ডায়াবেটিস রোগীরা যেসব শাকসবজি খাবেন
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ১০:০৬ এএম, ৬ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার
প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা। এই রোগে আক্রান্ত হলে শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। যার ফলে বিভিন্ন রোগ দেখা দেয় সহজেই। তাই এই রোগকে বলা হয় ‘মরনঘাতী ব্যাধি’। এই রোগীদের খাবার-দাবারেও রয়েছে অনেক বাধ্যবাধকতা।
ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে শরীর দূর্বল হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা নিয়মিত প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খাওয়ার পরামর্শ দেন। অবশ্য বুঝে শুনে যে শাকসবজিগুলো স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী সেগুলো খেতে হবে। সবুজ শাকসবজি ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমায়।
পালংশাক, পাতাকপি, শালগম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লেটুসপাতা ইত্যাদিতে ক্যালরি এবং কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ খুবই কম থাকে। গবেষণায় দেখা যায় যে, সবুজ শাকসবজি খেলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ১৪ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
এবার জেনে নেওয়া যাক ডায়াবেটিস রোগীর জন্য উপকারী শাকসবজিগুলো কি কি-
পালংশাক
ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য পালংশাক খুব উপকারী। এতে আছে প্রচুর এন্টিঅক্সিডেন্ট। অল্প সেদ্ধ করে খেলে এর থেকে বেশি এন্টিঅক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। পালংশাক ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সবচেয়ে সুপরিচিত খাবার।
করোল্লা
করোল্লা ইনসুলিন রেজিস্টেন্স কমিয়ে রক্ত থেকে শরীরের কোষগুলোর সুগার গ্রহণ করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। তাছাড়া করোল্লা শরীরের কোষের ভেতর গ্লুকোজের বিপাক ক্রিয়াও বাড়িয়ে দেয়। ফলে রক্তের সুগার কমে যায়। ডায়াবেটিসের রোগীরা রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত করোল্লা খেতে পারেন।
গাজর
গাজরে ক্যালরি এবং সুগারের উপাদান খুবই কম। গাজরে থাকা পটাশিয়াম কোলেস্টরেল এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। গাজর চর্বি কমাতে সাহায্য করে বলে ওজনও কমে। এ ছাড়া ডায়াবেটিস প্রতিরোধে যেসব ভিটামিন এবং খনিজের প্রয়োজন তাও বিদ্যমান গাজরে।
ব্রোকলি
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অতিব জরুরি একটি সবজি হল ব্রোকলি। ব্রোকলি ডায়াবেটিসের সঙ্গে যুদ্ধ করে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ব্রোকলি হৃদরোগের বিরুদ্ধেও বেশ কার্যকর।
ঢেঁড়স
ঢেঁড়সের মধ্যে থাকা উপকারী ফাইবার দেহের গ্লুকোজের মাত্রা কমিয়ে রাখে। তাই ডায়াবেটিস কমাতে ঢেঁড়স অত্যন্ত উপকারী একটি সবজি। ডায়াবেটিক রোগীদের প্রতিদিন খাবারের তালিকায় ঢেঁড়স রাখা উচিত।
টমেটো
চমৎকারভাবে দেহের ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখে এই টমেটো। টমেটোতে খুব কম পরিমাণে শর্করা থাকে। কিন্তু ক্রোমিয়ামের ভালো উৎস টমেটো। যা রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
বাঁধাকপি
শীতকালীন সবজি পাতাকপি বা বাঁধাকপি। পাতাকপিতে অনেক কম শর্করা রয়েছে। এই সবজিটি টাইপ-২ রোগীদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে এবং টাইপ-১ রোগীদের রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মটরশুঁটি
ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার ডায়াবেটিস রোগীর জন্য অনেক উপকারী। মটরশুঁটি ফাইবারে ভরপুর একটি সবজি। মটরশুঁটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রাকে সাধারণ মাত্রায় রাখে।
ক্যাপসিকাম
ক্যাপসিকামের রয়েছে নানা উপকারিতা। আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় একটি করে ক্যাপসিকাম রাখলে অনেক রকম অসুখ থেকে মুক্তি পেতে পারেন। এই সবজিটি ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ করতেও কার্যকর এবং রক্তে শর্করার মাত্রাও স্থির রাখে। তাছাড়া ক্যাপসিকামের অ্যাক্টিভেটিং থার্মোজেনেসিস এবং হজম শক্তি উন্নত করার ক্ষমতা রয়েছে, যা দ্রুত ওজন কমাতেও সহায়ক।
সুতরাং আপনার প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় উপরোক্ত শাকসবজিগুলো রাখলে শুধু ডায়াবেটিস নয়, অনেক রকম অসুখ থেকে মুক্তি পেতে পারেন।
এএইচ/