অর্থলেনদেন ও কেনাকাটায় ‘ডিমানি’র যাত্রা শুরু
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৬:৫০ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ১১:২৯ পিএম, ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ সোমবার
অনলাইনে কেনাকাটা এবং অর্থ লেনদেনের সুবিধা নিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করল ডিমানি অ্যাপ। আজ সোমবার রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নিজেদের বাণিজ্যিক কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছে ডিমানি বাংলাদেশ লিমিটেড (ডিএমবিএল)।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডিমানির চেয়ারম্যান ও স্কয়ার গ্রুপের পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী, বাংলাদেশ ব্যাংকের পেমেন্ট সেবা বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. মেজবাউল হক, ডিমানির ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী সোনিয়া বশির কবির এবং প্রতিষ্ঠানটির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরেফ আর বশির।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে গণমাধ্যমকর্মী এবং ডিমানি’র মিডিয়া ও ব্যবসায়িক অংশীদাররা উপস্থিত ছিলেন। এ বছরের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে পেমেন্ট সার্ভিস প্রোভাইডার (পিএসপি) লাইসেন্স লাভ করে ডিএমবিএল।
ব্যবহারকারীর শুধুমাত্র ডিজিটাল পেমেন্টের প্রয়োজনীয়তাই নয় পাশাপাশি তাদের সর্বাধুনিক লাইফস্টাইল ও আর্থিক নানা সেবাদানের প্রত্যয় নিয়ে যাত্রা শুরু করলো দেশের নতুন ডিজিটাল পেমেন্ট অ্যাপ ডিমানি। যারা এতদিন ধরে একটি সেবাচালিত প্ল্যাটফর্মের কথা ভেবে এসেছিলেন, তাদের জন্যই ডিমানি।
ব্যবহারকারীরা সহজেই তাদের স্মার্টফোনে ডিমানি অ্যাকাউন্ট খুলে এর সাথে নিজেদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট যুক্ত করতে পারবেন। ব্যবহারকারীরা যেকোনো ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড থেকে ডি মানি অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়ে নিতে পারবেন।
টাকা পাঠানো ও গ্রহণ করা ছাড়াও ডিমানি অ্যাপে রয়েছে নানা ধরনের লাইফস্টাইল সেবা যেমন টপ-আপ, বিল পরিশোধ, টিকেটিং, ফুড, বিমা ও স্বাস্থ্যসহ ব্যবহারকারীদের প্রতিদিনকার প্রয়োজন মেটাতে অন-ডিমান্ড এবং ডে-টু-ডে সেবা।
কিউআর কোড এবং অনলাইন গেটওয়ের মাধ্যমে ডিমানি ব্যবহারকারীরা বিভিন্ন টাচ পয়েন্টে পেমেন্ট পরিশোধ করতে পারবেন। বর্তমানে, ২৫ শতাধিক অফলাইন এবং অনলাইন স্টোর ডিমানি’র পেমেন্ট গ্রহণ করছে।
ডিমানির রিটেইল কিউআর কোড ইএমভিসিও সমর্থনযোগ্য এবং শীর্ষস্থানীয় পেমেন্ট নেটওয়ার্ক ভিসা ও ইউনিয়ন পের সঙ্গে সংযুক্ত।
এছাড়াও দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যাংক ওয়ান ব্যাংক, ট্রাস্ট ব্যাংক এবং আল-আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের গ্রাহকরা ডিমানির কিউআর অ্যালায়েন্সের অংশ হবেন। এছাড়াও, ডিমানির পরিকল্পনা রয়েছে ২০২০ সালের মধ্যে এর কিউআর পেমেন্ট এক লাখে নিয়ে যাওয়ার।
অনুষ্ঠানে ডিমানির চেয়ারম্যান অঞ্জন চৌধুরী বলেন, আমরা দেশের দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও ডিজিটাইজেশন প্রত্যক্ষ করেছি। এ উন্নয়ন দেশের মানুষের জন্য আরও বেশি কিছু করতে আমাদের উৎসাহিত করেছে। আমরা এমন একটি প্ল্যাটফর্ম নিয়ে এসেছি যা মানুষের এ অগ্রগতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। এটা বাংলাদেশিদের জন্য অত্যন্ত গর্বের মুহূর্ত।
বাংলাদেশিদের দ্বারা তৈরি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে আধুনিক অ্যাপ ডিমানি এটা উল্লেখ করে প্রযুক্তিখাতের অন্যতম ব্যক্তিত্ব ডিমানির ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া বশির কবির বলেন, আমরা প্রযুক্তিকে দেখি সমস্যার সমাধান হিসেবে। এছাড়া সমস্যার সমাধানে সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং বিষয় হচ্ছে বাড়ি-ঘর এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসাকে ঘিরে ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা এবং তাদের প্রয়োজনীয় সকল পণ্য ও সেবা প্রদান করা যা তাদের নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সফল হতে সহায়তা করবে। আমরা ডিমানি নিয়ে আসতে পেরে আনন্দিত।
তিনি বলেন, ডিমানি ডিজিটাল অ্যাডাপশনকে সহজ করবে এবং মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আমরা আমাদের নিয়ন্ত্রক বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ জানাই আমাদের ওপর আস্থা রাখার জন্য। আমি আত্মবিশ্বাসী, ডিমানি এ আস্থার প্রতিফলন ঘটাবে।
ডিমানির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরেফ বশির বলেন, ডিমানি সকল ডিজিটাল পেমেন্টের প্ল্যাটফর্ম ও লাইফস্টাইল অ্যাপ। এ প্ল্যাটফর্ম ইকোসিস্টেম নির্মাণে কাজ করবে কেননা ডিমানি বিশ্বাস করে, প্রযুক্তি ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে একসাথে কাজ করার মাধ্যমে ‘ক্যাশ ইকোনোমি’ থেকে ‘ডিজিটাল ইকোনোমি’তে রূপান্তরের বাধা দূর করা সম্ভব।
ডিমানি অ্যাপে রয়েছে লাইফস্টাইল ও পেমেন্টের বিস্তৃত সুবিধা। পাশাপাশি, এ অ্যাপে রয়েছে সেবার পরিসর বাড়ানোর সুযোগ যাতে আমরা ব্যবহারকারীদের নানা সেবা প্রদানে এ অ্যাপকে প্রতিনিয়ত সমৃদ্ধ করতে পারি। আমরা এখনও ক্যাশ ইকোনোমির মধ্যেই বসবাস করি।
আর ডিমানি ব্যবহারকারীদের প্রয়োজন মেটাতে নিরাপত্তা এবং নানা পরিসরের সেবা সহজলভ্য করার মাধ্যমে ডিজিটাল রূপান্তরের ইতিবাচক অবদান রাখতে চায়। এ প্রক্রিয়ার রয়েছে পেমেন্ট সুবিধায় কিউআর সংযুক্ত করে মার্চেন্টদের ডিজিটাইজেশন এবং তাদের এ প্ল্যাটফর্মের সাথে যুক্ত করা।
আমাদের দেশের একদল মেধাবী প্রকৌশলী এ অ্যাপ ডেভেলপ করেছে। ডিমানির কার্যক্রম শুরু করতে পেরে আমরা একইসাথে রোমাঞ্চিত ও গর্বিত এবং আমাদের বাজার ও এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে আশাবাদী।
সোনিয়া বশির কবির বলেন, ডিমানি ডিজিটাল রূপান্তরে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে চায়। আমরা পেমেন্ট সহ অন্যান্য সেবায় সকলের সুযোগ নিশ্চিত করতে চাই। আমরা আশাবাদী, সুবিধাবঞ্চিতদের সামাজিক ক্ষমতায়নে ডি মানি অন্যতম প্রভাবক হিসেবে কাজ করবে।
অনুষ্ঠানে আরেফ বশির অ্যাপের ফিচারগুলো দেখান এবং ডিমানির নিয়ে আসার ক্ষেত্রে এর পেছনের ভাবনাকে সবার সামনে তুলে ধরেন। তিনি ওয়ালেট ট্রান্সফার দেখান, যার বিভিন্ন উদ্ভাবনী ফিচারের মধ্যে রয়েছে ‘ট্রানজেকশন ইউসেজ ড্যাশবোর্ড এবং পিটুপি ও পিটুবি’র ক্ষেত্রে ‘রিকোয়েস্ট মানি উইথ ইনভয়েস’ অপশন।
সবার সামনে তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিমালা অনুসরণ করা দেশের প্রথম ইন্টারোপেরেবল কিউআর দেখান যেখানে ইন্টারন্যাশনাল কার্ড স্কিম এবং বিভিন্ন পার্টনার ব্যাংক রয়েছে। অ্যাপ স্টোর এবং গুগল প্লে স্টোর দুই জায়গা থেকেই ডিমানি ডাউনলোড করা যাবে। অ্যাপটি অ্যান্ড্রয়েড ৪.০ এবং আইওএস ৬ এবং এর ওপরের সংস্করণের ডিভাইসে চলবে।
আরকে//