শিল্পী সমিতির ফান্ড নিয়ে রিয়াজ-মিশার দ্বন্দ্ব চরমে
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০২:০৪ পিএম, ৫ অক্টোবর ২০১৯ শনিবার
জমে উঠেছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী আমেজ। পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও মন্তব্যে বিএফডিসি প্রাঙ্গান এখন গরম। এরই মধ্যে বর্তমান কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে শুরু হয়েছে গুঞ্জন।
গতকাল সকালে অনুষ্ঠিত হয়েছে কমিটির বার্ষিক সাধারণ সভা। সেই সভায় কথা বলতে না দেওয়ায় সভা থেকে বেরিয়ে গেছেন বর্তমান কমিটির সহ-সভাপতি চিত্রনায়ক রিয়াজ। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে হৈচৈ। সেই সঙ্গে বর্তমান কমিটির আয়-ব্যয়ের হিসাব নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য।
জানা গেছে, ওই সভায় রিয়াজ কথা বলার জন্য বারবার সুযোগ চান। প্রায় আধা ঘণ্টা তিনি এই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাকে কথা বলতে দেওয়া হয়নি। আর তা নিয়ে শুরু হয় হইচই।
এ বিষয়ে রিয়াজ বলেন, ‘কমিটির কোষাধ্যক্ষ যে আয়-ব্যয়ের হিসাব দিয়েছেন, তা আমার কাছে পরিষ্কার না। দুই বছরে অনুদান হিসেবে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি সংগ্রহ করেছে ৫৮ লাখ টাকার বেশি। শিল্পীদের জন্য খরচ হয়েছে ২ লাখ ৯১ হাজার ৩০০ টাকা। এই সহযোগিতার খরচ কি আরো বাড়ানো যেত না? আর পিকনিক বা ইফতারের অনুষ্ঠানে যে টাকা খরচ দেখানো হয়েছে তা স্বচ্ছ না। আমার কথা হচ্ছে, এই টাকা তো শিল্পীদের সহযোগিতার জন্য দাতারা অনুদান দিয়েছেন। কারো ব্যক্তিগত ফান্ডে না। পিকনিকে ১৫ লাখ টাকার মত খরচ দেখানো হয়েছে। এত টাকা খরচ না করে তো শিল্পী সহযোগিতা করা যেত।’
বার্ষিক সাধারণ সভায় চিত্রনায়ক রিয়াজকে কথা বলতে না দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে মিশা সওদাগর বলেন, ‘এখানে সাধারণ শিল্পীরা প্রশ্ন করবেন, চলতি কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক জবাব দেবেন। তাই রিয়াজকে কথা বলতে দেওয়া হয় নাই। এটি সাধারণ শিল্পীদের সভা, এখানে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির আর কেউ কথা বলতে পারবেন না।’
মিশার এই বক্তব্যের পাল্টা জবাবে রিয়াজ বলেন, ‘বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির গঠনতন্ত্রের কোন ধারায় আছে সভাপতি আর সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বর্তমান কমিটির কেউ কথা বলতে পারবেন না? এমন কোনো ধারা তো নেই। আমাকে এই গঠনতন্ত্রের ধারা দেখানো হোক। তাদের কিসের ভয়? আমি তাদের কান্ডকীর্তি ফাঁস করে দিতাম?’
রিয়াজ আরও বলেন, ‘আগের ৬২৪ জন ভোটার থেকে এবার কমিয়ে ৪৪৯ জন করা হয়েছে। বাদ পড়া শিল্পীদের সহযোগী সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। সহযোগীদের ভোটাধিকার নেই। অনেক নতুন শিল্পীকে ভোটার করা হয়েছে। গঠনতন্ত্রের বাইরে গিয়ে তালিকায় কিছু ব্যক্তির নাম রাখা হয়েছে, আবার একই নিয়মে অনেককে বাদ দেওয়া হয়েছে। কমিটির কয়েকজন সদস্য প্রভাব খাটিয়ে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করেছেন। এসব অনিয়মের ব্যাপারে সভায় কথা বলতে চেয়েছিলাম। সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ছাড়া যদি অন্য কেউ কথা না বলতে পারে তাহলে সহ-সভাপতি বা বাকি আসনগুলোর কি দরকার?’
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সংগঠনটির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতিবছর একবার বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু গত বছর তা হয়নি। তাই আসন্ন নির্বাচনের আগে শুক্রবার সকালে রাজধানীর বিএফডিসির জহির রায়হান কালার ল্যাব মিলনায়তনে দুই বছরের সভা একসঙ্গে আয়োজন করা হয়। এ সভাতেই বিগত দুই বছরের আয়-ব্যয়সহ সমিতির নানা কার্যক্রম তুলে উত্থাপন করা হয়।
এসএ/