ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১০ ১৪৩১

আইনজীবীর পা ছুঁয়ে সালাম করলেন মিন্নি

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০২:০৭ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০২:৫৫ পিএম, ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার

বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার আসামি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি তার জামিন করানো আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে হাইকোর্টে আসেন। 

রোববার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে তার জামিনের পক্ষের আইনজীবী জেড আই খান পান্নার চেম্বারে আসেন তিনি। এ সময় মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর ও জামিন আবেদনের ফাইলিং আইনজীবী মাক্কিয়া ফাতেমা ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

জামিন পাওয়ায় মিন্নি চেম্বারে ঢুকেই তার আইনজীবী পান্নার পা ছুঁয়ে সালাম করেন। এ সময় নিজেদের মধ্যে সবাই একে অন্যের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

মিন্নির সঙ্গে সাক্ষাৎে শেষে আইনজীবী জেড আই খান পান্না বলেন,  ‘ডাক্তারের সঙ্গে পরামর্শের বিষয় আছে। আইনজীবীর সঙ্গে পরামর্শের বিষয় আছে। চার্জশিটের কথা তো আগাগোড়াই বলেছি, এটা একটা মনগড়া উপন্যাস। মূলত মূল আসামিদের এ মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার জন্য এ ধরনের কারবার করা হয়েছে। নাথিং নিউ। জজ মিয়া এবং জাহালমের আরেকটা সংস্করণ।

আদালতে মিন্নির দেওয়া জবানবন্দি প্রকাশের বিষয়ে এ সুপ্রিম কোর্টের এ আইনজীবী বলেন, দেখেছি। আমি তো কোর্টে বসেই দেখেছি। আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত যখন আমাদের দেখাতে দিতে বলেছিলো তখন এক নজর দেখেছি। সেটাও (১৬৪ ধারার জবানবন্দি) একটা উপন্যাস। সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি কোর্টকে বলেছেন-এতো সুন্দর করে লেখা যা চিন্তার বাইরে। সুস্থ মাথায় এতো সুন্দরভাবে লেখতে পারে না।

গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকাগামী একটি লঞ্চে বরগুনা ত্যাগ করেন মিন্নি। মিন্নির সঙ্গে ছিলেন তার নানা ও আরেক আত্মীয়।

এর আগে গত ২৯ আগস্ট মিন্নির জামিনের বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। তবে জামিনে মুক্ত হওয়ার পর মিন্নিকে মিডিয়ার সঙ্গে কথা না বলার নির্দেশ দেন আদালত।

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। গুরুতর আহত রিফাতকে ওইদিন বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ ও পাঁচ-ছয় জনকে অজ্ঞাত আসামি করে বরগুনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।

পরে ১৬ জুলাই সকাল পৌনে ১০টার দিকে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়। এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

পরদিন (১৭ জুলাই) মিন্নিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করা হলে বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এরপর কয়েকদফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় গত ১৮ আগস্ট দ্বিতীয় দফায় জামিন চেয়ে মিন্নি হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন।