দুরুদ পাঠের গুরুত্ব অপরিসীম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১২:০৪ পিএম, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ শুক্রবার
রাসূলে পাক হযরত মুহম্মদ (সা.) এর নাম উচ্চারণ করলে বা শুনলে দুরুদ পাঠ করা মুসলিমদের জন্য অতীব জরুরি। জীবনে অন্তত একবার হলেও দুরুদ শরীফ পাঠ করা ফরজ। অনেক বুযুর্গানে দ্বীন বলেছেন তাদের জীবনে কামালিয়াত ও বুযুর্গী অর্জিত হয়েছে বেশি বেশি দুরুদ শরীফ পাঠ করার ওসিলায়।
যদি কোন মজলিসে একাধিক বার রাসূল (সা.) এর নাম মোবারক উল্লেখ করা হয়, তাহলে একবার দুরুদ শরীফ পাঠ করা ওয়াজিব, অবশিষ্ট বারগুলোতে মোস্তাহাব। এক হাদিসে এসেছে যে, মজলিসে রাসূল (সা.) এর নাম মোবারক উচ্চারিত হয়, আর শ্রবণকারী রাসূল (সা.) ওপর দুরুদ শরীফ পাঠ না করলে সেই শ্রবণকারীর প্রতি আল্লাহর অভিশাপ নাজিল হয়।
একদিন রাসূলে করীম (সা.) বয়ান করার জন্য মেম্বরে উঠেছিলেন। মেম্বরের তিনটি ধাপের প্রতিটিতে উঠে আমীন বলেছেন। বয়ান শেষে এক সাহাবী জিজ্ঞাসা করেছিলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ, আপনি এমন একটা কথা বললেন যা কখনও শুনিনি এবং যা আমরা বুঝতেও পারিনি।
তখন রাসূল (সা.) ব্যাখ্যা করে বললেন, আমি যখন প্রথম ধাপে উঠেছিলাম তখন জিব্রাইল (আ.) বলেছিলেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক! যে রমজান পেয়েও নিজের পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে পারলো না। আমি ওই বদ-দোয়ার জবাবে বলেছি আমীন। দ্বিতীয় ধাপেও যখন উঠেছি তখন জিব্রাইল (আ.) বলেছেন, ওই ব্যক্তি ধ্বংস হোক যার সামনে আমার নাম (রাসূলের নাম) উল্লেখ হল আর সে দুরুদ শরীফ পাঠ করল না, আমি বলেছি আমীন। তৃতীয় ধাপে যখন উঠেছি তখন জিব্রাইল (আ.) বলেছেন, যে মাতাপিতা উভয়কে পেয়ে তাদেরকে খুশি করে জান্নাত লাভ করে নিতে পারলো সে ধ্বংস হোক, জবাবে আমি বলেছি আমীন।
এ থেকে বোঝা যায় রাসূল (সা.) এর নাম আসলে দুরুদ পাঠের গুরুত্ব কতোটা। তাই মুমিনের এই আমল থেকে বিচ্ছুত হওয়া মানে নিজের ধ্বংস ডেকে আনা।
দুরুদ পাঠ নিয়ে কিছু বিভ্রান্তি রয়েছে। তা হলো-
* অনেকে মনে করেন বিনা ওজুতে দুরুদ শরীফ পাঠ করা ঠিক নয়, তাদের কথা ভুল। বিনা ওজুতে আল্লাহর নাম নেয়া জায়েজ হলে এবং কোরআন শরীফ পড়া জায়েয হলে দুরুদ শরীফ কেন পাঠ করা যাবে না।
* অনেকে বলে থাকেন হাঁটতে-চলতে দুরুদ শরীফ পাঠ করা ঠিক নয়, এ কথাটাও ভুল। হাঁটতে-বলতে সর্বাবস্থায় দুরুদ পাঠ করা যায়। ভুল কথার পেছনে পড়ে দুরুদ পাঠের ফজিলত থেকে বঞ্চিত না হওয়াই ভাল।
দুরুদ পাঠের মধ্যে সর্বোত্তম হলো দুরুদে ইব্রাহীম। আমরা নামাযের মধ্যে যে দুরুদ শরীফ পাঠ করি, সেটাই দুরুদে ইব্রাহীম।
তথ্যসূত্র : মাওলানা মুহাম্মাদ হোয়েত উদ্দীনের আহকামুন নিসা গ্রন্থ।
এএইচ/