সম্রাটের খোঁজে...
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৩:৫২ পিএম, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
আত্মগোপনে থাকা ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটের খোঁজে মাঠে নেমেছে আইন শৃঙ্খালা বাহিনী। ইতোমধ্যে তাকে দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে।
রাজধানীর ক্লাবগুলোতে অবৈধ ক্যাসিনোর সঙ্গে যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট আত্মগোপনে আছেন। আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরাও তার বিষয়ে কোন ধরনের তথ্য দিতে পারছে না।
অনেক গণমাধ্যমে নিউজ প্রকাশ করেছেন চিকিৎসার নামে করে দেশ ত্যাগ করেছেন যুবলীগ নেতা সম্রাট। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দাবি দেশেই আছেন তিনি। এমনকি তাদের নজরদারির মধ্যেই আছেন। তার বিরুদ্ধে নিদিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে যে কোন সময় গ্রেফতার হতে পারে। তবে গ্রেফতার বিলম্বের কারণে অনেকেই সরকারকে সমালোচনা করছে।
যুবলীগ নেতাকর্মীরা জানান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতির কোথায় আছে, এসব তাদের জানা নেই। তিনি কার্যালয়েও যাচ্ছেন না। এমনকি তাকে বাড়িতেও পাওয়া যাচ্ছে না।
এর আগে যুবলীগ নেতা জি কে শামীম ও খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়ার নিজস্ব এবং পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়। ক্যাসিনো ব্যবসা, টেন্ডারবাজি, ঘুষ-দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের কয়েক ডজন নেতার বিরুদ্ধে একযোগে মাঠে নেমেছে দেশের প্রায় সব তদন্ত সংস্থা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এবারের অভিযান চালিয়ে যেতে এবং চাঁদাবাজ সন্ত্রাসী ও অপকর্মের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর মনোভাব অত্যন্ত কঠোর-এমন বার্তা দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তার কাছ থেকে সরকারের কঠোর মনোভারের কথা জানার পর দিশেহারা হয়ে পড়েন খোদ যুবলীগের এই নেতা। কি করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। আগে যারা তার কাছ থেকে সুবিধা নিয়েছেন এখন তাদের অনেকেই তাকে এড়িয়ে চলছেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, সম্রাট গ্রেফতার হলে অনেক প্রভাবশালীর নাম প্রকাশ হয়ে যাবে- এমন শঙ্কায় আছেন কিছু নেতা। তাদের কেউ কেউ সম্রাটকে পরামর্শ দিচ্ছেন, গ্রেফতার এড়িয়ে চলতে। তাদের পরামর্শে তিনি নিরাপদ স্থানে আত্মগোপন করেছেন। এ ধরনের নেতার পরামর্শে ও সহযোগিতায় তিনি দেশ ছাড়তে পারেন এমন শঙ্কায় আছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
তাদের মতে, দুর্নীতির চক্রে এদের অনেকেই সম্রাটের দোসর। কেউ কেউ বেশ প্রভাবশালী। তাদের হাতও অনেক লম্বা। এক্ষেত্রে তারা চাইলে বা একটু ঝুঁকি নিলে সম্রাটের জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন। তবে সম্রাটের দেশত্যাগের মতো তথ্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নেই।
উল্লেখ্য, গত বুধবার ঢাকার মতিঝিলের ফকিরাপুল ইয়ংমেন্স ও ওয়ান্ডারার্স ক্লাব এবং মুক্তিযোদ্ধা ক্রীড়া চক্রে র্যাবের অভিযানে অবৈধ ক্যাসিনো মেলার পাশাপাশি সেগুলো পরিচালনায় যুবলীগ নেতাদের জড়িত থাকার বিষয়টি প্রকাশ পায়।
ওই দিনই গ্রেফতার করা হয় যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়াকে, পরদিন কলাবাগান ক্লাব থেকে গ্রেফতার করা হয় কৃষক লীগের নেতা শফিকুল আলম ফিরোজকে। দুদিন পর গ্রেফতার করা হয় ঠিকাদার জি এম শামীমকে, যিনিও যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন।
অপরদিকে আজ ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে রাজধানীর গেন্ডারিয়া থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হক ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুপন ভূঁইয়াকে আটক করেছে র্যাব। মঙ্গলবার সকালে তাদের আটক করা হয়। এসময় তাদের কাছ থেকে নগদ ১ কোটি ৫ লাখ টাকা এবং বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ উদ্ধার করা।
টিআর/