অবশেষে পদত্যাগ করলেন উপাচার্য নাসির
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:১৬ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৬:১৮ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার
নানা আলোচনা সমালোচনা পর অবশেষে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক খোন্দকার নাসির উদ্দিন মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের আগেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন।
সোমবার দুপুরের পর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুল্লাহ আল হাসান চৌধুরীর কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। পরে তিনি সেটি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে হস্তান্তর করেন।
জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আমরা পেয়েছি। এ নিয়ে আলোচনা শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে উপাচার্যের পদত্যাগপত্র দেয়ার বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলেননি।
এর আগে তাকে প্রত্যাহারের সুপারিশ করেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। ভিসি নাসিরউদ্দিনের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ও নৈতিক স্খলন বিষয় খতিয়ে দেখতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করে ইউসিজি।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি, নারী কেলেঙ্কারিসহ নানা অভিযোগে উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিনের পদত্যাগ দাবিতে চলতি মাসের শুরুর দিক থেকে আন্দোলন চালিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এর মধ্যেই গত শুক্রবার স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ হলেও শনিবার সকাল ১০টায় প্রশাসন জানায়, ৩ আক্টোবর পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সাথে এক ঘণ্টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে হবে। কিন্তু তারা এই সিদ্ধান্ত না মেনে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। পরে আন্দোলনে যোগদানের উদ্দেশ্যে হল থেকে বের হলে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়েছেন অন্তত ৩০ জন। এ ঘটনার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন সহকারী প্রক্টর হুমায়ুন কবির।
গত রোববার খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আন্দোলনের মুখে ক্যাম্পাস বন্ধের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে এখনও আমরণ অনশন করছেন শিক্ষার্থীরা।
এদিকে শিক্ষার্থীদের মারধরের প্রতিবাদ ও উপাচার্য খন্দকার নাসির উদ্দিন আন্দোলকারীদের জানোয়ার বলায় তার কুশপুত্তলিকা পুড়িয়ে বিক্ষোভ করেছে, জাহাঙ্গীরনগর ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে উপাচার্য দাবি করছেন, এসব সরকার বিরোধীদের ষড়যন্ত্র। অভিযোগের ভিত্তি নেই।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর ফেইসবুকে স্ট্যাটাসের জের ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও একটি জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদক ফাতেমা-তুজ-জিনিয়াকে সাময়িক বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। বহিষ্কারের বিষয়ে দেশ ব্যাপি সমালোচনা হলে গত বুধবার সন্ধ্যায় তার বহিষ্কারাদেশ তুলে নেয় প্রশাসন। তবে বুধবার রাতেই উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।
পরে বুধবার রাতেই ১৪টি সমস্যার সমাধান করার কথা উল্লেখ করে একটি বিজ্ঞপ্তিও দেয়া বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার কথা বলছেন।
জানা যায়, বিএনপি-জামায়াত রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা, নারী কেলেঙ্কারী, ভর্তি ও নিয়োগ দুর্নীতি, প্রকল্প দুর্নীতি, বাকস্বাধীনতা হরণ, শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারা, আবাসন সংকট, বৃক্ষরোপনসহ বিভিন্ন খাতের মাধ্যমে অর্থ লোপাট, গুন্ডাবাহিনী তৈরিসহ নানা বিষয়ে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে।