ঢাকা, শুক্রবার   ২২ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জবির ফুটপাতের অর্ধশতাধিক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ

জবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত : ০১:৩৪ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বুধবার

দীর্ঘ ৪ দশক পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ফটক ঘেষে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে গতকাল মঙ্গলবার পুলিশ লালবাগ ডিভিশন, ট্রাফিক দক্ষিণ ও কোতয়ালি থানার সহযোগিতায় এসব স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল।

এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় ফটকে অবৈধ লেগুনা স্ট্যান্ড উচ্ছেদের মাধ্যমে এই অভিযান কার্যক্রম শুরু করেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. মোস্তফা কামাল বলেন, গত রোববার মালিকদের তাদের অবৈধ স্থাপনা উঠিয়ে নিতে বলা হয়। মঙ্গলবার ওই সব দোকান ও অবৈধ স্থাপনা সম্পূর্নভাবে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এর আগে পুলিশ লালবাগ ডিভিশন, ট্রাফিক দক্ষিণ ও কোতয়ালি থানায় উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করতে আমরা চিঠি দেই এবং তাদের সঙ্গে আমাদের বৈঠক হয়। উচ্ছেদ করা জায়গায় এখন সৌন্দর্য্যবর্ধন করা হবে। ইতিমধ্যে চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা কাজ শুরু করে দিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে আমরা সেখানে বসার জন্য ব্যবস্থা করে দেবো। শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন চলাফেরা নিশ্চিত করতে যা যা করা দরকার আমরা তা করবো। ভবিষ্যতেও যাতে এসব জায়গায় আর কোনও অবৈধ স্থাপনা গড়ে না উঠে সে ব্যাপারে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা যায়, স্বাধীনতার পর ১৯৭৮ সালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (তৎকালীন কলেজ) দ্বিতীয় ফটক বন্ধ করে টেম্পু স্টেশন গড়ে ওঠে। এরপর ২০০২ সালে তৎকালীন জগন্নাথ কলেজের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও সরকার দলীয় ছাত্র সংগঠনের নেতাদের প্রত্যক্ষ মদদে ফটক বন্ধ করে ‘বাহাদুর শাহ পরিবহণ’ নাম দিয়ে লেগুনা স্ট্যান্ড হিসেবে দখল করে। এর পাশাপাশি ফটকের পাশ ঘেষে গড়ে উঠে সেলুন, ভাতের হোটেল, ঘড়ির দোকান, চা দোকান ও ঘোড়ার গাড়ির স্ট্যান্ডসহ প্রায় অর্ধশতাধিক স্থাপনা। যা থেকে স্থানীয় ছাত্রনেতা ও পুলিশ প্রশাসন প্রতিমাসে মাসোয়ারা নিত বলে অভিযোগ আছে। ২০০৫ সালে জগন্নাথ কলেজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরিত হওয়ার আগে ও পরে বেশ কয়েকবার এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পরিকল্পনা করা হলেও ক্ষমতার দাপট ও বিভিন্ন দিক ম্যানেজ করে মালিক সমিতির লোকজন টিকিয়ে রাখে।

পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও সাত দফা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক তওসিব মাহমুদ সোহান বলেন, দীর্ঘদিন ধরে দ্বিতীয় ফটকের এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের দাবি জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। এরপর গত ১৭ সেপ্টেম্বর আমরা শিক্ষার্থীরা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে ফটক উন্মুক্ত করে দেই। এখন আমাদের শিক্ষার্থীদের অর্থায়নে দেয়ালে আল্পনা অঙ্কণসহ সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে।

এ বিষয়ে কোতয়ালি থানার ওসি শাহিদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার সকালে ডিসি ট্রাফিক দক্ষিণ, ডিসি লালবাগ ও কোতয়ালি থানার সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের ব্যাপারে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এরপর আমরা এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করি। এখন থেকে নিয়মিতভাবে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান চালানো হবে।