ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

ক্যাসিনো কি, এখানে কি হয়? বাংলাদেশে নিষিদ্ধ কেন? 

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৪:১১ পিএম, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

প্রায় দুই হাজার বছর আগে জুয়া খেলার উত্থান। শুরুর দিকে অনিয়ন্ত্রিত জুয়ার আসরের কারণেই ক্যাসিনোর উৎপত্তি। বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জুয়ার আসরে চলে ক্যাসিনোর রমরমা ব্যবসা। উড়ানো হয় হাজার হাজার কোটি টাকা। বিশ্বজুড়ে রয়েছে এমন অসংখ্য ক্যাসিনো যেখানে জুয়ার নেশায় মেতে থাকেন জুয়াড়িরা। আমেরিকা, রাশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, চীন, ভারত, নেপালসহ অসংখ্য দেশে গড়ে উঠেছে এই টাকা উড়ানোর আসর। অনেক ধনাঢ্য ব্যক্তি খেলার ছলে মনোরঞ্জনের জন্য এসব ক্যাসিনোতে এসে থাকেন।

ক্যাসিনোর ইতিহাস
এখন পর্যন্ত ক্যাসিনো সম্পর্কে সঠিক ইতিহাস জানা সম্ভব হয় নি। কারণ ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায়, পৃথিবীর শুরু থেকেই বাজি বা জুয়া খেলার প্রচলন ছিল। আর বর্তমানে সকল দেশেই কম বেশি এর প্রচলন আছে।

ইউরোপের ইতিহাসে ক্যাসিনো
তবে ইউরোপের ইতিহাস থেকে জানা যায়, ইতালিতে সর্বপ্রথম ১৬৩৮ সালে ভেনিস শহরে রীডোট্ট নামে এক ক্যাসিনো তৈরি করা হয়েছিলো। ওই সময়কার জ্ঞানী লোকদের পরামর্শে এটি তৈরি করা হয়। আর এর উদ্দেশ্য ছিলো কার্নিভাল সিজনে সচারাচার হওয়া জুয়াকে নিয়ন্ত্রণ করা। তবে সামাজিক অবক্ষয়ের কথা ভেবে ১৭৭৪ সালে সেই শহরের প্রধান এটিকে বন্ধ করে দেয়।

আমেরিকার ইতিহাসে ক্যাসিনো
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সর্বপ্রথম ক্যাসিনোর নাম স্যালুন্স। যদিও এটি তৈরি করা হয়েছিল পর্যটকদের আকর্ষণের জন্য। এখানে তারা জুয়ার সঙ্গে সঙ্গে আড্ডা দেওয়া, ড্রিংকস করার সুযোগ পেত। তবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে এটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠে স্যান ফ্রান্সিকো, নিউ অরলিন্স, সেন্ট লুইস ও শিকাগোর মত শহরে। যা বিশ শতকের দিকে আমেরিকায় সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। 

১৯৩১ সালে আমেরিকার নেভাদা রাজ্যে সর্বপ্রথম সরকার অনুমোদিত ক্যাসিনো গড়ে ওঠে। বর্তমানে আটলান্টিক সিটি আমেরিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্যাসিনো শহর। বর্তমানে ক্যাসিনোর কথা উঠলে শুরুতেই আসবে সিন সিটি লাসভেগাসের কথা। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জুয়ার আসরটি এখানেই বসে থাকে। 

তবে লাসভেগাস ছাড়াও বিভিন্ন দেশেও নাম না জানা অনেক জুয়ার আসর রয়েছে। কিন্তু টিভি-সিনেমায় দেখা যায়, লাস ভেগাসের ক্যাসিনোর তুলনায় সিঙ্গাপুরের ক্যাসিনোগুলো অনেক ভদ্র প্রকৃতির। 

ইদানীং এশিয়ার কয়েকটি দেশ এসব জুয়া খেলায় এগিয়ে। এশিয়ার ক্যাসিনোগুলো চুটিয়ে ব্যবসা করছে। এসব জায়গায় হরহামেশাই চলে জুয়ার বড় বড় দান। এশিয়া মহাদেশের নেপাল, ভারত, চীন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এসব জুয়ার আসরে এগিয়ে। বালক থেকে বৃদ্ধ, সব বয়সীদের দেখা মিলে এসব ক্যাসিনোতে। কোটি কোটি টাকা ওড়াতে আর মনোরঞ্জন করতে তারা এখানে আসে।

নেপালের কাঠমান্ডু
এশীয় উপমহাদেশের সবচেয়ে বড় জুয়ার আসরগুলো বসে নেপালের কাঠমান্ডুতে। হিমালয়ের দেশটিতে ক্যাসিনোর জন্য বিশ্বজোড়া খ্যাতি রয়েছে। এসব জুয়ার আসরে সবচেয়ে বেশি জুয়ায় মাতে ভিনদেশি পর্যটকরা। এখানে রয়েছে নামকরা ছয়টি ক্যাসিনো। নেপাল ক্যাসিনোস, ক্যাসিনো ইন নেপাল, ক্যাসিনো সিয়াংগ্রি, ক্যাসিনো অ্যান্না, ক্যাসিনো এভারেস্ট ও ক্যাসিনো রয়েল এখানকার জনপ্রিয় ক্যাসিনোগুলোর মধ্যে অন্যতম। এসব জুয়ার আসরে মজার খেলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- পোকার (জুজু খেলা), বাক্কারাট (বাজি ধরে তাস খেলা), রুলেট, পন্টুন, ফ্লাশ, বিট, ডিলার, ব্লাকজ্যাক এবং কার্ডস্লট মেশিনের খেলা। যেসবের পিছনে ওড়ানো হয় কোটি কোটি ডলার। ২৪ ঘণ্টা ধরেই চলে এসব জুয়ার আসর। অনেকে এক রাতেই রাজ্যের রাজা বনে যান, আবার অনেকেই হয়ে যান রাস্তার ফকির। এখানকার প্রতিটি ক্যাসিনোতে আগ্রহীরা পরিবার-বন্ধুবান্ধব নিয়ে আসেন। রাতভর জুয়া খেলার পাশাপাশি মদের নেশায় মেতে ওঠেন জুয়াড়িরা। 


 
দ্য ভ্যালেন্তিয়ান ম্যাকাও
বিশ্বে যত ক্যাসিনো রয়েছে দ্য ভ্যালেন্তিয়ান তার মধ্যে অন্যতম। চীনের এই ক্যাসিনোটি জুয়াড়িদের প্রধান আকর্ষণ। আকর্ষণীয় এই ক্যাসিনোটি ভিতর এবং বাহির দুদিক থেকেই দেখতে অপরূপ। প্রতি রাতে এখানে চলে নানা ধরনের রোমাঞ্চকর আয়োজন। এটি শুধু ক্যাসিনোই নয় বরং একটি পাঁচতারকা মানের হোটেলও। ক্যাসিনো পুরো হোটেলটির রূপ পাল্টে দিয়েছে। 
 
ফক্সউডস রিসোর্ট ক্যাসিনো
যুক্তরাষ্ট্রের কানেক্টিকাটের এই ক্যাসিনোটি বিশ্বজুড়ে সমাদৃত। বহু সেলিব্রেটি তাদের বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে সেখানে যান। সারা রাত জুয়া খেলার পাশাপাশি এখানে চলে জমজমাট আড্ডা। কানেক্টিকাটের এই ফক্সউড রিসোর্ট ক্যাসিনো পৃথিবীজুড়ে জুয়াড়িদের অন্যতম পছন্দের জায়গা। ক্যাসিনোখ্যাত এই হোটেলটিতে ৩৮০টিরও বেশি জুয়ার টেবিলে প্রতিদিন চলে ব্ল্যাকজ্যাক, রুলেট, জুজু ইত্যাদি মজার মজার খেলা। হাজার হাজার জুয়াড়ির সমাগম ঘটে এই ক্যাসিনোতে এবং চলে কোটি কোটি টাকার জুয়ার আসর। এখানে আরও রয়েছে অল্প বয়স্কদের জন্য চমকপ্রদ সব বিনোদনের ব্যবস্থা।  

এমজিএম গ্র্যান্ড ক্যাসিনো
লাসভেগাসে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম হোটেলে অবস্থিত এই ক্যাসিনো। ১ লাখ ৭১ হাজার ৫০০ বর্গফুটের বিশাল এলাকাজুড়ে নির্মিত এই ক্যাসিনোর গেমিং জোন। এটিই সিন সিটির সবচেয়ে বড় ক্যাসিনো ফ্লোর। এখানে প্রতিদিন ১৩৯টি টেবিলে পোকারসহ বিভিন্ন রকমের জুয়ার আসর বসে। আরও রয়েছে ভিডিও জুজু, প্রোগ্রেসিভ স্লট ও মাল্টি গেম মেমিনসহ জুয়া খেলার নানা উপকরণ। সারা পৃথিবী থেকে ধনকুবেররা আসেন এই ক্যাসিনোতে। এখানে ১ ডলার থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত বাজি ধরা যায়। আবার কেউ কেউ ৫ লাখ ডলার পর্যন্ত প্লে আউট করে থাকে। 


 
বেল্লাজিও
লাসভেগাসের আরেকটি চমৎকার ক্যাসিনো বেল্লাজিও। নান্দনিক লোকেশনে অবস্থিত এই ক্যাসিনোটি এমজিএম রিসোর্ট মালিকাধীন। এখানে রয়েছে একটি বিখ্যাত ফোয়ারা। যার আশপাশে ওশেইন ১১, দ্য হ্যাংওভার অ্যান্ড টোয়েন্টি ওয়ান, গ্লামারসের মতো আলোচিত মুভির শুটিং হয়েছে। এখানে হাই টেবিল লিমিট সুবিধা থাকায় প্রফেশনাল জুয়াড়িরা এই ক্যাসিনোতে বেশি ভিড় জমান। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত জুয়াড়িরা এখানে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ডলার থেকে ৮ হাজার ডলার পর্যন্ত জুয়ার বাজি ধরতে পারেন। মাঝে মাঝে গেমিং পটস এক মিলিয়ন ডলারও ছাড়িয়ে যায়।

দ্য ভ্যালেন্তিনো রিসোর্ট হোটেল ক্যাসিনো
ক্যাসিনো বললেই লাসভেগাসের দ্য ভ্যালেন্তিনো রিসোর্ট হোটেল ক্যাসিনোর কথা মনে আসে সবার আগে। এই বিলাসবহুল হোটেল এবং ক্যাসিনোটি বিশ্বেজোড়া বিখ্যাত। পুরো হোটেলটির মালিক এবং পরিচালক লাসভেগাস করপোরেশন। যার হেড কোয়ার্টারও হোটেলটির ভিতরেই অবস্থিত। এর মধ্যে আরও রয়েছে স্টান্ড এক্সপো কনভেশন সেন্টার, দ্য পাল্লাজো হোটেল এবং ক্যাসিনো রিসোর্ট। বলা যায়, একের ভিতর সব কিছু। এই হোটেলটি বিশ্বের অন্যতম বড় হোটেল এবং ক্যাসিনো। এখানে আগত অতিথিদের জন্য রয়েছে ৪০৪৯টি বিলাসবহুল স্যুট এবং ৪০৫৯টি হোটেল রুম। এ ছাড়াও ১২ হাজার বর্গফুটের বিশালাকার ক্যাসিনোটি জুয়াড়িদের পছন্দের শীর্ষে। 

রিও অল স্যুট হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনো
রিও নাম শুনলেই ব্রাজিলের কথা মনে হওয়ার কথা। আসলে এটি সেই রিও নয়, এই হোটেল-ক্যাসিনোটি বিশ্বের ধনকুবেরদের অবসর সময় কাটানোর আরেকটি জায়গা। রিও অল স্যুট হোটেল অ্যান্ড ক্যাসিনোর মালিক সিজার্স এন্টারটেইনমেন্ট করপোরেশন। এই ক্যাসিনোটি জুয়াড়িদের কাছে ‘দ্য রিও’ নামেই বেশি পরিচিত। এটি লাসভেগাসের অন্যমত আকর্ষণীয় হোটেল। ব্রাজিলের চমৎকার শহর রিও নামানুসারে এই হোটেলটির ক্যাসিনো নাম দেওয়া হয় রিও। পুরো হোটেলটির ডিজাইন আর নকশায় প্রাধান্য পেয়েছে ব্রাজিলের সংস্কৃতি।

এশিয়া প্যাসিফিক জোনে আরও ১৭ ক্যাসিনো
জুয়া শিল্পের প্রসার খুব দ্রুত ঘটছে। এক্ষেত্রে প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাগুলো এবং এর আশপাশের জায়গাগুলোই ক্যাসিনো ব্যবসায়ীদের জন্য বেশি পছন্দের।

তাই ২০২০ সালের মধ্যেই ক্যাসিনো শিল্পে যোগ হচ্ছে আরও ১৭টি নতুন বিলাসবহুল ক্যাসিনো। যার মধ্যে ছয়টি ক্যাসিনোর হোস্টিং করবে সবচেয়ে বড় গ্যামব্লিং হাব ম্যাকাও। আরও তিনটি ক্যাসিনো শুরু হচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া, রাশিয়া ও নিউজিল্যান্ডে। অস্ট্রেলিয়া ও ফিলিপাইনে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে যুক্ত হচ্ছে আরও দুটি ক্যাসিনো।

দক্ষিণ কোরিয়া এবং ফিলিপাইন ক্যাসিনো ব্যবসায় বিদেশি বিনিয়োগে উৎসাহী এবং আগামী পাঁচ বছরে নতুন কয়েকটি ক্যাসিনো চালু করবে। মেইনল্যান্ড চায়না অন্যতম বৃহৎ জুয়ার মার্কেট। ফলে জুয়াড়িরা পার্শ্ববর্তী দেশ যেমন ভিয়েতনাম, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিলিপাইনে জুয়া শিল্পের প্রসারে বেশি আগ্রহী।

বাংলাদেশের ইতিহাসে ক্যাসিনো
বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। আর ইসলামে জুয়া সম্পূর্ণ হারাম ও নিষিদ্ধ। তবে জুয়া বাংলাদেশের একটি অতিপরিচিত শব্দ। অলিতে গলিতে চোখ মেলে তাকালেই এর দেখা মিলে। তবে বেশ কয়েক বছর আগে এটা এতোটা খোলামেলা ছিলো না। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গুঞ্জন আসে এবং দেশের বিভিন্ন স্থানে আনুষ্ঠানিক ক্যাসিনো-এর খোঁজ পাওয়া যায়। বিষয়টি জানতে পেরে সরকার প্রধান শেখ হাসিনা ক্ষোভ প্রকাশ করেন এবং প্রশাসনিক তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দেন।

সম্প্রতি র‍্যাব-১ এর অভিযানে রাজধানীর ফকিরাপুলে ইয়ংমেন্স ক্লাব, শাহজাহানপুরের মুক্তিযোদ্ধা চিত্তবিনোদন ক্লাব, ওয়ান্ডারার্স ক্লাব ও বনানীতে কয়েকটি ক্যাসিনোর সন্ধান পাওয়া যায়। র‍্যাব-১ এর সূত্র মতে, এগুলো পরিচালনা করেন রাজনৈতিক ক্ষমতাসীন দলের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের কিছু নেতা। এ সময়ে বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়।

র‍্যাবের মতে, বাংলাদেশে বর্তমানে প্রায় ৫০টিরও বেশি ক্যাসিনো রয়েছে। যেখানে জুয়ার পাশাপাশি নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হয়ে থাকে। প্রশাসন এদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন।

ক্যাসিনোতে কারা যায়?
এ কথা আর বেশি বিশ্লেষণ করার দরকার হয় না যে, ক্যাসিনোতে কারা যায়। ধনী বা টাকাওয়ালারাই এর মূল গ্রাহক। বিশেষ করে, ১৮ থেকে ২৫ বছর বয়সী গ্রাহকই বেশি হয়ে থাকে।

তবে উন্নত দেশগুলোর প্রেক্ষাপটে ক্যাসিনোতে যাওয়ার জন্য কোন বাধা নিষেধ থাকে না। এগুলো সরকার অনুমোদিত হয়ে থাকেন। আর সেখানে প্রায় সকল বারের সাথেই ছোট-খাটো ক্যাসিনো থাকে।

শপিং শেষে একটু রিফ্রেশমেন্ট-এর জন্য কিংবা সময় কাটাতে অনেকেই ক্যাসিনোতে গিয়ে থাকেন। কিন্তু এটা ভয়ংকর হয়ে দাঁড়ায় তাদের জন্য, যারা নিয়মিত সেখানে যান এবং নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েন। নিয়মিত ভরা পকেট নিয়ে ক্যাসিনোতে গিয়ে পকেট খালি করে বাসায় ফেরা লোকজনই হচ্ছে আসল জুয়াড়ি।

কিভাবে সম্পন্ন হয়?
ক্যাসিনোতে এর গ্রাহকরা তাদের পছন্দমতো বিভিন্ন খেলার সুযোগ পায়। তবে যে যেই বিষয়ে পারদর্শী হয় সে সেটি খেলার চেষ্টা করে থাকে। বিশেষ করে ব্ল্যাকজ্যাক, ভিডিও পোকার, ব্রাক্যারেট, ক্রাপ ও রুলেট নামক খেলাগুলোই গ্রাহকরা বেশি খেলে থাকেন।

এখানে কিছু কিছু খেলায় গাণিতিকভাবে খেলোয়াড়ের পক্ষে কিছু যুক্তি দেখায় যে, তার জেতার সম্ভাবনা আছে। মূলত এটাই একজন খেলোয়াড়কে তার খেলার মধ্যে বেশি সময় ধরে রাখে। কারণ সে ধরে নেয় যে, তার জেতার সম্ভাবনা এখনও শেষ হয়ে যায়নি।

কিছু কিছু খেলায় গ্রাহকরা সরাসরি একে অপরের বিপক্ষে বাজি ধরার সুযোগ পায় এবং ক্যাসিনো হাউজ এখান থেকে কিছু কমিশন নেয়। একে র‍্যাক বলা হয়ে থাকে। এছাড়া গ্রাহকদের আগ্রহী করতে ক্যাসিনোর পক্ষ থেকে নানা অফার দেওয়া হয়ে থাকে।

ক্যাসিনোতে যাওয়া কি ক্ষতিকর?
আসলে ক্যাসিনোতে পরিবেশটা এমনভাবে সাজানো থাকে যে আপনি একবার সেখানে প্রবেশ করলে আপনাকে শুধু টাকা উড়াতেই মন চাইবে। সোজা কথায় বললে, ধনী থেকে ফকির হওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে নিয়মিত ক্যাসিনোতে যাওয়া।

আপনি চাইলে দুধ অথবা মদ, যেটা ইচ্ছা সেটা খেতে পারেন। কোনটা নিবেন সেটা আপনার বিষয়। জেনে শুনে মদ পান করলে কে কি করবে।

এটা থেকে বাঁচার উপায়
আমাদের যুব সমাজ দিন দিন নানা অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে। যা আমাদের সমাজ তথা জাতিকে ঠেলে দিচ্ছে এক মহাদুর্যোগের দিকে। সময় থাকতে নিজে সচেতন হোন অন্যকে সচেতন করুন। আপনার সন্তানের দিকে নজর রাখুন। তাদের সময় দিন।

কোথাও এমন কর্মকাণ্ড নজরে আসলে প্রশাসনকে জানান। পারলে নিজে প্রতিবাদ করুন। আর আপনি যদি এই সকল জায়গায় আসা যাওয়া করেন, তাহলে তা আজই বাদ দিন। কারণ আজ আপনি যাচ্ছেন দুই দিন পর আপনাকে দেখে আপনার সন্তানও আপনার দেখানো পথেই হাঁটবে।

সঠিক উপায়ে আয় করুন, বাজে কাজে ব্যয় করতে মন চাইবে না। ‘নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পানির বালতি যদি নিজে বহন করেন তাহলে বুজতে পারবেন প্রতি ফোটা পানি কতটা দামি।’ তবে দিনের আলোতে বসে জ্যোৎস্নার স্নিগ্ধ আলো উপভোগ করতে চাইলে সেটা ভিন্ন কথা। 

এনএস/