জাবি উপাচার্যকে অপসারণে আন্দোলনকারীদের নতুন কর্মসূচি
জাবি সংবাদদাতা
প্রকাশিত : ১০:৪৩ পিএম, ৩ অক্টোবর ২০১৯ বৃহস্পতিবার
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ফারজানা ইসলামের অপসারণের দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দিনের ধর্মঘট পালন করেছে। পূর্ব ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে টানা দুই দিনের ‘সর্বাত্মক ঘর্মঘট’ পালন শেষে পূজার ছুটির মধ্যে ও ছুটি শেষে নতুন কর্মসূচির ঘোষণা দেন তাঁরা। এছাড়া আন্দোলনের যৌক্তিকতা ও উপাচার্যের দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরে মহামান্য আচার্য (রাষ্ট্রপতি) বরাবর চিঠি পাঠিয়েছেন বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ও পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট শুরু করেন ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
সকাল আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক নূরুল আলম এবং ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ নতুন প্রশাসনিক ভবনে প্রবেশের চেষ্টা করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের বাধার মুখে ফিরে যান তাঁরা। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও কার্যালয়ে প্রবেশ করতে না পেরে বাইরে অপেক্ষা করছেন। অনুষদ ভবনগুলোর ফটকেও ধর্মঘটের ব্যানার ঝুলতে দেখো গেছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ আছে। তবে বিভিন্ন বিভাগ ও ইনস্টিটিউটের পূর্ব নির্ধারিত চূড়ান্ত পরীক্ষা ধর্মঘটের আওতামুক্ত ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্যের (রাষ্ট্রপতি) কাছে উপাচার্যকে পদত্যাগ দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরে চিঠি দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন আন্দোলনের মুখপাত্র অধ্যাপক রায়হান রাইন। তিনি বলেন, উপাচার্যের দুর্নীতি ও আন্দোলনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মহামান্য আচার্য বরাবর ফ্যাক্স করে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তবে তিনি চিঠি পেয়েছেন কিনা সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
নতুন কর্মসূচির বিষয়ে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম অনিক বলেন, কাল শুক্রবার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে শারদীয় দূর্গাপূজা ছুটি শুরু হয়ে চলবে ১৪ অক্টোবর পর্যন্ত। ছুটির এই সময়ের মধ্যে সংবাদচিত্র ও আলোকচিত্র প্রদর্শন করবো আমরা। ছুটি শেষে আগামী ১৫ অক্টোবর পদযাত্রা ও সমাবেশ, ১৬ অক্টোবর বিক্ষোভ মিছিল, ১৭ অক্টোবর সংহতি সমাবেশ কর্মসূচি পালন করা হবে।
এদিকে আন্দোলনকারীদের দুর্নীতির অভিযোগ ‘মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ আখ্যা দিয়ে গতকাল দিনব্যাপী গণসংযোগ কর্মসূচি পালন করেন উপাচার্যপন্থি শিক্ষকেরা। সকাল সাড়ে দশটা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ কর্মসূচি পালন করে উপাচার্যপন্থি শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদ’।
এসময় শিক্ষকরা বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগে গিয়ে আন্দোলনকারীদের দাবি ‘অযৌক্তিক ও ষড়যন্ত্রমূলক’ উল্লেখ করে প্রচারপত্র বিলি করেন।
সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মান্নান চৌধুরী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়কে অস্থিতিশীল করার জন্য বার বার একটি গোষ্ঠী চক্রান্ত করছে। উপাচার্য ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের ওপর দুর্নীতির অবিশ্বাস্য অভিযোগ তুলে উন্নয়ন কাজকে বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।
গণসংযোগ কর্মসূচীতে অধ্যাপক এ এ মামুন, অধ্যাপক আবদুল্লাহ হেল কাফী, অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, অধ্যাপক মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক রাশেদা আখতার, অধ্যাপক আকবর হোসেন, অধ্যাপক মো. খালিদ কুদ্দুসসহ প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকা অংশগ্রহণ করেন।
আরকে//