ঢাকা, সোমবার   ২৫ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১১ ১৪৩১

বশেমুরবিপ্রবি উপাচার্যের অপসারণ চাওয়ার ১৬ কারণ

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ১২:০৪ পিএম, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্বাবিদ্যালয়ের উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে পঞ্চম দিনের মতো বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। আজ সোমবার ভোর রাত থেকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে এক দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে নিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শনিবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হলেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যাননি। উপাচার্য অধ্যাপক ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত যে পন্থাই প্রশাসন হাতে নিক না কেন আন্দোলন চলবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

উপাচার্যের অপসারণের একদফা দাবির নানা কারণ দেখিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। এসবের মধ্যে ১৬টি কারণ দেখিয়ে ছাপানো একটি চিঠি রবিবার (২২ সেপ্টেম্বর) শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিলি করা হয়েছে।

যে ১৬ কারণে উপাচার্যের অপসারণ চেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা সেগুলো হলো,

বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণকাজ শুরুর আগেই আড়াই কোটি টাকার নির্মাণ ব্যয় দেখানো, ভিসি কোটার নামে অসংখ্য ভর্তি বাণিজ্য এবং জালিয়াতি, অনৈতিকভাবে অযোগ্য বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষক নিয়োগ, বিগত ছয় মাসে অনৈতিকভাবে জিনিয়াসহ মোট ২২ শিক্ষার্থীকে শোকজ এবং ৮ জনকে বহিষ্কার করা, অভিভাবক ডেকে এনে অপমান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বয়স ৮ বছর পেরিয়ে গেলেও স্থায়ী কোনও শহীদ মিনার নেই, এখনও কাঠের শহীদ মিনার দিয়েই চালানো হচ্ছে, বিএনপিপন্থী ও দুর্নীতিবাজ ভিসি বাকৃবিতে বিএনপি মনোনীত সোনালী দলের হয়ে শিক্ষক সমিতির নির্বাচন, অতিরিক্ত ভর্তি ফি, সেমিস্টার ফি এবং বিভাগীয় উন্নয়ন ফি’র নামে জালিয়াতি, চাকরি দেওয়ার কথা বলে এক আয়াকে অন্তঃসত্ত্বা করা, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ, ভিসি ভবনে বিউটি পার্লার করে নারী কেলেঙ্কারি, বৃক্ষ রোপণের নামে কোটি টাকা আত্মসাৎ, ২ কোটি টাকার গোবর কেনার নামে দুর্নীতি, শিক্ষার্থীদের মত প্রকাশে বাধা, বাক স্বাধীনতা হরণ এবং ভিসির একচেটিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার, শিবচর ক্যাম্পাস নিয়ে কোটি টাকার দুর্নীতি।

উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেইসবুকে স্ট্যাটাসের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারের বিষয়ে দেশ ব্যাপি সমালোচনা হলে গত বুধবার সন্ধ্যায় তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয় প্রশাসন। তবে বুধবার রাতেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে বুধবার রাতেই ১৪টি সমস্যার সমাধান করার কথা উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তিও দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, নারী কেলেঙ্কারী, ভর্তি ও নিয়োগ দুর্নীতি, প্রকল্প দুর্নীতি, বাকস্বাধীনতা হরণ, শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা, আবাসন সংকট, বৃক্ষরোপনসহ বিভিন্ন খাতের মাধ্যমে অর্থ লোপাট, গুন্ডাবাহিনী তৈরিসহ নানা বিষয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে শনিবার হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া পরও শিক্ষার্থীরা আন্দোলন চালিয়ে নিলে হলের বিদ্যুৎ, পনি বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ দিনই আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর সন্ত্রাসী হামলায় অন্তত ৩০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ হামলার ঘটনার প্রতিবাদে সহকারী প্রক্টর মো. হুমায়ূন কবীর পদত্যাগ করেন। পরে এ হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তাদেরকে তদন্ত করে তারা আগামী ৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। ক্যাম্পাস উত্তাল থাকায় ক্যাম্পাসসহ বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

এমএস/