বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের শক্তিমত্তার পার্থক্য কতটা?
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৪৯ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার | আপডেট: ০৩:৫২ পিএম, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ মঙ্গলবার
ত্রিদেশীয় টি-টুয়েন্টি সিরিজের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে আজ মঙ্গলবার মুখোমুখি আফগানিস্তান-বাংলাদেশ। রাজধানীর মিরপুরের শেরে বাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
সাকিব নাকি রশিদ, কে নেবেন ত্রিদেশীয় সিরিজের শিরোপ? এ প্রশ্নের উত্তর পেতে অপেক্ষা করতে হবে আরও কয়েক ঘণ্টা। তার আগে জেনে নিই, টি-টোয়েন্টিতে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের শক্তিমত্তার পার্থক্য কতটা।
ত্রিদেশীয় সিরিজে তৃতীয় দলটি ছিল জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ মূলত জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুটি ও আফগানিস্তানের বিপক্ষে একটি ম্যাচে জয় পেয়ে ফাইনালে জায়গা নিশ্চিত করেছে। আফগানদের বিপক্ষে ২০১৪ সালের পর এটিই ছিল বাংলাদেশের প্রথম টি-টোয়েন্টি জয়।
এর মাঝে তিন ম্যাচের সিরিজে হোয়াইটওয়াশ এবং চলতি টি-টোয়েন্টি সিরিজের প্রথম ম্যাচে হেরে যায় সাকিব আল হাসানের দল।
সাধারণত, টেস্ট বা ওয়ানডে ক্রিকেটে দেখা হয় ব্যাটসম্যানের গড় কত, কত রান করছে সে দলের হয়ে, কিন্তু টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে মূল বিষয়বস্তু হয়ে ওঠে কত দ্রুত কত রান করছে। সেই হিসেবে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে আফগানিস্তান।
যে ছয়টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মুখোমুখি দেখা হয়েছে, তাতে রানের হিসেবে এগিয়ে আছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, সাকিব আল হাসানরা। কিন্তু টাইগার অধিনায়কের স্ট্রাইক রেট কোনমতে ১২০ পার করলেও রিয়াদ ও মুশফিকুর রহিমের স্ট্রাইক রেট ১২০ এর নিচে।
অন্যদিকে, মোহাম্মদ নবী যিনি দু’দলের মুখোমুখি দেখায় আফগানিস্তানের হয়ে সবচেয়ে বেশি রান করেছেন তার স্ট্রাইক রেট ১৩০ এর বেশ ওপরে। নবীর ক্যারিয়ার স্ট্রাইক রেট আরও বেশি, আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে প্রতি ১০০ বলে ১৪৬ রান তুলেছেন মোহাম্মদ নবী।
নিজেদের কন্ডিশনে স্পিন বোলিং বাংলাদেশের অন্যতম হাতিয়ার। কিন্তু আফগানিস্তানের বিপক্ষে এই জায়গায় বাংলাদেশ আছে পিছিয়ে।
সাকিব বিশ্ব ক্রিকেটের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি বোলার, উইকেটের হিসেবেও এখন বিশ্বের টি-টোয়েন্টি বোলারদের মধ্যে প্রথম তিনজনের একজন সাকিব কিন্তু সাকিবকে যথাযথ সঙ্গ দেয়ার মতো টি-টোয়েন্টি স্পিনার বাংলাদেশ দলে কম।
রশিদ খানকে কেন্দ্র করে আফগানিস্তানের বোলিং লাইন আপ গড়ে ওঠে, কিন্তু তার পাশাপাশি মোহাম্মদ নবী ও মুজিব উর রহমান নিয়ন্ত্রণ করেন রানের গতি।
বাংলাদেশ বনাম আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে, রশিদ খান, মুজিব উর রহমান এবং মোহাম্মদ নবী তিনজনই ওভারপ্রতি ৬ এর কম রান দিয়ে আসছেন। এমনকি মুজিব রান দিয়ে আসছেন ওভার প্রতি ৪ দশমিক ৭০। রশিদ এবং মুজিবের ক্যারিয়ার ইকোনমি রেটও ছয়ের নিচে।
২০ ওভারের খেলায় তিনজন রেগুলার স্পিনার ছয়ের নিচে রান দেয়ার ক্ষেত্রে নিয়মিত হলে প্রতিপক্ষের জন্য রান তোলা কঠিন হয়ে পরে স্বভাবতই।
তবে পেস বোলিং-এ আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে বাংলাদেশ। সাকিবের সঙ্গে বল করেন নিয়মিত সাইফুদ্দিন ও মুস্তাফিজুর রহমান। ক্যারিয়ারের শুরুর দিকে মুস্তাফিজুর রহমান সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ব্যাটসম্যানদের জন্য বেশ কঠিন এক বোলার ছিলেন কিন্তু চলতি বছরে মুস্তাফিজের বলার মতো পারফরম্যান্স নেই।
৩৪ ম্যাচে ৫২ উইকেট পাওয়া মুস্তাফিজুর রহমানের ইকোনমি রেট এখন ৭ দশমিক ৭৫। এর মধ্যে আফগানদের বিপক্ষে শেষ ম্যাচেও ৩ ওভার বল করে ৩১ রান দিয়েছেন মুস্তাফিজ।
তবে অভিজ্ঞতা বা পারফরম্যান্স সব দিক থেকেই আফগানিস্তানের এই দলের পেস বোলারদের চেয়ে এগিয়ে থাকবেন মুস্তাফিজুর রহমান, সাইফুদ্দিন, শফিউলরা।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট এবং দেশের ইতিহাসের অন্যতম সফল কোচ সালাউদ্দিন আহমেদ বলছেন, যদি টি-টোয়েন্টির কথা বলা হয় সেক্ষেত্রে আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে আছে। ওদের পাওয়ার হিটার অনেক বেশি, সেইসঙ্গে খেলা কন্ট্রোল করার মতো কোয়ালিটি স্পিনার আছে।
সালাউদ্দিনের মতে, টি-টোয়েন্টিতে খেলা নিয়ন্ত্রণ করতে হলে ভালো বোলার প্রয়োজন। আফগানিস্তানের বোলাররা খেলার মুড পরিবর্তন করতে পারে। প্রতিদিন আপনি সবাইকে মারতে পারবেন না, আপনাকে খেলার দিন সেই মুহূর্তে ঠিক করতে হবে কার বল আপনি মারবেন।
তিনি আরও বলেন, গত ম্যাচে সাকিব খুব ভালো ক্যালকুলেশন করেছে। একটু ম্যাচিওর্ড ব্যাটিং করলে বাংলাদেশের অনেক সুযোগ আছে। আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানদের অনেক উইক পয়েন্ট আছে, বাংলাদেশ যদি ওভাবে পরিকল্পনা করতে পারে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুযোগ বেশি থাকে।