ববি মেডিকেলের সস্বল জ্বর ও পেট খারাপের বড়ি!
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০১:২৯ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০১:৩২ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) শিক্ষার্থীদের জন্য নেই কোনো উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থা। অবকাঠামো ও জনবলের সংকটের কারণে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য তিন কক্ষের মেডিকেল সেন্টারটি চিকিৎসা সেবা প্রদানে তেমন একটা ভূমিকা রাখতে পারছে না।
জানা যায়, তিন কক্ষ বিশিষ্ট এ চিকিৎসা কেন্দ্রে আছেন দুইজন ডাক্তার , একজন মেডিকেল এ্যাসিস্টান্ট ও একজন নার্স। জরুরি প্রয়োজনে রোগী বহনের জন্য রয়েছে একটি অ্যাম্বুলেন্স। চিকিৎসাখাতে নেই পর্যাপ্ত বরাদ্দ। ফলে প্রায় ৮ হাজার শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী যথাযথ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নানা সমস্যায় জর্জরিত হয়ে আসলেও মাথা ব্যথা, জ্বর, পেট খারাপের ওষুধ ছাড়া কিছুই মেলে না এ মেডিকেল সেন্টারে । রোগীদের শুধুমাত্র মাথা ব্যথা, জ্বর, পেট খারাপের জন্য সর্বোচ্চ ২ দিনের ঔষধ দেওয়া হয়। এছাড়া অনান্য রোগের ক্ষেত্রে শুধু ব্যবস্থাপত্রই দেওয়া হয়ে থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একটিমাত্র অ্যাম্বুলেন্স থাকলেও তা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনে পাওয়া দুষ্কর। শিক্ষার্থীরা এক রকম বাধ্য হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য সরকারী ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজ বা হাসপাতালের দারস্থ হন। এতে যেমন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুনতে হয় বাড়তি টাকা।
প্রশাসনের অবহেলাকে দায়ী করে শিক্ষার্থীরা বলছেন, মানুষের মৌলিক চাহিদায় চিকিৎসা সেবার কথা উল্লেখ থাকলেও তা বাস্তবায়নে পরিপূর্ণভাবে ব্যর্থ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের নিচ তলায় তিনটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে চলছে বিশ্ববিদ্যালয়টির মেডিকেল সেন্টারের কার্যক্রম। একটি কক্ষে চিকিৎসকের কক্ষ, একটিতে রোগীদের জন্য একটি বিছানা থাকলেও অন্যটি কক্ষটি অব্যবহৃত রয়েছে। চিকিৎসা সরঞ্জাম হিসেবে আছে রোগীদের জন্য দুটি বিছানা, প্রেসার মাপার দুটি ডিজিটাল মেশিন ও ওজন মাপার একটি যন্ত্র যা বর্তমানে অকেজো। এছাড়া প্যাথলজিক্যাল টেস্টের নেই কোনো যন্ত্রপাতি।
২০১৫ সাল থেকে দুজন চিকিৎসক নিয়ে যাত্রা শুরু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার। যাত্রালগ্ন থেকেই মেডিকেল সেন্টারটির জন্য রাখা হয়নি পর্যাপ্ত আর্থের বরাদ্দ। ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরেও চিকিৎসা যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে তা নিতান্তই অপ্রতুল।
প্রতিদিন ৪০ থেকে ৫০ জন শিক্ষার্থী এখানে চিকিৎসা নিতে আসেন। কিন্তু যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না তারা। শিক্ষার্থীদের এখানে কেবল প্রাথমিক চিকিৎসাই মেলে। তাই প্রয়োজনীয় স্যালাইন, নাপা, হিস্টাসিনসহ অল্প কয়েক প্রকার ওষুধ রয়েছে, বাকিটা ব্যবস্থাপত্রেই সীমাবদ্ধ।
মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসক ডা. মো. তানজীন হোসেন একুশে টেলিভিশনকে জানান, বর্তমানে মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদি না থাকার পরিপূর্ণ সেবা দেওয়া যাচ্ছে না।
বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য (দায়িক্তপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. এ কে এম মাহবুব হাসান একুশে টেলিভিশনকে বলেন, ‘মেডিকেল সেন্টারের সেবার মান বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছি। অবকাঠামো ও জনবল সংকটের কারণে আমরা কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না।’ তবে দ্রুত এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশার কথা বললেন উপাচার্য।
এমএস/