ঢাকা, শনিবার   ২৩ নভেম্বর ২০২৪,   অগ্রাহায়ণ ৮ ১৪৩১

জামায়াত নেতার বাড়িতে ছিলেন সম্রাট

একুশে টেলিভিশন

প্রকাশিত : ০৩:১৫ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার | আপডেট: ০৪:২৫ পিএম, ৬ অক্টোবর ২০১৯ রবিবার

বহুল আলোচিত ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটকে যে বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তার মালিক স্থানীয় জামায়াতে ইসলামীর নেতা। রোববার ভোর রাতে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের সীমান্তবর্তী গ্রাম কুঞ্জশ্রীপুরের মনির চৌধুরীর বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ান (র‌্যাব)।

স্থানীয়রা জানান, চৌদ্দগ্রামে ঐ বাড়িটি মনির চৌধুরীর হলেও তিনি ফেনীতে থাকেন। তবে গত কয়েকদিন ধরে ফেনী থেকে প্রায় প্রতিদিন আসা যাওয়া করছিলেন তিনি। এ নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে এক ধরনের কৌতুহলের সৃষ্টি হয়। এমনকি দোতলা বাড়িটির মূলফটকও বন্ধ থাকে। এরপরও পেছনের দরজা দিয়ে ওই বাড়িতে আসা যাওয়া করতেন তিনি।

এ সবের মধ্যেই রোববার মধ্যরাতে বাড়িটি ঘিরে ফেলে র‌্যাব সদস্যরা। বাড়িটি থেকে ভোররাতে সম্রাট ও তার সহযোগী আরমান আলীকে বের করে নিয়ে আসেন র‌্যাব-৩ এর সদস্যরা।

মনির চৌধুরীর ভাতিজি সামিয়া জান্নাত বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে আমি শ্বশুরবাড়ি থেকে এই বাড়িতে বেড়াতে এসেছি। সম্রাট ও আরমান এই বাড়ি থাকতেন কিনা তা আমার জানা নেই ‘ তবে সম্প্রতি মনির চাচা প্রায়-ই আসা যাওয়া করতেন বাড়িতে। গতকাল সন্ধ্যায়ও তাকে দেখা গেছে।

আলকরা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক জানান, মনির চৌধুরী এক সময় ছাত্রশিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। এখন জামায়াত ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে জড়িত রয়েছেন তিনি।

এদিকে সম্রাট ও আরমানকে ঢাকায় র‌্যাবের সদর দপ্তরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। পরে আজ দুপুরের দিকে সম্রাটকে নিয়ে রাজধানীর কাকরাইলে যুবলীগের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র‌্যাব।

তবে কোন থানার কোন মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হবে সে বিষয়ে এখনও কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, ক্যাসিনো ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ততা, চাঁদাবাজির অভিযোগে একাধিক মামলা হবে। এসব মামলা করা হবে মতিঝিল বা রমনা থানায়। ক্যাসিনো ও চাঁদাবাজি মামলার জন্য সম্রাটকে ৭ থেকে ১০ দিন রিমান্ডে নেওয়ারও আবেদন করা হবে।

উল্লেখ্য, গেল মাসে চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগের কারণে যুবলীগ নেতা সম্রাটের নাম আলোচনায় আসে। অভিযানে যুবলীগ, কৃষক লীগ ও আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা র‍্যাব ও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। কিন্তু সম্রাট ছিলেন ধরাছোঁয়ার বাইরে। অভিযান শুরুর প্রথম তিন দিন তিনি দৃশ্যমান ছিলেন। ফোনও ধরতেন। এরপরই তিনি গা ঢাকা দেন। দেশত্যাগের চেষ্টাও করেন।

১৮ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকায় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান শুরু করে র‍্যাব। প্রথম দিন ফকিরাপুলের ইয়ংমেনস ক্লাবে অভিযান চালায় র‍্যাব। এরপরই গুলশান থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্লাবটির সভাপতি খালেদ হোসেন ভুঁইয়াকে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও রাজনৈতিক অঙ্গনের লোকেরা মনে করেন, ঢাকায় ক্যাসিনো ব্যবসার অন্যতম নিয়ন্ত্রক সম্রাট।

অভিযান শুরুর পর গত ২২ সেপ্টেম্বর সম্রাটের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাসংক্রান্ত একটি আদেশ দেশের বিমানবন্দর ও স্থলবন্দরগুলোতে পাঠানো হয়। তাঁর ব্যাংক হিসাবও তলব করা হয়।
এমএস/