গণরুমের সমাধান না হলে ভিসির বাসভবনে থাকার আল্টিমেটাম
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৮:৫২ পিএম, ১ অক্টোবর ২০১৯ মঙ্গলবার
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট ও গণরুম সমস্যা সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) সদস্য তানভীর হাসান সৈকত। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান না হলে গণরুমের শিক্ষার্থীদের নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনে থাকার আল্টিমেটাম দিয়েছেন সৈকত।
আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে গণরুম সমস্যা সমাধান ও নবীন শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে ভর্তির দাবিতে এক ছাত্রসমাবেশ থেকে এই আলটিমেটাম দেন ডাকসু সদস্য তানভীর।
সৈকত উপাচার্যকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, ‘আপনি যদি আমাদের গণরুম সমস্যা সমাধানের জন্য আগামী ১৫ দিনের মধ্যে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করেন, তাহলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যত গণরুমের শিক্ষার্থী আছে, যারা গণরুমে থাকে, তারা সবাই গিয়ে আপনার বাসায় উঠবে।’
সৈকত উপাচার্যের বাসভবনে ওঠার আল্টিমেটাম দিয়ে বলেন, ‘এখান থেকে বলছি, ১৫ দিন সময়। ১৫ দিন থেকে একদিনও এদিক-ওদিক হবে না। ১৫ দিনের মধ্যে যদি গণরুম সমস্যা সমাধানের জন্য কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ না নিয়ে থাকেন তাহলে ১৫ দিন পরে এই গণরুমবাসী শিক্ষার্থীরা আপনার বাসায় গিয়ে উঠবে।’
উপাচার্যের উদ্দেশে সৈকত আরও বলেন, ‘কী রকম অভিভাবক হয়েছেন আপনি? একটা সন্তান না ঘুমানো পর্যন্ত অভিভাবকের ঘুম আসা উচিত না। সেখানে সন্তানরা না ঘুমিয়ে রাস্তায় রাত্রি যাপন করে, মসজিদে ঘুমায়, না ঘুমিয়ে পরের দিন সকালে ক্লাস করে। তাদের কথা চিন্তা না করে আপনি কিভাবে এসি রুমে ঘুমাচ্ছেন?’
এসময় ক্যাম্পাসের সক্রিয় ছাত্রসংগঠনগুলোর নেতারা ব্যাক্তিগত রাজনীতি নিয়েই ব্যস্ত বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সৈকত। এছাড়া গণরুম সমস্যা সমাধানে ডাকসুর নেতাদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।
সদস্য তানভীর হাসান যে আলটিমেটাম দিয়েছেন, এর সঙ্গে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন ডাকসুর ভিপি নুরুল হক। নুরুল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি অনাস্থা থেকেই তানভীর এই আলটিমেটাম দিয়েছেন। তাঁর দাবির প্রতি আমি সমর্থন জানাচ্ছি। গণরুম সংকটের আশু সমাধান না করলে শুধু উপাচার্যের বাসভবনে নয়, শিক্ষার্থীদের আমি হল প্রাধ্যক্ষ, আবাসিক শিক্ষকসহ যাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক সুবিধা ভোগ করেন, তাঁদের বাসভবনে গিয়ে ওঠার আহ্বান জানাব।’
ছাত্র সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন আবাসিক হলের গণরুমের অর্ধশতাধিক উপস্থিত শিক্ষার্থীরা ‘আমরা এখন চুপসে গেছি, জ্ঞানশূন্য কালো মাছ’, ‘গণরুমের বঞ্চনা, মানি না মানবো না’, ‘প্রথম বর্ষ থেকে বৈধ সিটের অধিকার চাই’ ইত্যাদি লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন।
ডাকসু নির্বাচনের সময় প্রায় প্রতিটি প্যনেলের নেতারা তাদের ইশতেহারে গণরুম সমস্যা সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিলে ও অর্ধবছরেও এই সমস্যা সমাধানে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় প্রতিবাদ হিসেবে গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে নিজের বৈধ সিট ছেড়ে দিয়ে গণরুমে থাকছেন ডাকসু সদস্য সৈকত। গত ৩ সেপ্টেম্বর সাময়িকভাবে গণরুম সমস্যা সমাধানে কয়েকটি প্রস্তাব সংবলিত একটি স্মারকলিপিও উপাচার্যের কাছে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এখনও গণরুম সমস্যার সমাধানে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় ধারাবাহিকভাবে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন এই নেতা।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় ডাকসু'র সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) সাদ্দাম হোসাইন
গণরুমে শিক্ষার্থীদের জীবনমান উন্নয়নে দ্বিতল বেড, ক্যাবিনেট, পৃথক পাঠ কক্ষ, ফ্যান, ইন্টারনেট সুবিধা প্রভৃতি বৃদ্ধির মাধ্যমে গণরুমকে বন্ধুরুমে পরিণত করার লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহন ও প্রভোস্ট কমিটির মাধ্যমে এসব বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছেন।
এসি