টাকা না পেয়ে স্ত্রীর গায়ে আগুন দিলো স্বামী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:৩৪ পিএম, ২ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
সেলাই কাজের পারিশ্রমিক হিসেবে পাওয়া ৯'শ টাকা না দেয়ায় স্ত্রীর গায়ে আগুন দিয়েছে এক পাষণ্ড স্বামী। পরে অগ্নিদগ্ধ গৃহবধূ ইসমত আরাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মঙ্গলবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মেকুরটারি গ্রামে এ নৃশংস ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ওই রাতে টাকা নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্ত্রীর গায়ে কোরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয় স্বামী শহিদুল। এতে ইসমত আরার শরীরের বুক থেকে নাভি পর্যন্ত অংশ ঝলসে যায়। পরে স্বজনরা তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে ভর্তি করে দেয়।
পরিবারসূত্রে জানা গেছে, পাঁচ বছর আগে রংপুরের শ্যামপুর এলাকার ইসমত আরার সঙ্গে কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার মেকুরটারি গ্রামের নির্মাণ শ্রমিক শহিদুলের বিয়ে হয়। তাদের সংসারে চার বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে।
দগ্ধ ইসমত আরা জানান, কিছুদিন ধরে স্বামী শহিদুল তাকে প্রায়ই টাকার জন্য চাপ দিতো। কয়েকদিন আগে সেলাই কাজ করে মজুরি হিসেবে ৯ শত টাকা পেয়েছিলেন। এই টাকার মধ্যে ৮০০ টাকা তিনি পাওয়নাদারকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু শহিদুলকে ওই টাকা না দেয়ায় তাদের মধ্যে মনোমালিন্য চলছিলো।
সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে এ নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে ইসমত আরার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন স্বামী শহিদুল। তখন জীবন বাঁচাতে নিজের শরীরে পানি ঢালেন ইসমত আরা। পরে তার ভাসুর এসে তাকে গুরুত্বর অবস্থায় সদর হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করান।
বুধবার দুপুরে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের গাইনী সার্জারি ওয়ার্ডে গিয়ে দেখা যায়, দগ্ধ ইসমত আরা অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরালেও পাশে নেই তার কোন স্বজন। বুকের নিচ থেকে নাভির উপর পর্যন্ত পুরোটাই বড় বড় ফোসকা পড়ে জ্বালা-যন্ত্রনা করছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকে উধাও হয়ে গেছেন তার স্বামী শহিদুল। গভীর রাতে তার ভাসুর আশরাফুল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। আর সকালে শাশুড়িও এসেছিলেন। কিন্তু পরে তারাও সটকে পড়েছেন। খবর দেয়া হলেও তখনও এসে পৌছেনি ইসমত আরা বাবা-মা। তাকে দেখাশোনা করছেন পাশের বেডের এক রোগীর স্বজন।
কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. আবু মো: জাকিরুল ইসলাম জানান, ইসমত আরার শরীরের ১০ ভাগ পুড়ে গেছে। আশা করা যায় তিনি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠবেন। তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও ওষুধ দেয়া হচ্ছে। সরবরাহ নেই এমন ওষুধ কেনার জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহায়তা নেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে রাজারহাট থানার ওসি কৃষ্ণ কুমার সরকার বলেন, ‘বিষয়টি জানতে পেরে একজন অফিসারকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এনএস/