ঢাকা, বুধবার   ২৭ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ১২ ১৪৩১

প্রবাসীদের রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া শুরু

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০১:২৫ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার

চলতি বছরের বাজেট অনুযায়ী বৈধ উপায়ে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্সে ২ শতাংশ প্রণোদনা দেয়া শুরু হয়েছে। 

বুধবার (২ অক্টোবর) সচিবালয়ে মন্ত্রীপরিষদ সভাকক্ষে ২০ তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রীসভা কমিটির বৈঠক শেষ এ কথা জানান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তাফা কামাল। 

অর্থমন্ত্রী বলেন, রেমিট্যান্সকে বৈধ চ্যানেলে আনতে উৎসাহিত করার জন্য ২ শতাংশ নগদ সহায়তার দেয়ার জন্য ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেটে ঘোষণা দিয়েছিলাম। সিস্টেম ডেভেলাপ করার জন্য এটা বাস্তবায়নে আমাদের সময় লেগে গিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে কেউ ব্যাংকে গেলে রেমিট্যান্স পাঠাতে পারবে এবং ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তাও পাবে।

তিনি বলেন, গত তিন মাসে অর্থাৎ ১ জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যত রেমিট্যান্স বাংলাদেশে পাঠিয়েছে তাদের সে ক্লেমটা রয়েছে। তারাও ২ শতাংশ হারে নগদ সহায়তা পাবেন। এ সিস্টেমটি পুরোপুরি চালু হতে হয়তো দু-একদিন সময় লাগতে পারে। তারপরও সারা বিশ্বে আমাদের রেমিট্যান্স আহরণে যেসব এজেন্সি কাজ করে এটি কার্যকরের জন্য তাদের আমরা বিষয়টি অবহিত করেছি। তারা যেন এটি বাস্তবায়নে কোনো কালক্ষেপণ না করে।

মোস্তফা কামাল বলেন, ‘১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার প্রতি ট্রান্সজেকশনে কোনো প্রশ্ন করা হবে না, কোনো কাগজ চাওয়া হবে না। ১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার বেশি হলে কাগজপত্র দেখাতে হবে। তবে একজন যদি তিন তিনবার রেমিট্যান্স পাঠায় এবং সেটা যদি ১ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলারের মধ্যে থাকে তাহলে কোনো প্রশ্ন করা হবে না, কোনো কাগজও দেয়া লাগবে না।’

তিনি আরও বলেন, এ ঘোষণা দেয়ায় অনেক কাজে এসেছে। এর ফলে গত তিন মাসে প্রায় ১৫-১৬ শতাংশ রেমিট্যান্স প্রবৃদ্ধি হয়েছে। আগে প্রতিবছর ১৫ থেকে ১৬ বিলিয়ন রেমিট্যান্স আসত। এবার সেটি ১৮ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি। 

এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে নীতিমালা সংক্রান্ত একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। 

নীতিমালায় বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্ট সবপক্ষ দেশে নিবিড়ভাবে রেমিট্যান্স প্রেরণকে অগ্রাধিকার দিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রবাসীদের বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠানোকে আরও উৎসাহিত করতে বাংলাদেশ সরকার রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে ২ (দুই) শতাংশ হারে নগদ সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। 

সরকারের সিদ্ধান্তক্রমে বাংলাদেশ ব্যাংক গত ৬ আগস্ট, ২০১৯ সার্কুলার নং-৩১ এর মাধ্যমে ‘বৈধ ওপায়ে রেমিট্যান্স প্রেরণের বিপরীতে প্রণোদনা/নগদ সহায়তা প্রদানের নীতিমালা’ জারি করে। জারিকৃত নীতিমালায় ব্যাংকসমূহকে অগ্রিম আকারে প্রাপ্যতা অনুযায়ী ফান্ড প্রদান করার বিধান রয়েছে। এ প্রণোদনা ১ জুলাই ২০১৯ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্সের ওপর কার্যকর হবে।

নীতিমালায় উল্লেখযোগ্য অনুচ্ছেদগুলো হলো-

১। (ক) বিদেশ থেকে পাঠানো প্রবাসী বাংলাদেশিদের রেমিট্যান্সের ক্ষেত্রে রেমিট্যান্স আহরণকারী ব্যাংক প্রযোজ্য বিনিময়হারে টাকায় রূপান্তরিত অর্থ প্রচলিত বিধিবিধান পরিপালন করতঃ উপকারভোগীর হিসাবে জমা/উপকারভোগীকে প্রদানের সময় উক্ত অর্থের ওপর ২ (দুই) শতাংশ হারে নগদ সহায়তা প্রদান করবে;

(খ) বাংলাদেশস্থ ব্যাংকের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তির আওতায় পরিচালিত বিদেশি এক্সচেঞ্জ হাউজ/ব্যাংকের মাধ্যমে আলোচ্য অর্থ প্রত্যাবাসিত হতে হবে;

(গ) একজন প্রবাসীর রেমিট্যান্সের ওপর প্রতিবারে সর্বোচ্চ মার্কিন ডলার ১৫০০ (এক হাজার পাঁচশত)/সমমূল্যের অর্থের জন্য উল্লিখিত হারে কোনো প্রকার কাগজপত্র ব্যতিরেকে প্রণোদনা সুবিধা প্রযোজ্য হবে;

(ঘ) ১ (গ) তে উল্লিখিত পরিমাণের বেশি লেনদেনের প্রাপককে রেমিট্যান্স প্রেরকের বৈধ কাগজপত্র (যেমন: পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতা কর্তৃক প্রদত্ত নিয়োগপত্রের কপি/বিএমইটি প্রদত্ত সনদপত্রের কপি, ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তির ক্ষেত্রে ব্যবসার লাইসেন্সের কপি ইত্যাদি) রেমট্যিান্স প্রদানকারী ব্যাংক শাখায় দাখিলসাপেক্ষে নগদ সহায়তা দেওয়া যাবে;

২। বিধিবহির্ভূতভাবে প্রণোদনা/নগদ সহায়তার নামে অর্থ প্রদান করলে প্রদত্ত অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে রক্ষিত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাব বিকলনপূর্বক আদায় করা হবে। অনিয়মের সঙ্গে জড়িত ব্যাংক কর্মকর্তা/কর্মচারীদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

৩। ১(ঘ) তে উল্লিখিত শর্ত মোতাবেক প্রাপক কর্তৃক রেমিট্যান্স গ্রহণের দিন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করা সম্ভব না হলে পরবর্তী ১৫ (পনের) কর্মদিবসের মধ্যে তা উপস্থাপন করলে রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংক তাকে প্রাপ্য নগদ সহায়তা দেবে।

আই/