জীবনী নিয়ে লেখার ইচ্ছা নেই: প্রধানমন্ত্রী
একুশে টেলিভিশন
প্রকাশিত : ০৭:২২ পিএম, ৯ অক্টোবর ২০১৯ বুধবার
আজীবন মানুষের কল্যাণেই নিজেকে বিলিয়ে দিতে চান, কেউ তাকে মনে রাখবে কি রাখবে না— তা নিয়ে কোনো ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যে কারণে নিজের জীবনী লেখারও কোনো ইচ্ছা বা চিন্তা-ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৯ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দেওয়াসহ যুক্তরাষ্ট্রে আট দিন ও ভারতে চার দিনের সফর নিয়ে এই সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে লিখে থাকেন। এসব লেখার অনেকগুলোতেই বিচ্ছিন্নভাবে তার জীবন সম্পর্কে অনেক কথাই উঠে এসেছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তিনি আগামীতে তার পূর্ণাঙ্গ একটি আত্মজীবনী লিখবেন কি না?
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি রাজনীতিতে এসেছি আমার বাবা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দেখে। তার লক্ষ্য ছিল দেশের মানুষের উন্নয়ন, দেশের মানুষকে একটা উন্নত জীবন দেওয়া। কিন্তু আমি তো আমার পরিবারের সবাইকে হারিয়েছি। এরকম সর্বহারা অনেকেরই রাজনীতিতে আসার মানসিকতা থাকে না।
শেখ হাসিনা বলেন, অনেক দেশের অনেক রাষ্ট্রপ্রধান, সরকারপ্রধানকে মেরে ফেলা হয়েছে। তাদের ছেলে-মেয়েদের অনেকেই রাজনীতি আসে না। কিন্তু অনেকের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, তারা বলেছেন— তারা আমাকে দেখে রাজনীতিতে এসেছেন। আমি তো রাজনীতিতে এসেছি বঙ্গবন্ধুর জন্য। মানুষকে নিয়ে তার যে চিন্তা ছিল, মানুষকে তিনি দারিদ্র্যমুক্ত করবেন, শুধু ওই একটা চিন্তা থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। আমার কথা কেউ মনে রাখুক, এই চিন্তা নেই।
বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বঙ্গবন্ধু তার জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করে দিয়ে গেছেন। তার নামটাই সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলা হলো দেশের ইতিহাস থেকে। এমন অপবাদ দেওয়া হলো, যা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন, শুধু মানুষকে বিভ্রান্ত করার জন্য ওইসব অপবাদ ছড়ানো হয়েছে। আমার কাজ ওইসব অপবাদের জবাব দেওয়া। আর বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছেন, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা আমার কাজ।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমাকে কেউ বলে যায়নি যে এসব আমাকে করতে হবে। আমি মনের তাগিদ থেকে করি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হবে— শুধু এই একটিই চিন্তা। আমার মা-বাবা আমার কাছে কিছু চাননি। আমার মা, আজীবন তিনি বাবার পাশে থেকে সাধাসিধে জীবনযাপন করে গেছেন। আমার দাদা-দাদীকে দেখেছি, তারাও খুব সাধারণ ছিলেন। ছেলে বড় হয়ে পয়সা কামাবে, তাদের পয়সা দেবে, এই কথা কখনো তারা বলেননি। উল্টো ছেলের কখন কী লাগবে, তারা সবসময় সেইটা দেখতেন। আমি এইরকম একটি পরিবারে বড় হয়েছি। তাই আমার নিজের জীবন নিয়ে কিছু লেখার ইচ্ছাও নেই, লেখার কোনো চিন্তাও নেই।
আরকে//