মাশরাফিতে পঞ্চমুখ মাসাকাদজা
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:৩৮ পিএম, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শনিবার
বিদায়টা যে এতোটা রোমাঞ্চকর হবে তা নিশ্চই ভাবেননি হ্যামিল্টন মাসাকাদজা। দীর্ঘ ১৮ বছরের ক্রিকেট ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন জিম্বাবুয়ের এ ওপেনিং ব্যাটসম্যান ও অনিয়মিত লেগ ব্রেক বোলার।
শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আফগানদের বিপক্ষে প্রথম জয় ঘরে তুলে দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানান। সে ম্যাচে ৪২ বলে ৭১ রানে জমকালো ইনিংস খেলে জয় এনে দেন। নিজের ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই চোখে অশ্রু নেমে আসে মাসাকাদজার। সঙ্গে স্মৃতির পাতায় ধরা দেয় মাশরাফির সঙ্গে অবারিত সেই মূহুর্তগুলো।
কেননা, মাশরাফি ও মাসাকাদজার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেকটা প্রায় একই সময়ে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে যখন মাশরাফির অভিষেক হয় তার অল্প কিছু দিন আগে হারারেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অভিষেক হয় মাসাকাদজার। আর সে ম্যাচেই নতুন ইতিহাস গড়েছিলেন তিনি। অভিষেকে সর্বকনিষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে সেঞ্চুরি করেন। পরে সে রেকর্ড অবশ্য খুব বেশিদিন স্থায়ী হতে দেন মোহাম্মদ আশরাফুল।
বাংলাদেশে অবশ্য মাসকাদজা এসেছিলেন ২০০৫ সালে। সেসময় একেবারে নতুন মুখ মাশরাফি। তারপরও দলের গুরুত্বপূর্ণূ খেলোয়ার হওয়ায় অল্প সময়েই দু’জনের হৃদ্বতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। খেলার মাঠে অনেক সময় প্রতিপক্ষ হিসেবে দু’জন থাকলেও, মাঠের বাইরে দু’জনের সম্পর্ক ছিল সবসময় ভিন্নমাত্রার রোমাঞ্চে ভরা।
স্বাভাবিকভাবে বিদায় বেলায় মাশরাফিকে মনে করেছেন মাসাকাদজা।
মাশরাফির দুই হাঁটুতে সাতটি অস্ত্রোপচার। ছোট বড় মিলিয়ে ১৩ বার ছুরিকাঁচির নিচে যাওয়া। মাশরাফির এ জীবন-যুদ্ধের গল্পটা প্রায় সব বাংলাদেশিরই জানা। কিন্তু সব কি আর জানেন? আরও এমন অনেক গল্প, অনেক কষ্টই লুকিয়ে আছে তার মনে। কাছের লোকরা অল্প কিছু জানেন। কিন্তু ক্রিকেট ভক্তদের কাছে প্রায় সবটাই অজানা।
আর সে গল্পটা মাশরাফিকে বই আকারে লেখার অনুরোধ করেছেন জিম্বাবুয়ের হয়ে এদিন শেষ ম্যাচ খেলতে নামা অধিনায়ক হ্যামিল্টন মাসাকাদজা।
বাংলাদেশের সঙ্গে তার সুখ ও দুঃখের উভয় স্মৃতি আছে। ২০০৫ সালে প্রথমবারের মত টেস্ট ক্রিকেটে সিরিজ জিতে টাইগাররা। প্রতিপক্ষ ছিল মাসাকাদজার দল জিম্বাবুয়ে। সেই স্মৃতি আজও নাকি তাড়া করে বেড়ায় মাসাকাদজাকে।
আর, ঢাকা লীগে খেলার সুযোগ পেয়ে বাংলাদেশিদের সঙ্গে তার সখ্যতাটা ছিল অন্যন্য উচ্চতায়। ফলে বাংলাদেশকে নাকি তিনি দ্বিতীয় বাড়ি মনে করেন।
২০০১ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় মাসাকাদজার। তিনি জাতীয় দলের হয়ে ৩৮ টেস্ট, ২০৯ ওয়ানডে ও ৬২ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেন। ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে সব মিলিয়ে ১০টি সেঞ্চুরি আর ৪২টি ফিফটির সাহায্যে ৯ হাজার ৪১০ রান সংগ্রহ করেন মাসাকাদজা।
আআ/