বিশ্ব প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনতি: সিপিডি
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৪:২৯ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
বিশ্ব প্রতিযোগিতা সক্ষমতায় বাংলাদেশের দুই ধাপ অবনতি হয়েছে। পাশাপাশি বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের ব্যবসা প্রসারে নতুন ঝুঁকিও সৃষ্টি হয়েছে।
রাজধানীর পল্টনে ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম –ইআরএফ মিলনায়তনে এসব ঝুঁকি তুলে ধরে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের দ্যা গ্লোবাল কমপিটিটিভনেস রিপোর্ট-২০১৯’ প্রতিবেদনে এ তথ্য তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, দুর্নীতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যবসায়ীদের আস্থা কমেছে। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা চতুর্মুখী চ্যালেঞ্জ দেখা যাচ্ছে। নতুন প্রতিবেদনে বাংলাদেশ দুই ধাপ পিছিয়ে ১৪১ দেশের মধ্যে ১০৫ তম অবস্থানে রয়েছে। মোট ১২টি পিলারের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। বিশ্বের ১৪১টি দেশে বুধবার এই রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ১২টি সূচকের মধ্যে সাতটিতেই খারাপ করেছে।
সিপিডির গবেষণায় এ সময় জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধি, অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্প দূষণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং বেকারত্ব বেড়ে যাওয়াকে ব্যবসা প্রসারে প্রধান ঝুঁকি হিসেবে তুলে ধরা হয়। বৈশ্বিক বাজারে সমানতালে সামনের এগোতে না পারায়, বাংলাদেশের র্যাংকিং কমেছে বলে জানায় সিপিডি।
এ সময় আগামী ২০৩১ বা ৪১ সাল পর্যন্ত টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে ব্যবসার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় কিছু সমাধানও তুলে ধরেন সিপিডির গবেষকরা। এজন্য ব্যবসা ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে বড় ধরণের সংস্কারের পরামর্শ দেয় সিপিডি।
গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, বাংলাদেশ এখন চতুর্মুখী চ্যালেঞ্জের মধ্যে আটকে আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ আর্থিক খাতের অস্থিতিশীলতা। এছাড়া দুর্নীতির প্রসার আমাদের জাতীয় জিডিপি প্রবিদ্ধিকে ব্যাহত করছে। দেশের বেকারত্ব সমস্যাকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে না পারলে উন্নত দেশে পরিণত হওয়ার স্বপ্ন পূরণ নাও হতে পারে। এসব সমস্যা সমাধানে নীতিগত অনেক সংস্কারের প্রয়োজন আছে বলেও মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, বৈশ্বিক উন্নয়নের সাথে তাল মিলাতে হলে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং সে অনুযায়ী দক্ষতা উন্নয়নের কোনো বিকল্প নেই। এজন্য সরকারের পক্ষ থেকে দক্ষতা উন্নয়নের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা দরকার।
তিনি আরো জানান, অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি না হলে মনোপলি বা একচেটিয়া ধারা অব্যাহত থাকে। এর মাধ্যমে ব্যবসা পুঞ্জিভূত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়। এই জায়গাতে গুরুত্ব দিয়ে শক্তিশালী মনিটরিংয়ের আহ্বান জানান ফাহমিদা খাতুন।
চলমান শুদ্ধি অভিযান সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে ফাহমিদা খাতুন জানান, যেকোনো ধরনের দুর্নীতি বিরোধী অভিযানে আমরা সাধুবাদ জানাই। কারণ দুর্নীতি কারণে এক শ্রেণির মানুষ বেশি উপকৃত হয় এবং কিছু শ্রেণির মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মাধ্যমে বৈষম্য বাড়ে। শুধু তাই নয় জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে দুর্নীতি। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং জাতীয় স্বার্থ সাপেক্ষে এরকম অভিযান উন্নত দেশগুলোর মতো চলমান প্রক্রিয়া হওয়া উচিত বলেও মনে করেন তিনি।
আরকে//