তালেবান বা সরকার দু’য়ের হাতেই মরছেন আফগানরা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫৯ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
এশিয়ার দেশ আফগানিস্তান। এখানে জঙ্গি গোষ্ঠি তালেবানদের হাতে প্রতি নিয়ত মারা যাচ্ছেন দেশটির নাগরিকরা। তবে দেশটির সামরিক বাহিনীর সদস্যদের হাতেও নিয়মিত মারা যাচ্ছেন আফগানরা। সরকারের নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে আফগানদের মরার খবর আজ নতুন নয়। বিভিন্ন সময় আফগানদের উপর চালানো হামলায় মারা যাচ্ছেন আফগানরা।
জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় আফগান নিরাপত্তা বাহিনীর চালানো আকাশ হামলায় গত বুধবার রাতে অন্তত ৩০ আফগান নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৪০ জন। খবর ডয়চে ভেলে’র।
দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় নাঙ্গাহার রাজ্যের খোগায়ানি জেলার ওয়াজির তাঙ্গি এলাকার এক মাঠে এই হামলা চালানো হয়। সেই সময় কৃষকরা ক্ষেতে কাজ শেষে বনফায়ার আয়োজনে ব্যস্ত ছিলেন। আইএস’র একটি ঘাঁটি হামলার লক্ষ্য ছিল বলে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তিন সরকারি কর্মকর্তা। কিন্তু অপ্রত্যাশিতভাবে কৃষকরা এর শিকার হন বলে দাবি তাঁদের। আফগান ও মার্কিন বাহিনী যৌথভাবে হামলাটি চালিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।
তালেবানের হামলা:
নাঙ্গাহারে হামলার কয়েক ঘণ্টা পর দক্ষিণাঞ্চলীয় জাবুল প্রদেশে আত্মঘাতী হামলা চালায় তালেবান। এতে অন্তত ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন ৯০ জনের বেশি মানুষ। হামলায় একটি হাসপাতালের কিছু অংশ ও কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এর আগে গেল সপ্তাহের মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থী আশরাফ গনির জনসভায় হামলা করেছিল তালেবান৷ এতে অন্তত ২৬ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন। আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। ঐ নির্বাচন অনুষ্ঠান ব্যাহত করার ঘোষণা দিয়েছে তালেবান। চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তালেবানের শান্তি আলোচনা ভেস্তে যাওয়ার পর মারমুখী হয়ে উঠেছে তালেবান৷
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে তৎপর তালেবান:
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর আফগানিস্তানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। জঙ্গি সংগঠন তালেবান আগেই ঘোষণা দিয়েছে এ নির্বাচন হতে দেয়া হবে না। ভোটারদের ভোট দেয়ায় বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে আরো বলেছে, নির্বাচন হলে ভোট কেন্দ্রে এবং নিরাপত্তাবাহিনীর ওপর হামলা চালানো হবে।
প্রেসিডেন্টের নির্বাচনি সভায় আত্মঘাতী হামলা:
মঙ্গলবার আফগানিস্তানের উত্তরের রাজ্য পারওয়ানে নির্বাচনি সভায় হাজির ছিলেন প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি। কঠোর নিরাপত্তায় অনেক সাধারণ মানুষ গিয়েছিলেন প্রেসিডেন্টের ভাষণ শুনতে। কিন্তু সভা শুরুর আগেই মোটর সাইকেল চালিয়ে সভায় ঢুকে পড়ে এক যুবক। তার শরীরে বাঁধা বোমার বিস্ফোরণে সঙ্গে সঙ্গে ধোঁয়ায় ঢেকে যায় চারপাশ।
হামলার লক্ষ্য ছিল নিরাপত্তা কর্মীরা:
আত্মঘাতী হামলাকারী মোটর সাইকেল চালিয়ে দেন নিরাপত্তাবেষ্টনির ওপর দিয়ে। ফলে হতাহতদের মধ্যে নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যদেরও থাকার কথা। এ হামলায় মোট ২৬ জন নিহত এবং ৪২ জন আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
একই দিনে দ্বিতীয় হামলা:
পরের হামলাটি হয় রাজধানী কাবুলে। সেই এলাকায় মার্কিন দূতাবাস ও ন্যাটোর কার্যালয় রয়েছে বলে জানা গেছে। এ হামলায় অন্তত ২২ জন মারা যান।
তালেবানের দায়িত্ব স্বীকার:
দুটি হামলারই দায় স্বীকার করেছে তালেবান। হামলার জায়গার আশপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
এমএস/এসি