জেনে নিন গ্যাস-অম্বল থেকে মুক্তির পথ
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৯:০৮ এএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার
হজমের সমস্যায় ভোগেননি, এমন মানুষ মনে হয় খুঁজে পাওয়া কষ্টই হয়ে যাবে। আবার খাবার-দাবারের অনিয়ম থেকে সৃষ্টি হওয়া গ্যাস-অম্বলের সমস্যা যদি থাকে, তাহলে তো কথাই নেই। তখন হজমের সমস্যা আরও বাড়ে। তাই আগে থেকে সতর্ক হওয়া উচিত। গ্যাস-অম্বল নিয়ন্ত্রণে থাকলে হজমও হবে সহজে।
এবার জানা প্রয়োজন, কেন অম্বল হয়?
মানুষের শরীরে রয়েছে অম্ল এবং ক্ষার। এই অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে অম্লর পরিমাণ বেড়ে গেলে অ্যাসিডিটি হয়। বার বার ভাজাভুজি খাওয়ার ফলে অম্বল হতে পারে। হয়তো বিকেলের দিকে খিদে পেয়েছে, একটা শিঙাড়া খেয়ে নিলেন। তার আধা ঘণ্টা বাদে চা, মুড়িমাখা খেলেন। এতে কিন্তু অ্যাসিডের সম্ভাবনা বাড়ে। আপনি যত বার খাবেন, তত বার অ্যাসিড নিঃসৃত হয়। ফলে অ্যাসিডের পরিমাণ অতিরিক্ত হলেই বুক জ্বালা, চোঁয়া ঢেকুরের মতো সমস্যা হতে পারে।
জেনে নিন কিভাবে এই অম্বল থেকে মুক্তি পাবেন-
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেশির ভাগ বদহজম, গ্যাস, অম্বলের সমস্যায় মানুষ মুড়িমুড়কির মতো প্যান্টোপ্রাজল জাতীয় ওষুধ খান। এই ধরনের ওষুধ অ্যাসিডের ব্যালান্স নষ্ট করে দেয়। ফলে ভাল ব্যাকটিরিয়া নষ্ট হয়। এর ফলে হিতে বিপরীতও হয়। হাড় ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া, কিডনির সমস্যাও হতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ না নিয়ে এই ধরনের ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। জীবন যাপনে পরিবর্তন এনেই গ্যাস-অম্বল থেকে মুক্তি সম্ভব।
• প্রত্যেক দিন নির্দিষ্ট সময়ে খাবার খেতে পারেন। এতে শরীর তৈরি থাকবে খাবার হজমের জন্য।
• খাবারের মধ্যে কিছু পরিমাণ প্রোটিন রাখতে পারেন। এতে অ্যাসিড কাজে লেগে যাবে। প্রোটিন মানেই কিন্তু মাংস নয়। দুধ, ডাল, ছানা ইত্যাদি রাখতে হবে প্রতিদিনকার খাদ্য তালিকায়।
• খেতে বসার মিনিট দশেক আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিন। এতে অতিরিক্ত অ্যাসিড ওয়াশ আউট হয়ে যাবে। ফলে অ্যাসিডিটির সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।
• যাদের অ্যাসিডিটির ধাত আছে, তাদের অ্যান্টাসিড খেতে হবে। সেটা রাতে খেতে বসার আগে খেলেই বেশি কাজ হয়। সকালের পরে যেহেতু মানুষ দাঁড়িয়ে, বসে থাকে বা হাঁটাচলা করে, ফলে অ্যাসিড রিফ্লাক্সের সম্ভাবনা কম থাকে। বরং রাতে শুয়ে পড়লে উপরের দিকে অ্যাসিড উঠে আসার সম্ভাবনা বেশি। তাই রাতে অ্যান্টাসিড খেলেই উপকার বেশি।
এবার জেনে নিন গ্যাস কেন হয়-
অনেকে গ্যাস এবং অম্বলকে গুলিয়ে ফেলেন। তারা মনে করেন এ দুটি একই জিনিস। কিন্তু এই দুইয়ের যোগাযোগ নেই। গ্যাস হলে অম্বল নাও হতে পারে। গ্যাস হওয়ার কারণ ভিন্ন। প্রত্যেক দিন খাবার খাওয়ার সময়ে অনেক ফাইবার খাওয়া হয়। ইনটেস্টিনাল ব্যাকটিরিয়া বা এনজাইম যখন ফাইবার বার্ন করে, তখন বুদ্বুদের সৃষ্টি হয়। সেটাই গ্যাস আকারে মুখ দিয়ে বা পায়ুদ্বার দিয়ে নির্গত হয়। এই বায়ু নির্গত হওয়া শরীরের পক্ষে ভাল।
গ্যাস উপশমের উপায় জেনে নিন-
• প্রথমেই জেনে নিন বাঁধাকপি, ফুলকপি, পেঁয়াজ, রুটি, পালং শাক ইত্যাদি খাবারে গ্যাস বেশি হয়। এই ধরনের খাবার খেতে হলে দিনের প্রথমার্ধে খাওয়াই ভাল।
• রাতে রুটি খেলে ডিনার সারতে হবে রাত ন’টার মধ্যে। খেয়ে উঠে হাঁটার অভ্যেস থাকলে ভাল। ব্যায়াম ও শারীরচর্চা নিয়মিত জরুরি। নিজেকে যত সচল রাখবেন, গ্যাস তত কম হবে।
• দুধ ও দুগ্ধজাতীয় খাবার অর্থাৎ পনির, ছানা, চিজ খেলেও গ্যাস হয়। সে ক্ষেত্রে চিন্তা নেই। ল্যাকটো-এনজাইম খেয়ে নিতে পারেন। এতে কোন সাইড এফেক্ট নেই।
এএইচ/