ভারতের ৫০ বিশিষ্টজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা!
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৫:৩৭ পিএম, ৪ অক্টোবর ২০১৯ শুক্রবার
ভারতজুড়ে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খোলা চিঠি দিয়েছিলেন দেশটির ৫০ বিশিষ্টজন। গত জুলাইয়ে দেয়া ওই চিঠির জেরে ঐতিহাসিক রামচন্দ্র গুহ, অভিনেত্রী-পরিচালক অপর্ণা সেন, মনিরত্নম, অনুরাগ কাশ্যপ, অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়সহ দেশটির ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার একটি এফআইআর দায়ের করা হয়েছে বিহারের মুজফ্ফরপুরে।
প্রধানমন্ত্রীকে বিশিষ্টজনদের এই চিঠি পাঠানোর বিষয়টি নিয়ে মুজফ্ফরপুরের মুখ্য বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (সিজেএম) সূর্যকান্ত তিওয়ারির কাছে মাস দুয়েক আগে একটি পিটিশন দাখিল করেন আইনজীবী সুধীরকুমার ওঝা। সেই পিটিশনের ভিত্তিতে গত ২০ অগস্ট একটি নির্দেশ দেন সিজেএম সূর্যকান্ত তিওয়ারি। সেই নির্দেশকে হাতিয়ার করেই বৃহস্পতিবার সদর পুলিশ স্টেশনে এফআইআর দায়ের করেছেন সুধীরকুমার।
এফআইআর নিয়ে ওই আইনজীবী বলেছেন, ‘‘আমার পিটিশন গ্রহণ করে সিজেএম গত ২০ অগস্ট একটি নির্দেশ দেন। সেই সূত্র ধরেই বৃহস্পতিবার সদর পুলিশ স্টেশনে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে।’’
যে চিঠি নিয়ে এত শোরগোল সে বিষয়ে সুধীরকুমার বলেছেন, ‘‘ওই চিঠিতে স্বাক্ষরকারীরা দেশের মানুষকে কলঙ্কিত করতে চেয়েছেন এবং প্রধানমন্ত্রীর চেষ্টাকে খাটো করে দেখাতে চেয়েছেন।’’ এমনকি ওই চিঠির মাধ্যমে বিশিষ্টদের বিচ্ছিন্নতাকামী মানসিকতাও ফুটে উঠেছে বলে জানিয়েছেন ওই আইনজীবী।
এর আগে গত ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন দেশের প্রায় ৫০ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি। সেই চিঠিতে স্বাক্ষর ছিল রামচন্দ্র গুহ, অপর্ণা সেন, মণিরত্নম, সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, শুভা মুদগল, অনুরাগ কাশ্যপ, শ্যাম বেনেগলের মতো সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশিষ্টদের।
ওই চিঠিতে বলা হয়েছিল, ‘দুঃখজনকভাবে জয় শ্রীরাম এখন উত্তেজনামূলক যুদ্ধের হুঙ্কারে পরিণত হয়েছে। যার জেরে আইনশৃঙ্খলার সমস্যা হচ্ছে এবং রাম নাম নিয়ে অনেক জায়গায় গণপিটুনির ঘটনাও ঘটছে। এটা দুঃখজনক যে, ধর্মের নাম নিয়ে হিংসার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। এটা মধ্যযুগ নয়! রামচন্দ্রের নাম ভারতের বেশিরভাগ মানুষের কাছে পবিত্র। দেশের সর্বোচ্চ শাসক হিসেবে আপনার উচিত, এই ধরনের ঘটনা বন্ধ করা।’
এদিকে বিশিষ্টজনদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে বিহার পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহ, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত, শান্তিভঙ্গে প্ররোচনা দেওয়ায় ওই এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। সূত্র- আনন্দবাজার।
এনএস/