ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

মানুষের ভাগ্য কি আল্লাহ নিয়ন্ত্রণ করে?

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:১২ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার | আপডেট: ১২:১৬ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার

আল্লাহ রিজিকের মালিক। মানুষের ভালোমন্দ সব কিছুর নিয়ন্ত্রক। সর্বশক্তিশান আল্লাহ মানুষসহ সৃষ্টিকুলের সবার জন্য তাদের কাজ নির্ধারণ করে রেখেছেন। মানুষের ভাগ্যলিপিও আল্লাহর দ্বারা পূর্বনির্ধারিত। পবিত্র কোরআন এবং রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের হাদিসে এ সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হয়েছে।

ইসলামী বিধানে তকদিরে অবিশ্বাস করা কবিরা গুনাহ বলে বিবেচিত। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ঘোষণা করেন, ‘আমি প্রতিটি বস্তুকে পরিমিতভাবে সুনির্দিষ্ট পরিমাপে সৃষ্টি করেছি। সূরা ক্বামার-৪৯

হজরত আবু উমামা (রা.)-এর বর্ণনা মতে তকদিরে অবিশ্বাসীদের সম্পর্কে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। আর দ্বিতীয় অভিমত হলো, একবার নাজরানের এক খ্রিস্টান ধর্মযাজক এসে রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলল, ‘হে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আপনি কি মনে করেন, তকদির অনুসারে গুনাহের কাজ করা হয়ে থাকে? আসলে তো তা নয়।’ রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বললেন, ‘তোমরা আল্লাহর বিরুদ্ধাচরণকারী।’

তখন এ আয়াতটি অবতীর্ণ হয়। এ আয়াতের শানে নুজুল সম্পর্কে ইমাম ইবনুল জাওযী (রহ.) স্বীয় তাফসির গ্রন্থে দুটি অভিমত উল্লেখ করেছেন। প্রথমটি হচ্ছে, মক্কার মুশরিকরা রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দরবারে এসে তকদির বা ভাগ্যলিপি নিয়ে বিতর্ক শুরু করলে এ আয়াত অবতীর্ণ হয়। —মুসলিম

হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বর্ণনা করেন, রসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,‘কেয়ামতের দিন আল্লাহ যখন পূর্বাপর সবাইকে সমবেত করবেন, তখন আল্লাহর আদেশে একজন ফেরেশতা সবাই শুনতে পায় এমন উচ্চৈঃস্বরে ঘোষণা করবেন, কোথায় আল্লাহর অবাধ্যচারীরা? তখন তকদিরে অবিশ্বাসী লোকেরা দাঁড়িয়ে যাবে।

অতঃপর তাদের দোযখে ফেলে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। আল্লাহ তাদের বলবেন, ‘অগ্নি খাদ্যের স্বাদ গ্রহণ কর। আমি প্রতিটি বিষয়কে পরিমিতরূপে (অদৃষ্টের মাধ্যমে) সৃষ্টি করেছি।’ সূরা ক্বামার-৪৮-৪৯

তকদিরে অবিশ্বাসকারীদের এ জন্য অবাধ্যচারী বলা হবে যে, তাদের মতবাদ হচ্ছে, আল্লাহ তার বান্দাকে পাপ করার দক্ষতা দেবেন, আবার তাকে শাস্তিও দেবেন, তা হতে পারে না। সহিহ মুসলিম শরিফে হজরত ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, ‘প্রতিটি বিষয়ই সুনির্দিষ্ট পরিমাণে (অদৃষ্ট অনুযায়ী) ঘটে থাকে। 

এমনকি অপারগতাও।’ হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘প্রতিটি বিষয় পূর্বেই লওহে মাহফুজে লিপিবদ্ধ তকদির অনুযায়ী সংঘটিত হতে থাকে।’ আল্লাহপাক এ বিষয়ে ঘোষণা করেন, ‘আল্লাহপাক তোমাদের এবং তোমাদের কর্মসমূহকে সৃষ্টি করেছেন।’  সূরা তাগাবুন।

 টিআর/