আমি গৃহপলায়ন করি নাই। গৃহত্যাগ করিলাম। সত্যের সন্ধানে যাচ্ছি। আমাকে খোঁজাখুঁজি করে লাভ নেই। সত্যের মধ্যে সত্য আছে। কাজের ভেতরে কাজ আছে।’ -এমন সব কথা চিরকূটে লিখে বাড়ি থেকে উধাও হয়েছে সাতক্ষীরা সদর থানার পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমানের ছেলে মোহায়মিনুল ইসলাম মোমিন। সে সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। 

গত শুক্রবার রাতে মোহায়মিনুল ইসলাম এশার নামাজ পড়ার কথা বলে শহরের মনজিতপুরস্থ তাদের ভাড়া বাসা থেকে বেরিয়ে গেছে। এরপর থেকে তার আর কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি। তবে সে জঙ্গির পথ ধরেছে কিনা তা কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।

নিজ হাতে লেখা দীর্ঘ চিঠিতে ১৪ বছরের মোহায়মিনুল ইসলাম আরও লিখেছে, দীর্ঘকালে আমাকে কেহ চিনে নাই, জানে নাই আমার কাজকে। আজ হয়তো প্রভুর অনুমতিক্রমে আমার সময় শেষ। তাই চলিলাম। ইহা স্বাভাবিক। অন্তত: মুসলিমের পক্ষে। আমি সত্য লইয়াই আঁধার রাতে বাহির হইয়াছি। 

এ বিষয়ে মোহায়মিনুলের বড় ভাই আবদুল আহাদ জানান, সে অত্যন্ত চুপচাপ স্বভাবের ছেলে। তার কোনও বন্ধুও নেই। দুই একটি ছেলের সঙ্গে সে স্কুলে যেতো। 

তিনি আরও বলেন, সে লেখাপড়ার পাশাপাশি সব সময় আল্লাহর পথ নিয়ে ভাবতো, কথা বলতো এবং কবিতা লিখতো। গোপালগঞ্জ সদরে বাড়ি তাদের উল্লেখ করে আবদুল আহাদ বলেন, ক্লাসে তার রোল নম্বর এক। সে আধ্যাত্মিক কথাবার্তা লিখে গেছে। প্রকৃতপক্ষে সে কোথায় গেছে তা এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। 

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা সদর থানায় একটি জিডি করা হয়েছে (জিডি নম্বর-৮৯৯) বলেও জানান তিনি।

মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আমার ছেলে নম্র-ভদ্র স্বভাবের। সে কোনও চক্রের খপ্পরে পড়ে থাকতে পারে। জেলা পুলিশের সহায়তায় তাকে আমরা খুঁজছি। এখনও পাইনি। 

সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সমরেশ সরকার জানান, আজ (শনিবার) সকালে বিদ্যালয়ে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পরই মোহায়মিনুলের বাবা পুলিশ কন্সটেবল মোস্তাফিজুর রহমান তার কাছে এসে জানান, তার ছেলের গৃহত্যাগের কথা। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। 

প্রধান শিক্ষক জানান, ছেলেটি অত্যন্ত বিনয়ী নম্র ও ভদ্র স্বভাবের। তিনি তাকে ব্যক্তিগতভাবে চেনেন। তার লেখাপড়া, আচরণ, শৃঙ্খলা সবদিকই ছিল প্রশংসনীয়। তবে গৃহত্যাগের কারণ কি, তা তিনি বলতে পারেন নি। 

সাতক্ষীরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, চিঠিতে যেসব কথা বলা হয়েছে তা আধ্যাত্মিক ভাষায়। 

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎমিশ জানান, ছেলেটির নিখোঁজ খবর শুনে আমরা সাতক্ষীরা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছি। তবে সে কোথায় এবং কেন গেছে তার কোনও হদিস মিলানো যায়নি। 

এনএস/