পুলিশ পরিচয় দেয়ায় রবিউলকে হত্যা করে ডাকাতরা
সাভার সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ০৭:১৩ পিএম, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ রবিবার
রাজধানী ঢাকার অদূরবর্তী আশুলিয়ার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশ থেকে হানিফ পরিবহনের কাউন্টার সুপারভাইজর রবিউল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আন্ত:জেলা পরিবহন ডাকাত দলের ৩ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাতে সিসিটিভির ভিডিও চিত্র ও মুঠোফোনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে সাভারের হেমায়েতপুরে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে পুলিশ। রাত সাড়ে ১১টায় আল-আমিন পরিবহনের ভেতরে মাদক সেবনরত অবস্থায় তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলো- খুলনা জেলার দিঘলিয়া থানার সেনাটি শিকদার মার্কেট এলাকার মৃত আলম খাঁ’র ছেলে কবির হোসেন ওরফে রুবেল (৩০), ঢাকা জেলার সাভার থানাধীন হেমায়েতপুর এলাকার আব্দুল গিয়ান মিয়ার ছেলে রবিউল (২০), একই এলাকার মতি মিয়ার বাড়ীর ভাড়াটিয়া নূর আলম হোসেনের ছেলে সাজিব হোসেন (২৪)।
নিহত মো. রবিউল ইসলাম আশুলিয়ার সিন্দুরিয়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। সে বাইপাইলে হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে সুপারভাইজর হিসেবে কাজ করত এবং পল্লী বিদ্যুৎ এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতো। গত বুধবার রাত দেড়টায় বাপাইলের হানিফ পরিবহনের কাউন্টার থেকে বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পথে খুন হন রবিউল।
আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ইন্টেলিজেন্স) ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তছলিম হোসেন এ প্রতিবেদকে জানান, রবিউলের লাশ উদ্ধারের পর থেকে খুনিদের কাছে পৌঁছতে বিভিন্ন সূত্রকে সামনে নিয়ে অভিযানে নামে পুলিশ।
এই কর্মকর্তা জানান, বাইপাইলসহ মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানের সিসিটিভি’র ভিডিও চিত্র দেখে প্রথমে রবিউলের বহনকারী আল-আমিন পরিবহনের বাসটিকে সনাক্ত করা হয়। এরপর শনিবার রাতে হেমায়েতপুর এলাকায় আল-আমিন পরিবহনের ভেতরে গাজা সেবনরত অবস্থায় তাদের আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা পুলিশের নিকট হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে বলেও জানান তিনি।
সুপারভাইজার রবিউলকে হত্যার কারণ সম্পর্কে তিনি আটককৃতদের বরাত দিয়ে বলেন, রবিউল প্রথমে নিজেকে পুলিশের লোক বলে পরিচয় দেন। ডাকাতদের ধারনা ছিল- রবিউলকে ছেড়ে দিলে তাদের ধরা পড়ার সম্ভাবনা আছে। সেই ভয়েই তারা হত্যা করে রবিউলকে।
তিনি দাবি করে বলেন, আটকৃত তিনজন ছাড়াও জড়িত আরও ডাকাতদের আইনের আওতায় আনতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে আটকৃতরা আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য। ডাকাতদের ব্যবহৃত আল-আমিন পরিবহনের বাসটিও জব্দ করা হয়েছে। আল-আমিন পরিবহনের বাসটি অবনী নীট ওয়্যার লিঃ নামের পোশাক কারাখানার শ্রমিক বহনে ব্যবহার করা হতো। ডাকাতির উদ্দেশ্যেই পরিবহনটি ব্যবহৃত হচ্ছিল।
পরিবহনে ডাকাতির ঘটনাগুলোতে মূলত: শ্রমিক পরিবহনের বাসগুলোই বেশি ব্যবহার করা হচ্ছে বলে পুলিশ দাবি করছে।
তিনি আরও বলেন, রবিউল বাসায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাইপাইল থেকে আল-আমিন পরিবহন নামক বাসে উঠেছিল। রবিউল বুঝতে পারেনি বাসে ডাকাত দল ছিল। বাসে ওঠার পর অন্যান্য যাত্রীর সাথে সেও ডাকাতদের কবলে পড়ে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের বিপরীতে ডেইরী ফার্মের সীমানা প্রাচীরের নিকট রবিউল ইসলামের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। প্রথমে রবিউলের স্বজনদের খোঁজ পায়নি পুলিশ। নিহতের পরিবারের সদস্যরা রবিউলকে না পেয়ে থানা পুলিশকে অবহিত করতে গিয়ে রবিউলের লাশটি দেখে সনাক্ত করেন। এরপর নিহতের পরিবার বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করলে খুনিদের গ্রেফতারে মাঠে নামে পুলিশ।
এনএস/