বুয়েট শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনায় আটক ৯
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:৪২ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৯ সোমবার | আপডেট: ০৮:০১ পিএম, ৭ অক্টোবর ২০১৯ সোমবার
একদল শিক্ষার্থী রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র আবরার ফাহাদকে হল থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে রাত ২টার দিকে হলের দ্বিতীয়তলার সিঁড়িতে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার শরীরে পিটিয়ে হত্যার চিহ্ন রয়েছে। এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, ‘আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে প্রমাণ পেয়েছি। আমরা দেখছি কারা এই হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত। এটি যে হত্যাকাণ্ড, এতে সন্দেহ নেই।’
আর এই ঘটনায় বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে মারধর করে ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে হত্যার ঘটনায় ছাত্রলীগের ৯ জন নেতাকে আটক করা হয়েছে। তারা সবাই বুয়েট ছাত্রলীগের পদে আছেন। সোমবার (৭ অক্টোবর) সন্ধ্যায় ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার কৃষ্ণ পদ রায় এই আটকের তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার ঘটনায় শনাক্ত ৯ জনকে আটক করেছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। আমরা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পেয়েছি। সেটা পর্যালোচনা করছি।’
আটকরা হলো- বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদি হাসান রাসেল, সহসভাপতি মুস্তাকিম ফুয়াদ, সহসম্পাদক আশিকুল ইসলাম বিটু, উপদফতর সম্পাদক মুজতবা রাফিদ, উপসমাজ কল্যাণ সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, উপআইন সম্পাদক অমিত সাহা, ক্রীড়া সম্পাদক সেফায়েতুল ইসলাম জিওন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অনিক সরকার, গ্রন্থ ও গবেষণা সম্পাদক ইশতিয়াক মুন্সি।
এর আগে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে (২১) পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। সোমবার ভোর চারটার দিকে বুয়েটের শেরেবাংলা হল থেকে ওই শিক্ষার্থীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এরই মধ্যে হল ছাত্রলীগের দুই নেতাকে আটক করা হয়েছে। আবরার ফাহাদ শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষে থাকতেন। তিনি ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
হল সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে হওয়া চুক্তি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়াকে কেন্দ্র করে রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে ‘শিবির’আখ্যা দিয়ে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (৭) দুপুর ১২ টার দিকে শেরে বাংলা হলের কয়েকজন শিক্ষার্থী প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাফর ইকবালের কাছে হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফুটেজ দেখতে চান।এ সময় প্রাধ্যক্ষ ফুটেজ দেখাতে গড়িমসি করলে কান্নায় ভেঙে পড়েন কয়েকজন শিক্ষার্থী। তারা বলেন,‘আপনার ছেলে মারা গেলে তখন আপনি কী করতেন? স্যার! আমাদের জীবনের কী কোনো মূল্য নেই আপনাদের কাছে?’
এদিকে এমন একটি হত্যাকাণ্ডের পর এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেননি। এছাড়া মুঠোফোনে কল দিলেও কল ধরছেন না তিনি। দুপুর ১২ টার দিকে শিক্ষার্থীদের চাপের মুখে গণমাধ্যম কর্মীদের সামনে উপাচার্যকে মোবাইল ফোনে কল দেন প্রাধ্যক্ষ।
তখন উপাচার্যের ব্যক্তিগত সহকারী (পিএস) কল রিসিভ করে উপাচার্য অসুস্থ বলে জানায়। এজন্য তিনি ক্যাম্পাসে আসতে পারবেন না। এদিকে, হত্যাকাণ্ডের সিসিটিভি ভিডিও ফুটেজ না দেখা পর্যন্ত ও সব হত্যাকারীদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত কোথাও না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এছাড়া হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে প্রয়োজনে অনশন করার কথাও বলছেন তারা।
টিআর/